Advertisment

'কোয়ারান্টাইন' শব্দটা কোথা থেকে এল জানেন?

'কোয়ারান্টাইন' মানে যে রোগের সংক্রমণ এড়াতে নিজেকে গৃহবন্দি এবং অন্যদের সঙ্গে যথাসম্ভব সংস্পর্শহীন রাখা, সে আমরা সবাই জানি। কিন্তু শব্দটা এলো কোথা থেকে?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
coronavirus pandemic

'ব্ল্যাক ডেথ' নিয়ে আঁকা প্রখ্যাত শিল্পী পিটার ব্রুগেল-এর ছবি

পৃথিবীতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত দুটো শব্দ কী কী? সঠিক উত্তরের জন্য কোনও পুরস্কার নেই। সবাই জানে। 'করোনা' আর 'কোয়ারান্টাইন'। করোনা যে কী, সে তো এখন নার্সারির বাচ্চাদেরও জানতে বাকি নেই। আর 'কোয়ারান্টাইন' মানে যে রোগের সংক্রমণ এড়াতে নিজেকে গৃহবন্দি এবং অন্যদের সঙ্গে যথাসম্ভব সংস্পর্শহীন রাখা, সে-ও আমরা সবাই জানি। কিন্তু জানেন কি, 'কোয়ারান্টাইন' শব্দটার উৎস, জানেন কি শব্দটা আদপে এল কোথা থেকে? আসুন, জেনে নিই।

Advertisment

চতুর্দশ শতকের কথা। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বিভিন্ন পথের অন্যতম ছিল 'সিল্ক রুট', যা জলপথে বিস্তৃত ছিল এশিয়া মহাদেশ থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপের গ্রিস এবং ইতালি পর্যন্ত। ১৩৪০ সালে সম্ভবত মধ্য এশিয়া থেকে এই সিল্ক রুটের বাণিজ্যপথ ধরেই ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ল এক মারণরোগ, যার শিকার হতে লাগলেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। রোগের নাম 'বিউবোনিক প্লেগ'। যে দুরারোগ্য ব্যাধিকে অভিহিত করা হল 'ব্ল্যাক ডেথ' নামে।

প্রতি দশকেই কখনও না কখনও ইউরোপে ফিরে আসত এই ভয়ঙ্কর 'ব্ল্যাক ডেথ', আকার নিত মহামারীর, প্রাণ যেত অগণিত মানুষের। ১৩৭৩ সালে যখন ইউরোপে ফের প্রাদুর্ভাব ঘটল এই রোগের, ইতালির বন্দরনগরী ভেনিসের প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা ঠিক করলেন, অনেক হয়েছে, আর নয়। সিদ্ধান্ত হলো, বাইরে থেকে আসা কোনও জাহাজে প্লেগে আক্রান্ত কোনও রোগী রয়েছেন, এমন সন্দেহ হওয়ামাত্রই সেই জাহাজের ভেনিসে ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। সংশ্লিষ্ট জাহাজকে ভেনিসে ঢোকার আগে একটি দ্বীপে চল্লিশ দিন অপেক্ষা করতে হবে। ইতালিয় ভাষায় চল্লিশকে বলা হয় 'কোয়ারান্তেনা'। এবং সংক্রমণ-প্রতিরোধে ওই চল্লিশ দিনের দূরবর্তী অপেক্ষার সময়কে বলা হত 'কোয়ারান্তিনারো'। সেই থেকেই ইংরেজি শব্দ 'কোয়ারান্টাইন'-এর উৎপত্তি।

নিয়তির কী নির্মম পরিহাস, মহামারীর সংক্রমণ এড়াতে রোগীদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার প্রথার এই উদ্ভাবনী সূচনা হয়েছিল যে দেশে, সেই ইতালিই আজ করোনা-দাপটে বিশ্বে সবচেয়ে সঙ্কটাপন্ন।

coronavirus
Advertisment