কংগ্রেসের এই অপমানজনক পরাজয়ের পর রাহুল গান্ধীর সামনে এখনকার বড় প্রশ্ন, অতঃ কিম? ভারতের তথাকথিত 'গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি'র প্রধান আপ্রাণ লড়েও তাঁর তোলা বিভিন্ন ইস্যু - তা সে রাফাল হোক বা ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব বা কৃষিক্ষেত্রের গভীর সঙ্কট - ভোটে এবং আসনে পরিণত করতে পারলেন না।
বৃহস্পতিবার তাঁদের নিজস্ব ঘনিষ্ঠ মহলে বিভিন্ন কংগ্রেস নেতা স্বীকার করেছেন, নির্বাচনী প্রচারকে মোদীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত লড়াই বানিয়ে ফেলেই দিশা হারাল কংগ্রেস। কারণ বিজেপি বরাবরই চাইছিল লড়াইটা হোক মোদী বনাম বিরোধীদের অঘোষিত প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে। দেয়ার ইজ নো অলটারনেটিভ (টিনা) ছিল মোদীর সবচেয়ে বড় আশা, এবং কংগ্রেস স্বেচ্ছায়, পিছনে হাত বাঁধা অবস্থায় এই ফাঁদে পা দিল।
আরও পড়ুন: রাজ্যে বিজেপির দারুণ ফল, পশ্চিমবঙ্গে কি শেষ কংগ্রেস-বাম?
এই নির্বাচন আরও একটি মিথ্যার পর্দা সরিয়ে দিল - প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার তথাকথিত জনসংযোগ এবং ভোট ধরার ক্ষমতা নিয়ে। তিনি ময়দানে নামার আগে মনে করা হয়েছিল, এই নির্বাচনে তিনিই হবেন কংগ্রেসের ব্রহ্মাস্ত্র। কিন্তু ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর আর অস্বীকার করা যাচ্ছে না যে তিনি যতই সুবক্তা হোন, নেত্রী হিসেবে যতই স্বচ্ছন্দ, এবং যতই তাঁর মধ্যে ছায়া দেখা যাক প্রয়াত পিতা রাজীব গান্ধীর এবং পিতামহী ইন্দিরা গান্ধীর, ২০১৯-এর ভারত ১৯৭০ বা ৮০'র ভারত নয়।
কংগ্রেসের অভ্যন্তরে যাঁরা ঘোরাফেরা করেন, তাঁদের কাছ থেকে অবশ্য গান্ধীদের বিরুদ্ধে কোনও অভ্যুত্থানের খবর এখনও পাওয়া যায় নি। বরং তাঁরা পাল্টা প্রশ্ন তুলছেন: বর্তমানে কংগ্রেসে এমন কোন নেতা আছেন যাঁর কংগ্রেসে পেরেস্ত্রইকা আনার মতো জনসমর্থন বা জনপ্রিয়তা রয়েছে? আড়ালে অনেকেই স্বীকার করছেন যে নির্বাচনের ফলাফল অবাক হওয়ার মতো নয়, এবং ভারতীয় রাজনীতির ইতিহাসে নতুন অধ্যায় লেখা হচ্ছে। এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, কংগ্রেস যত তাড়াতাড়ি এই সত্যিটা বুঝতে পারে, ততই তাঁদের মঙ্গল।