ফের অশান্ত ভারত-চিন সীমান্ত। এবার প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণ তীর। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে যে এলাকায় ঢুকতে চেয়েছিল চিনা সেনা, সেখানেই এবার সেনা মোতায়েন করে দেয় ভারত। অবশেষে পিছু হঠতে বাধ্য হয় চিন। সোমবার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানান হয় "পূর্ব লাদাখে অস্থিরতার সময় যে সামরিক এবং কূটনৈতিক কথাবার্তা হয় সেই ঐক্যমত্য লঙ্ঘন হয়েছে। স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের জন্য উস্কানিমূলক সামরিক কাজ করা হয়েছে।"
যদিও প্রায় চার মাস ধরে পূর্ব লাদাখে অশান্ত পরিস্থিতি ছিলই। প্যাংগং হ্রদ সবচেয়ে বিতর্কিত ক্ষেত্র ছিল সবসময়ই। তবে তা উত্তর দিকেই সীমাবদ্ধ ছিল। প্যাংগং লেকের বেশ কিছুটা অঞ্চল পড়ে ভারতের দিকে বাকিটা তিব্বতে। প্যাংগংয়ের লাদাখী অর্থ হল অবতল এবং টিএসও শব্দের অর্থ হল হ্রদ। স্থলভূমি থেকে ৪২৭০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই হ্রদ ১৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ, চওড়ায় সর্বোচ্চ প্রায় ৬ কিলোমিটার প্রস্থ। স্ফটিকের ন্যায় স্বচ্ছ এই লেকের জল কিন্তু লবণাক্ত, তাই পানের অযোগ্য।
এই লেক নিয়ন্ত্রণ করে কারা?
মোটামুটি লেকের দুই তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করে চিন এবং ৪৫ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে ভারতের দখলে। কিন্তু লেকের বিভিন্ন অংশ যেহেতু এখনও অমীমাংসিত পর্যায়ে রয়েছে তাই সেখানে ক্ষমতা কায়েম করা নিয়েই দুই দেশ বিরোধে লিপ্ত। উত্তর পাড়ের তুলনায় দক্ষিণ পাড়ের বিস্তৃতিও অনেকটাই কম।
এই মুহুর্তে কি পরিস্থিতি?
পূর্ব লাদাখের দুটি পয়েন্টের মধ্যে উত্তর পাড় অন্যতম ছিল যেখানে মে মাসের গোড়ার দিকে অশান্তি দেখা দেয়। ৫ থেকে ৭ মে রাতে দুই দেশের সেনারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। গালওয়ান উপত্যকাতেও একই রকম লড়াই হয়েছিল। এরপর একাধিক বৈঠক, আলোচনার পর নিজেদের স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করতে থাকে চিন। কিন্তু প্যাংগংয়ের দক্ষিণ পাড়ে এখনও সেনা মোতায়েন রেখেছে শি জিনপিংয়ের দেশ।
এই দুই পাড় কতটা আলাদা?
গত শনিবারের আগে পর্যন্ত শান্তই ছিল প্যাংগংয়ের দক্ষিণ পাড়। সেনা সূত্র জানিয়েছে যে চৌসল এবং রেজাং লা-এর মতো অঞ্চল এর কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ায় উত্তর তীরের তুলনায় দক্ষিণাঞ্চলে সেনা শক্তি অনেক বেশি ভারতের। প্রাক্তন ব্রিগেড কমান্ডার ব্যাখ্যা করেছিলেন যে টহলরত ইউনিটগুলির মধ্যে সংঘর্ষের কারণে উত্তর পাড় গত কয়েক বছরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে। কিন্তু এই পাড়ে ভারতের সেনা শক্তি হয়ত চিনের জন্য চিন্তার কারণ। তবে প্যাংগ্যাং লেকের দক্ষিণ পাড় দুই দেশের জন্য কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন