কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৃহস্পতিবার (১ জুন) ঘোষণা করেছেন যে হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী প্যানেল মণিপুরে সাম্প্রতিক হানাহানির ঘটনার তদন্ত করবে। ওই হানাহানিতে ইতিমধ্যে কমপক্ষে ৮০ জন মারা গিয়েছেন। আর, বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'মাসব্যাপী চলা এই হানাহানির পিছনে মূল কারণ চিহ্নিত করা হবে। আর, কারা এর পিছনে দায়ী, তা খুঁজে বের করা হবে।'
শাহর আশ্বাস
শাহ গত ২৯ মে থেকে শুরু হওয়া মণিপুরে তাঁর চার দিনের সফর শেষে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে এই পার্বত্য রাজ্যের জন্য বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি একদিন আগে পার্বত্য এই রাজ্যের মেইতিস এবং কুকি- উভয় সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে ত্রাণশিবিরে সাক্ষাৎ করেন। তাঁদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন। একইসঙ্গে জানিয়েছেন যে, সরকারের লক্ষ্য হল যাঁরা ত্রাণশিবিরে আছেন, তাঁরা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।
মণিপুরে কী ঘটছে?
মাসখানেক আগে তফসিলি উপজাতি (এসটি) মর্যাদার দাবিতে মেইতিস সম্প্রদায়ের দাবির প্রতিবাদে পার্বত্য জেলাগুলোয় একটি 'উপজাতি সংহতি মিছিল' হয়েছিল। তার পরই মণিপুরে জাতিগত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এই হিংসাত্মক হানাহানির কেন্দ্রবিন্দু ছিল মণিপুর হাইকোর্টের একটি বিতর্কিত আদেশ। সেই আদেশ উপত্যকায় বসবাসকারী মেইতিসদের পৈতৃক জমি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং ভাষা রক্ষার দীর্ঘদিনের দাবিকে সিলমোহর দিয়েছিল। হাইকোর্টের আদেশের পর ৩ মে সমগ্র পার্বত্য জেলায় কুকিদের মত আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর বিক্ষোভ পার্বত্য রাজ্যকে হিংসার পথে পরিচালিত করে। প্রথমে কুকি অধ্যুষিত চূড়াচাঁদপুরে সেই হিংসা শুরু হয়। পরে ইম্ফল-সহ অন্যান্য জেলায় তা ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন- ছিল প্রচণ্ড তাপের পূর্বাভাস, তারপরও বেশ বৃষ্টি দেখছে ভারত, ব্যাপারটা কী?
রক্ষী-জঙ্গি সংঘর্ষ
সংঘর্ষ শেষে এক পক্ষকালেরও বেশি সময় পরিস্থিতি শান্ত থাকার পর রবিবার পার্বত্য এই রাজ্য জঙ্গি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের সাক্ষী হয়েছে। মণিপুর প্রশাসন স্বীকার করে নিয়েছে যে ইম্ফল উপত্যকার উপকণ্ঠে পাঁচটি বিভিন্ন জায়গায় সশস্ত্র জঙ্গি এবং মণিপুর পুলিশের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষ হয়েছে। উত্তেজনার বাড়াবাড়ি দেখে ত্রিপুরা ক্যাডারের (১৯৯৩ ব্যাচ) আইপিএস অফিসার রাজীব সিংকে ২৯ মে মণিপুর পুলিশের ডিজির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।