Advertisment

Explained: পরিবেশ বাঁচাতে নতুন দাওয়াই, আন্তর্জাতিক দুনিয়াকে কী পরামর্শ 'বিশ্বগুরু' মোদীর?

চলতি বছরের অক্টোবরে পরিবেশ মন্ত্রক, 'গ্রিন ক্রেডিট প্রকল্প' চালু করেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Modi at COP28

শুক্রবার ১ ডিসেম্বর-২০২৩, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আয়োজিত সিওপি২৮-এ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রেসিডেন্ট এবং আবুধাবির শাসক এইচএইচ শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে। (পিটিআই ছবি)

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার বর্জ্য জমিতে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সবুজায়নে জোর দিয়েছেন। এই নিয়ে তিনি একটি প্রকল্পও চালু করেছেন। দুবাইতে বর্তমান জলবায়ু আলোচনা বা সিওপি২৮-এ একটি উচ্চস্তরীয় বৈঠকের পর তিনি জানিয়েছেন, সবুজায়ন প্রকল্প বাণিজ্যিক কারণে নির্গত কার্বন প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

Advertisment

'গ্রিন ক্রেডিট' বা 'কার্বন ক্রেডিট' প্রকল্প

চলতি বছরের অক্টোবরে পরিবেশ মন্ত্রক, 'গ্রিন ক্রেডিট প্রকল্প' চালু করেছে। এই প্রকল্পে কার্বন নিঃসরণ কমানোর ওপর জোর দিয়েছে পরিবেশ মন্ত্রক। বিভিন্ন ধরণের পরিবেশগত কাজের জেরে বাজারভিত্তিক ব্যবস্থা এই প্রকল্পের অংশ। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কার্বনের নিঃসরণ রুখতে এধরনের বাজার-ভিত্তিক ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই আছে। যা বাণিজ্যের অনুমতি দেয়। যদি কোম্পানি কার্বনের নিঃসরণ কমাতে চায়, তবে তারা এই ধরনের 'কার্বন ক্রেডিট' দাবি করতে পারে। এই 'কার্বন ক্রেডিট' তারা অর্থ রোজগারের জন্য বা ব্যবসার কাজে লাগাতে পারে। কোম্পানিগুলো তাদের কার্বন নির্গমনের মান সম্পর্কে অভিযোগ দূর করতে এই ক্রেডিটগুলো কাজে লাগায়।

কী এই 'কার্বন ক্রেডিট'

কার্বন ক্রেডিট হল এমন একটি শংসাপত্র যা কোনও সংস্থাকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের অনুমতি দেয়। এক কার্বন ক্রেডিটের অনুমতি হল, এক টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের সমান। এই মাত্রা স্থির হয়েছে আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী। এই চুক্তির মূল লক্ষ্য হল, কার্বন ডাই অক্সাইড ও গ্রিনহাউস গ্যাসকে নিয়ন্ত্রিতভাবে পরিচালিত করা এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করা।

কোথা থেকে এসেছে 'কার্বন ক্রেডিট'-এর ধারণা?

কিয়োটো প্রোটোকল থেকে 'কার্বন ক্রেডিট'-এর ধারণাটি চালু হয়েছে। এটা, ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরে রাষ্ট্রসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে হওয়া একটি চুক্তি। এর লক্ষ্য, গ্রিনহাউস গ্যাস (জিএইজি) নির্গমন নিয়ন্ত্রণ। ভারতে পরিবেশ মন্ত্রকের চালু করা 'গ্রিন ক্রেডিট' প্রকল্পে অন্যান্য পরিবেশগত ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে জল সংরক্ষণ এবং মাটির উন্নতিতেও জোর দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের কাজের মান নির্ধারণ ও মান যাচাইয়ের পদ্ধতি এখন স্থির করা হচ্ছে।

'গ্রিন ক্রেডিট'

'গ্রিন ক্রেডিট' হল, পরিবেশের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এমন কার্যকলাপে নিয়োজিত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের চেষ্টা। যা পরিবেশ সংরক্ষণ এবং পরিবেশের অগ্রগতিতে অবদান রাখার জন্য বিভিন্নস্তরের ক্ষেত্রকে উৎসাহিত করবে। এটা সরকারের একটি স্বেচ্ছাসেবার কর্মসূচি। আগে নিয়ম ছিল, কোনও শিল্পসংস্থা বনভূমি দখল করে ব্যবসার কাজে লাগালে বন দফতরকে ক্ষতিপূরণ দেবে। শুধু তাই নয়, শিল্পসংস্থাটিকেই অন্য জমি বেছে অধিগ্রহণ করতে হবে। সেই জমিতে বন দফতর নূতন করে বৃক্ষরোপণ করবে।

ঘুরিয়ে বনাঞ্চলের বেসরকারিকরণ

নরেন্দ্র মোদী সরকারের 'গ্রিন ক্রেডিট' প্রকল্পে শিল্প সংস্থাই জমি বাছবে, গাছ লাগাবে। যা বন দফতরের শর্ত পূরণ করলে, তিন বছর পর 'বনভূমি'র মর্যাদা পাবে। সেই বনভূমি থেকে প্রাপ্ত যাবতীয় অর্থ, বেসরকারি সংস্থা নিজেদের কাজে লাগাতে পারবে। এমনকী, অন্য শিল্পসংস্থা ব্যবসার কাছে সেই জমি ওই শিল্পসংস্থার থেকে কিনেও নিতে পারবে। অর্থাৎ, বনভূমি পণ্যে পরিণত হয়েছে। এতে জমি বেসরকারি হাতে থাকায় বাণিজ্যও হল। আবার, বনাঞ্চলও তৈরি হল।

'টেকসই ক্রেডিট কার্ড'

'টেকসই ক্রেডিট কার্ড', পরিবেশ-বান্ধব দাতব্য সংস্থার ব্যাপার। এই কার্ড অনুযায়ী, প্রতিবার কিছু কেনার সময় কোনও ব্যক্তির ক্রয়মূল্যের একটি অংশ পরিবেশ বান্ধব স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে চলে যায়। একটি কার্ড প্রতিবার চার্জ করার সময় কোনও সংস্থা একটি করে গাছ লাগাতে পারে। যা কার্বন দূরীকরণে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন- পাক সেনায় যোগ দিতে বলেন জিন্না, কী জবাব দিয়েছিলেন স্যাম বাহাদুর? 

নরেন্দ্র মোদীর আহ্বান

সরকার এমন ব্যবস্থা করতে চাইছে, যাতে বেসরকারি সংস্থাগুলো পরিবেশের উন্নয়নে বাধ্যতামূলকভাবে অর্থ দান (সিএসআর) করতে এই 'গ্রিন ক্রেডিট কার্ড'গুলো কেনে। যা কার্বন দূরীকরণে সাহায্য করবে। শিল্প এবং কর্পোরেশনগুলোকে সবুজের প্রতি আরও বেশি মনোযোগী করবে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উপকার করবে। সিওপি২৮-এ, প্রধানমন্ত্রী মোদী আন্তর্জাতিক দুনিয়ার কাছে আন্তর্জাতিকস্তরে 'গ্রিন ক্রেডিট' সম্পর্কে উদ্যোগী হতে আহ্বান জানিয়েছেন।

Climate Change Green House Gas COP26 narendra modi
Advertisment