এমপিসি। মনিটারি পলিসি কমিটি। স্বর্গে যেমন ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর। সিপিএমে যেমন পলিটব্যুরো। তৃণমূলে যেমন একা মমতা, মানে কমিটি-টাই তো তিনি, তেমনই আরবিআইয়ের এই কমিটি। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের আর্থিক গতিপ্রকৃতি কী হবে, তা স্থির করে এই কমিটি। বিশেষ করে সুদের হার স্থির করে, যা আর্থিক প্রবাহের ভাসা নৌকার হালের মতো।
আর্থিক নীতি
মনিটারি পলিসি কমিটির মূল কাজ হল, মূল্যে লাগাম দিয়ে রাখা। অর্থের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। বৃদ্ধির গতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে যা পূর্ব শর্ত। ধরা যাক, মুদ্রাস্ফীতি হল, কিংবা মন্দা, তখন মনিটারি পলিসি কমিটি বা নীতি নির্ধারক কমিটি পরিস্থিতি কাটাছেঁড়া করে স্থির করে, কী করিতে হইবে। রেপো রেট, মানে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বিভিন্ন ব্যাঙ্ককে ধার দেওয়া অর্থের উপর যে সুদ নেয়, তার হার এবং রিভার্স রেপো রেট, অর্থাৎ বিভিন্ন ব্যাঙ্ক যে অর্থ আরবিআইকে দেয় তার উপর যে হারে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ব্যাঙ্কগুলিকে সুদ দেয়, এই দুটি স্থির করে মনিটারি পলিসি কমিটি। যদি মুদ্রাস্ফীতির হার মাত্রাতিরিক্ত হয়, তা হলে অনেক সময় সুদের হার বাড়ায় মনিটারি পলিসি কমিটি, মন্দা হলে উল্টোটা করে থাকে। সুদের হার বাড়ালে বাজারের বাড়তি টাকা চলে আসে আরবিআইয়ের ঘরে, তখন আমার আপনার হাতে ঘোরা নগদ কমে যায়। মুদ্রাস্ফীতিও কমে। মন্দার ক্ষেত্রে হয় উল্টোটা।
কমিটির গঠন
সংশোধিত আরবিআই আইন, ১৯৩৪-এর ধারা ৪৫জেডবি অনুযায়ী এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। যা ছয় সদস্যের। প্রথম ২০১৬-র এমপিসি ২৯ সেপ্টেম্বর কমিটি গঠিত হয়। ওই ধারায় লেখা রয়েছে, 'মুদ্রাস্ফীতির যে লক্ষ্যমাত্রা, তা বজায় রাখতে নীতি নির্ধারণ করবে মনিটারি পলিসি কমিটি।
এমপিসির সদস্যরা
ধারা ৪৫জেডবি অনুযায়ী এমপিসি কমিটিতে পদাধিকার-বলে আরবিআইয়ের গভর্নর থাকেন, থাকেন আর্থিক নীতির দায়িত্বে থাকা ডেপুটি গভর্নর, কেন্দ্রীয় বোর্ডের মনোনীত ব্যাঙ্কের একজন আধিকারিক এবং কেন্দ্রীয় সরকার নিযুক্ত বাইরের তিন জন। ব্যক্তি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে '…সততা, অর্থনীতি ব্যাঙ্কিংয়ে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা' মানদণ্ড। (ধারা ৪৫জেডসি)
এমপিসি-র সদস্যদের নিয়োগে গত বছরের ৫ অক্টোবর কেন্দ্র বিজ্ঞপ্তি দেয়। এমপিসি-তে এখন আরবিআই-এর বাইরের তিন সদস্য হলেন-- ইন্দিরা গান্ধি ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট রিসার্চের অধ্যাপক অসীমা গোয়েল, আইআইএম আমদাবাদের অধ্যাপক জয়ন্ত আর ভার্মা এবং জাতীয় ফলিত অর্থনৈতিক গবেষণা পরিষদের সিনিয়র উপদেষ্টা ডঃ শশাঙ্ক ভিডে।
Read story in English