Explained: উত্তরাখণ্ডে টানেল ধসের কারণ কী, কীভাবেই বা তা এড়ানো যেত?

উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার যমুনোত্রী জাতীয় সড়কে একটি নির্মাণাধীন টানেল রবিবার ভোরবেলায় ভেঙে পড়ে, ৪০ জন শ্রমিক ভিতরে আটকা পড়েন।

উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার যমুনোত্রী জাতীয় সড়কে একটি নির্মাণাধীন টানেল রবিবার ভোরবেলায় ভেঙে পড়ে, ৪০ জন শ্রমিক ভিতরে আটকা পড়েন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Uttarakhand tunnel collapse

উত্তরকাশী জেলায় সুড়ঙ্গের একটি অংশ ধসে পড়েছে, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। (ছবি সৌজন্যে: উত্তরাখণ্ড রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী)

উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার যমুনোত্রী জাতীয় সড়কে একটি নির্মাণাধীন টানেল রবিবার ভোরবেলায় ভেঙে পড়ে। ভিতরে ৪০ জন শ্রমিক আটকা পড়েন। লার্সেন অ্যান্ড ট্যুবরো-র প্রাক্তন প্রকল্প পরিচালক এবং ভূগর্ভস্থ নির্মাণ বিশেষজ্ঞ মনোজ গারনায়েক ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে টানেল ভেঙে পড়তে পারে। আর, কীভাবেই বা তা আটকানো যেতে পারে।

Advertisment

কী কারণে সুড়ঙ্গের একটি অংশ আলগা হতে পারে?
সুড়ঙ্গের যে অংশটি ভেঙে পড়েছে, টানেলের মুখ থেকে তার দূরত্ব ২০০-৩০০ মিটার। এটি একটি আলগা প্যাচ বা শিলার কারণে ঘটতে পারে। যা নির্মাণের সময় দেখা যায়নি। প্যাচটি হয়তো ভঙ্গুর বা ভঙ্গুর শিলা দিয়ে তৈরি। অর্থাৎ, অনেকগুলো জয়েন্ট সহ শিলা এই টানেলকে দুর্বল করে দিয়েছে। যা ভেঙে পড়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। এছাডা়ও আলগা প্যাচের মাধ্যমে জলের ক্ষরণও হতে পারে অন্যতম কারণ। জল সময়ের সঙ্গে শিলা কণাগুলোকে ক্ষয়ে ফেলেছে। যার জেরে টানেলের শীর্ষে একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছে। হয়তো তা দেখা যায়নি। যাইহোক, ভেঙে পড়ার প্রকৃত কারণটা কী, তা জানতে বড় আকারে তদন্তের প্রয়োজন। যা বিশেষজ্ঞরা চালাচ্ছেন। তদন্তের ফলাফল জানতে আমাদের এখন অপেক্ষা ছাড়া উপায় নেই।

পাথরের মধ্যে সুড়ঙ্গ খননের উপায় কী?
পাথরের মধ্যে সুড়ঙ্গ খননের মূলত দুটি উপায় রয়েছে: ড্রিল এবং বিস্ফোরণ পদ্ধতি (ডিবিএম), এবং টানেল-বোরিং মেশিন (টিবিএম) ব্যবহার করা। এর মধ্যে ডিবিএম পদ্ধতিতে শিলায় গর্ত বা ড্রিলিং করে তাতে বিস্ফোরক ভরা হয়। বিস্ফোরণে পাথরটি ভেঙে যায়। বিকল্প পদ্ধতিতে টিবিএম ব্যবহার করা হয়। একটি টিবিএম দিয়ে টানেল তৈরি ডিবিএমের চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল। কিন্তু, তা অনেক বেশি নিরাপদ। টিবিএমের সাহায্যে মেশিন শিলার গায়ে রেখে তার ঘূর্ণায়মান মাথা ব্যবহার করে শিলায় গর্ত করা হয়। ভারতে, আমদানি করা টিবিএম ব্যবহার করা হয়। এই মেশিনগুলির প্রতিটির দাম ২০০ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আর, সেই কারণে এই সব দামি মেশিন ব্যবহার করে কাজ করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

Advertisment

আরও পড়ুন- আমেরিকা-চিনের হাতে হাত, সন্ধি! ভারতের তাতে কতটা ক্ষতি, কী লাভ?

খনন পদ্ধতি কি ভূখণ্ডের ধরনের ওপর নির্ভর করে?
একটি টিবিএম খুব উঁচু পাহাড় দিয়ে ড্রিল করতে ব্যবহার করা যাবে না। টিবিএম ব্যবহার করা হলে ১,০০০-২০০০ মিটার উঁচু পাহাড়ের মধ্যে শূন্যতা তৈরি হবে। শূন্যতা তৈরি করা শিলাকে বিস্ফোরণের সাহায্যে ধ্বংস করা এক্ষেত্রে কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ, তা যখন তখন পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ডেকে আনতে পারে। ৪০০ মিটার পর্যন্ত লম্বা শিলা থাকলে টিবিএমগুলো আদর্শ। বিশেষ করে অগভীর গভীরতায় টিবিএম ব্যবহার করা সুবিধাজনক। এই কারণে দিল্লি মেট্রোর জন্য ভূগর্ভস্থ টানেল খনন করতে টিবিএম ব্যবহার করা হয়েছিল। জম্মু ও কাশ্মীর এবং উত্তরাখণ্ড-সহ হিমালয়ের বিভিন্ন জায়গায় টানেল খননের জন্য সাধারণত ডিবিএম পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

Metro Uttarkashi Tunnel Collapse Uttarakhand