বুধবার দিল্লির দ্বারকার ১৭ বছরের এক নাবালিকাকে অ্যাসিডজাতীয় কিছু ছুড়ে মারা হয়েছে। অভিযুক্ত তিন জন। এই হামলার সময় ওই কিশোরী স্কুলে যাচ্ছিল। ওই অ্যাসিড হামলায় তাঁর দেহের ৮% পুড়ে গিয়েছে। ক্ষতি হয়েছে মুখ ও ঘাড়ের। এই ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। এই জঘন্য অপরাধ বুঝিয়ে দিল যে অ্যাসিড আজও খোলা বাজারে ঠিক কতটা সহজলভ্য।
ভারতে ক'টা অ্যাসিড হামলা হয়?
নিকৃষ্ট এক অপরাধ। এতটাই নিকৃষ্ট যে মহিলাদের ওপর ঘটা আর পাঁচটা সাধারণ অপরাধের সঙ্গে এর তুলনা টানা কঠিন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)-র সংকলিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে এই ধরনের ১৫০টি, ২০২০ সালে ১০৫টি এবং ২০২১ সালে ১০২টি এই ধরনের মামলা নথিবদ্ধ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তরপ্রদেশ ধারাবাহিকভাবে এই ধরনের মামলায় রেকর্ড করেছে। সংখ্যাটা মোট অপরাধের প্রায় ৫০%। আর, বছরের পর বছর ধরে সংখ্যাটা এমনই থাকছে।
অ্যাসিড হামলা ও শাস্তির সংখ্যা
২০১৯ সালে অ্যাসিড হামলায় অভিযোগের সংখ্যা ছিল ৮৩%। ওই বছর দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার ছিল ৫৪%। ২০২০ সালে অ্যাসিড হামলায় অভিযোগের সংখ্যা ছিল ৮৬%। সেবছর দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার ছিল ৭২%। ২০২১ সালে অ্যাসিড হামলায় অভিযোগের সংখ্যা ছিল ৮৯%। ২০২১ সালেই অ্যাসিড হামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার ছিল ২০%। অথচ এমনটা কিন্তু, হওয়ার কথা ছিল। কারণ, ২০১৫ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অ্যাসিড হামলার মামলায় দ্রুত বিচারের মাধ্যমে দোষীকে সাজা দেওয়ার জন্য সমস্ত রাজ্যকে পরামর্শ দিয়েছে।
কঠোর আইন
২০১৩ সাল পর্যন্ত অ্যাসিড হামলাকে আলাদা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হত না। শেষ পর্যন্ত আইনি সংশোধনের পর অ্যাসিড হামলাকে আইপিসির পৃথক ধারা (৩২৬এ)-এর অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যার শাস্তি ন্যূনতম ১০ বছরের কারাদণ্ড। যা জরিমানা-সহ যাবজ্জীবন পর্যন্ত হতে পারে।
আরও পড়ুন- মাত্র ২৭ বছরেই ইতিহাসে! ২০০০ বছরের জটিল ধাঁধার সমাধান করলেন ঋষি রাজপোপাট
চিকিৎসক ও পুলিশকর্মীর জন্যও কড়া সাজা
এই আইনে ভুক্তভোগীর এফআইআর বা প্রমাণের অংশ নথিবদ্ধ করতে অস্বীকার করলে অথবা চিকিৎসা করতে অস্বীকার করলে পুলিশ অফিসার এবং চিকিৎসকদের বিরুদ্ধেও শাস্তির বিধান আছে। এক্ষেত্রে চিকিৎসা করতে অস্বীকার করলে চিকিৎসকের (সরকারি ও বেসরকারি উভয় হাসপাতাল) একবছর পর্যন্ত কারাবাস হতে পারে। আর, একজন পুলিশকর্তা দায়িত্বে অবহেলা করলে তাঁর দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
Read full story in English