Advertisment

Explained:আদানির বিরুদ্ধে তাদের নতুন অভিযোগ ভারতজুড়ে তোলপাড় তুলেছে, কী এই ওসিসিআরপি?

'অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট' হল অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক, যা ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Adani Occrp

ওসিসিআরপির অভিযোগ অস্বীকার করেছে আদানি গোষ্ঠী।

হিন্ডেনবার্গের পরে এবার অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে স্টক ম্যানিপুলেশনের নতুন অভিযোগ এনেছে। ওসিসিআরপির রিপোর্ট, যা আজকে (৩১ আগস্ট) প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে দাবি করা হয়েছে যে নথি অনুযায়ী, 'অন্তত দুটি ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে গোষ্ঠীর সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডার আদানি পরিবারের গভীর সম্পর্ক রয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। যার জেরে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার মূল্যের কারসাজি করা সম্ভব হয়েছে।' যথারীতি আদানি গোষ্ঠী স্পষ্টভাবে এই অভিযোগগুলো খারিজ করেছে। আদানি গোষ্ঠীর পালটা অভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধে সোরেসের তহবিলের সাহায্যে যৌক্তিকতাহীন হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা হয়েছে।

Advertisment

অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক
ওসিসিআরপির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ড্রিউ সুলিভান বলেন, 'ওসিসিআরপি কোনও পরিকল্পিতভাবে তৈরি হয়নি। প্রয়োজনে এর জন্ম হয়েছে। আমরা সবাই নিজেদের দেশে একই জটিল সমস্যা নিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু আমরা কয়েকজন এটা বুঝতে পেরেছি যে সবাই একই জটিল সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। আর, সেই কারণেই পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি।' আমেরিকান সুলিভান এবং বুলগেরিয়ান পল রাডু, উভয়ই অনুসন্ধানী সাংবাদিক। ২০০৬ সালে তাঁরা ওসিসিআরপি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময় তাঁরা সংগঠিত অপরাধ এবং পদ্ধতিগত দুর্নীতির তদন্ত এবং রিপোর্ট করার অভিজ্ঞতার মধ্যে মিল খুঁজে পেয়েছিলেন।

বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক
প্রাথমিকভাবে ইউনাইটেড নেশনস ডেমোক্রেসি ফান্ড (ইউএনডিইএফ)-এর অর্থে ওসিসিআরপি নেটওয়ার্ক প্রথম সারাজেভোতে অফিস খুলেছিল। বছরের পর বছর ধরে ওসিসিআরপি পাঁচটি দেশে কর্মরত ছয় সাংবাদিক থেকে বর্তমানে ৩০টি দেশে ১৫০-রও বেশি সাংবাদিক নিয়ে কাজ করছে। তাদের লক্ষ্য, সাংবাদিকদের একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক তৈরি। যাতে সহজে যোগাযোগ এবং তথ্য-আদান প্রদান করা যায়। যাতে, দুর্নীতি এবং অপরাধের বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কগুলোকে আরও ভালোভাবে বোঝা যায় এবং প্রকাশ করে দেওয়া যায়। ওসিসিআরপি আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গেও সহযোগিতা করে। যার মধ্যে রয়েছে আরব রিপোর্টার্স ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম (এআরআইজে), সেন্ট্রো ল্যাটিনো আমেরিকানো দে ইনভেস্টিগেসিয়ন পেরিওডিস্টিকা (ক্লিপ) এবং রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি (আরএফই/আরএল)-এর মত সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন। এটি গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্কেরও সদস্য।

বছরের পর বছর ধরে প্রভাব
ওসিসিআরপির নিজস্ব রেকর্ড অনুযায়ী তারা ২০০৯ থেকে সরাসরি ৩৯৮টি তদন্তমূলক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাদের রিপোর্টিংয়ের জেরে ৬২১টি গ্রেফতার এবং সাজা, ১৩১টি পদত্যাগ, এবং ১০ বিলিয়নেরও চেয়ে বেশি মার্কিন ডলার জরিমানা হয়েছে। এই সংগঠন রাশিয়ার অলিগার্চ এবং ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর একাধিক তদন্তমূলক রিপোর্ট বছরের পর বছর ধরে প্রকাশ করেছে। পানামা পেপারস কেলেঙ্কারির তদন্তে ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টের সঙ্গে কাজ করেছে (যার মধ্যে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসও অন্যতম সদস্য)। বিদেশি সংস্থাগুলোর সাহায্যে দুর্নীতির ওপর ৪০টিরও বেশি রিপোর্ট তৈরি করেছে। যা ২০১৭ সালে পুলিৎজার সাংবাদিকতা পুরস্কার জিতেছে। সংগঠনটিকে 'রাজনৈতিক দুর্নীতি ও সংগঠিত অপরাধের মুখোশ উন্মোচন করে শান্তির ক্ষেত্রে অবদান রাখার' জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এমনকী, নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্যও তাদের নাম উঠেছে।

আরও পড়ুন- চরম বিপাকে আদানি! ১০০ কোটি ডলার পাচারের অভিযোগ, জেপিসি দাবি রাহুলের

আরও পড়ুন- ফের দুর্নীতির বিরাট অভিযোগ আদানিদের বিরুদ্ধে, জবাবে কী জানাল মোদী-ঘনিষ্ঠ সংস্থা?

ওসিসিআরপির সঙ্গে সোরোসের যোগাযোগ কোথায়?
ওসিসিপিআরের বিরুদ্ধে আদানির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংগঠনটি 'সোরোস' গোষ্ঠীর অর্থে পুষ্ট। চলতি বছরের শুরুতে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের পরে নরেন্দ্র মোদী এবং গৌতম আদানি সম্পর্কে বিলিয়নেয়ার অ্যাডভোকেসি ফান্ডার জর্জ সোরোসের সমালোচনামূলক মন্তব্য, ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি এবং এর সমর্থকদের ব্যাপক কটূক্তির মুখে পড়েছিল। তারপর থেকে সরকার বা এই ক্ষেত্রে আদানিকে লক্ষ্য করে সমালোচনা হলেই পালটা সেই সমালোচনাকে অসম্মানিত করতে প্রায়শই সোরোসের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। ওসিসিআরপির ওয়েবসাইট অনুসারে, সোরেসের 'ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনস' হল তার ২১টি প্রধান প্রাতিষ্ঠানিক তহবিল প্রদানকারীদের একটি। অন্যান্য সমর্থকদের মধ্যে রয়েছে রকফেলার ব্রাদার্স ফান্ড, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট, ফোর্ড ফাউন্ডেশন, জার্মান মার্শাল ফান্ড এবং সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সি। ওসিসিপিআর এইভাবে রাষ্ট্রীয় এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে পথ চলছে।

Share Market modi Adani
Advertisment