Advertisment

মিশন শক্তি এবং অ্যান্টি স্যাটেলাইট মিশন নিয়ে বিতর্ক

অ্যান্টি স্যাটেলাইট পরীক্ষা অত্যন্ত বিতর্কিত বিষয়। এর ফলে মহাকাশে সশস্ত্রীকরণ হচ্ছে বলে মনে করা হয়, যা ১৯৬৭ সালের আউটার স্পেস ট্রিটি অনুসারে নিষিদ্ধ। 

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Mission Shakti Explained

এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চিন এই পরীক্ষা করেছে

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার ঘোষণা করেছেন ভারত পৃথিবীর চতুর্থ দেশ হিসেবে মহাকাশে সাফল্যের সঙ্গে উপগ্রহঘাতী মিসাইলের সাহায্যে উপগ্রহ ধ্বংস করেছে।

Advertisment

উপগ্রহঘাতী অস্ত্র রয়েছে এমন হাতে গোনা কয়েকটি দেশের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ল ভারত। কেবলমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন এবং রাশিয়া তাদের এই ক্ষমতা এতদিনে প্রদর্শন করেছে। ইজরায়েলের হাতেও এই ক্ষমতা রয়েছে বলে মনে করা হয়, তবে তারা কখনও তা প্রয়োগ করেনি।

আরও পড়ুন, মিশন শক্তির ভাষণ নির্বাচন কমিশনের আতস কাচের নিচে

প্রধানমন্ত্রী বলেন, "কিছুক্ষণ আগে আমাদের বৈজ্ঞানিকরা একটি জীবন্ত স্যাটেলাইটে আঘাত হেনেছেন। এই লক্ষ্যবস্তু পূর্বনির্ধারিত ছিল এবং একটি এ স্যাটের সাহায্যে একে নষ্ট করা হয়েছে। তিন মিনিটে অপারেশন শেষ হয়েছে। মিশন শক্তি একটি জটিল অপারেশন এবং এর জন্য অত্যন্ত উঁচু মানের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা প্রয়োজন।"

মিশন শক্তির তাৎপর্য কী!

বিভিন্ন দেশ ন্যাভিগেশন, যোগাযোগ, এবং মিসাইল অস্ত্রাগার গাইডেন্সের জন্য উপগ্রহ ব্যবহার করে থাকে। এর দ্বারা শত্রুপক্ষের মিসাইলে আঘাত হানা যায়, যার জেরে অন্য দেশের পরিকাঠামোকে পঙ্গু করে দেওয়া যায়, তাদের অস্ত্রকে অকার্যকর করে ফেলা যায়।

গত শতাব্দীর সাতের দশকে, ঠান্ডা যুদ্ধ যখন তুঙ্গে, সে সময়েই  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের অ্যান্টি স্যাটেলাইট মিসাইলের পরীক্ষা চালিয়েছিল। তবে কোনও দেশই অন্যের বিরুদ্ধে ভুল করেও এ মিসাইল ব্যবহার করেনি।

সব দেশই তাদের নিজেদের যে সব উপগ্রহ আর কার্যকর নেই, তার উপরেই এ ধরনের পরীক্ষা চালিয়ে থাকে। বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এ পরীক্ষার জন্য লক্ষ্যবস্তু হিসেবে ভারতীয় উপগ্রহকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল, তবে ঠিক কোন উপগ্রহের উপর আঘাত হানা হয়েছিল, তা নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি।

আরও পড়ুন, মহাকাশে মহাযজ্ঞ; দেশবাসীর উদ্দেশে ‘মিশন শক্তি’-র ঘোষণা

অ্যান্টি স্যাটেলাইট পরীক্ষা অত্যন্ত বিতর্কিত বিষয়। এর ফলে মহাকাশে সশস্ত্রীকরণ হচ্ছে বলে মনে করা হয়, যা ১৯৬৭ সালের আউটার স্পেস ট্রিটি অনুসারে নিষিদ্ধ।

প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারতের যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করে জানিয়ে দিয়েছেন এ পরীক্ষা একেবারেই পরীক্ষামূলক, এবং মহাকাশের সশস্ত্রীকরণ নিয়ে ভারতের যে তীব্র বিরোধিতামূলক অবস্থান রয়েছে, তার নড়চড় হচ্ছে না।

তিনি বলেছেন, "আজ আমরা আমরা কৃষি, প্রতিরক্ষা, বিপর্যয় মোকাবিলা, যোগাযোগ, বিনোদন, আবহাওয়া, ন্যাভিগেশন, শিক্ষা সহ সব বিষয়ে মহাকাশ ও উপগ্রহ ব্যবহার করছি। এই পরিস্থিতিতে এই উপগ্রহগুলির নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"

প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমি সারা বিশ্বকে জানাতে চাই যে আমাদের নয়া শক্তি কাউকে আঘাত করার জন্য নয়। এটি ভারতের দ্রুতগতিতে বর্ধমান প্রতিরক্ষা শক্তিরই অঙ্গ। ভারত চির কাল মহাকাশ সশস্ত্রীকরণের বিরোধিতা করে এসেছে এবং আজকের পরীক্ষা সে অবস্থানের বিরোধিতা করছে না। আজকের পরীক্ষা কোনও আন্তর্জাতিক আইন বা চুক্তি লঙ্ঘন করছে না। আমরা এই আধুনিক প্রযুক্তি নিরাপত্তা এবং ১৩০ কোটি ভারতীয়ের মঙ্গলের জন্য ব্যবহার করব। এই অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্যই এক শক্তিশালী ভারতের প্রয়োজন। যুদ্ধের বাতাবরণ তৈরি নয়, শান্তি নিশ্চিত করাই আমাদের উদ্দেশ্য।"

মিশন শক্তি নিয়ে বিবৃতি জারি করেছে বিদেশমন্ত্রক

বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে এই পরীক্ষা ভারতের নিজের মহাকাশ সম্পদের সুরক্ষার জন্যই করা হয়েছে।

বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকে বলা হয়েছে, "নিজেদের মহাকাশ সম্পদের সুরক্ষায় ভারতের সামর্থ্য বিচার করার জন্যই এই পরীক্ষা করা হয়েছে। মহাকাশের নিজের দেশের স্বার্থরক্ষা করা ভারত সরকারের দায়িত্ব। সাফল্য সম্পর্কে সুনিশ্চিত হয়েই এই পরীক্ষা করা হয়েছে, এবং এর ফলে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা বৃ্দ্ধি নিয়ে সরকারের আগ্রহ সূচিত করে। ২০১৪ সালের পর থেকে মহাকাশ উন্নয়নে ভারতের অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়েছে।"

ভারতের "মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতায় প্রবেশ করার কোনও উদ্দেশ্য নেই" বলে জানিয়ে দিয়েছে বিদেশমন্ত্রক।

Read the Full Story in English

PM Narendra Modi
Advertisment