Advertisment

পেট্রোলিং পয়েন্ট কী, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় এগুলির গুরুত্ব কত?

চিনারা ভারতীয় টহলদারি দেখতে না-ও পেতে পারে বলে টহলদারি দল খাবারের টিন বা সিগারেটের প্যাকেট ফেলে আসে, যাতে চিনারা বুঝতে পারে ভারতীয় বাহিনী এই এলাকা পরিদর্শন করেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
LAC Patrolling point

লাদাখে ভারতীয় সেনার ট্রাক

লাদাখে ভারতীয় ও চিনা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্শস্থল থেকে রণসজ্জা কমানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এখানেই, গালওয়ান, হট স্প্রিং ও গোগরা এলাকায় বেশ কয়েকটি পেট্রোলিং পয়েন্ট রয়েছে।

Advertisment

পেট্রোলিং পয়েন্ট বলতে ঠিক কী বোঝায়?

পেট্রোলিং পয়েন্ট বা পিপি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চিহ্নিত স্থান যেখানে নির্দিষ্ট সময় অন্তর নিরাপত্তা বাহিনী টহল দিয়ে থাকে। এগুলি সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এমন ভৌগোলিক স্থান যা ভারতের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণের সীমা জানায়ি, এবং একেই নিরাপত্তাবাহিনী নির্দেশিকা হিসেবে মেনে চলে।

আরও পড়ুন, তুর্কমেনিস্তান- যে দেশে একটিও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েনি

পেট্রোলিং পয়েন্ট বরাবর নিয়মিত টহলদারির মাধ্যমে ভারতীয় বাহিনী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় নিজেদের শারীরিক দাবি বজায় রাখে।

সব পেট্রোলিং পয়েন্টই কি সংখ্যা দ্বারা চিহ্নিত?

না। কিছু পেট্রোলিং পয়েন্ট নির্দিষ্ট এবং ভৌগোলিকভাবে চিহ্নিত করা যায়, যেমন কোনও খাত বা নালার জংশন, যেগুলিতে সংখ্যা দেওয়া থাকে না। যেসব পেট্রোলিং পয়েন্ট এভাবে নির্ধারিত করা যায় না, যেমন গালওয়ান উপত্যকার পিপি ১৪, সেগুলিতে সংখ্যা দেওয়া থাকে।

সমস্ত পেট্রোলিং পয়েন্টই কি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার উপর?

প্রায় সবই। কেবল উত্তর লাদাখের ডেপসাং ছাড়া যেথানে পিপি ১০, পিপি ১১, পিপি ১১এ, পিপি ১২ ও পিপি ১৩ অবস্থিত। রাকি নালা থেকে জীবন নালার মধ্যে অবস্থিত এই পেট্রোলিং পয়েন্ট প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কিছুটা ভিতরে, ভারতের দিকে অবস্থান করে।

আরও পড়ুন, কেরালার সোনা পাচার, কূটনৈতিক কার্গো ও এক পলাতক মহিলা

এই পেট্রোলিং পয়েন্টে চৌকিদারি থাকে না?

পিপি কোনও পোস্ট নয়, ফলে সেখানে চৌকিদারি থাকে না। পাকিস্তানের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ রেখায় যেমন সব সময়েই সেনা থাকে, চিনের সীমান্তে তেমন নয়। এগুলি ভূমির উপর দেওয়া চিহ্ন এবং এখানে প্রতিরক্ষাগত কোনও ব্যবস্থা থাকে না বা সেনা কৌশলগত ভাবে গুরুত্বও দেয় না।

যদি চৌকি না থাকে তাহলে দাবি থাকে কী করে?

সেনা বা সেনা-ইন্দো টিবেটান বর্ডার পুলিশের যৌথ উপস্থিতির মাধ্যমে এই এলাকায় দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে সেনা মোতায়েন হলে এবং উন্নত পরিকাঠামোর ফলে পেট্রোলিং পয়েন্টগুলিতে ঘন ঘন টহলদারি হয়। চিনারা ভারতীয় টহলদারি দেখতে না-ও পেতে পারে বলে টহলদারি দল খাবারের টিন বা সিগারেটের প্যাকেট ফেলে আসে, যাতে চিনারা বুঝতে পারে ভারতীয় বাহিনী এই এলাকা পরিদর্শন করেছে, যা এখানে ভারতের নিয়ন্ত্রণ স্পষ্ট করে।

এই পেট্রোলিং পয়েন্ট কে স্থির করেছে?

উচ্চ পর্যায়ের চায়না স্টাডি গ্রুপ ১৯৭৫ সাল থেকে ভারতীয় বাহিনীর টহলদারির সীমা নির্ধারণ করছে। এর ভিত্তি হল প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা, যে ধারণা ১৯৯৩ সালে সরকার মেনে নিয়েছে। সেনাবাহিনীর কাছে সীমান্ত এলাকার যে মানচিত্র রয়েছে, তাতেও এই পেট্রোলিং পয়েন্ট চিহ্নিত। তবে পেট্রোলিং পয়েন্টে টহলদারি কত দিন অন্তর হবে, সে ব্যাপারে সেনা ও আইটিবিপির সুপারিশের উপর নির্ভর করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় নয়া দিল্লির সেনা সদর দফতর।

কতদিন অন্তর টহলদারি হয়?

বার্ষিক টহলদারি কর্মসূচিতে কতদিন অন্তর পেট্রোলিং পয়েন্টে টহল হবে তা জানিয়ে দেওয়া হয়। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে বিভিন্ন পেট্রোলিং পয়েন্টে বিভিন্ন সময় অন্তর টহলসূচি দেওয়া হয়, যা মাসে একবার থেকে বছরে দুবার পর্যন্ত হতে পারে।

এখন কোন কোন পেট্রোলিং পয়েন্ট নিয়ে বিবাদ?

ডেপসাং সেক্টরে পিপি ১০ থেকে পিপি ১৩, হট স্প্রিংয়ে পিপি ১৫, এবং গোগরার পিপি ১৭ ও পিপি ১৭এ নিয়ে দু পক্ষের মধ্যে বিবাদ চলছে, যেখানে গত ৯ সপ্তাহ ধরে সংঘর্ষ পরিস্থিতির সূচনা হয়েছে।

india china standoff
Advertisment