ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে লেখা চিঠিতে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বিচারপতিদের সংক্ষিপ্ত তালিকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় একজন সরকার মনোনীত ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করার 'প্রস্তাব দিয়েছেন'। তাঁর পরামর্শ হল, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিয়োগের জন্য 'মূল্যায়ন কমিটি'তে একজন সরকার মনোনীত ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তবে, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর পাঠানো চিঠি নিয়ে কলেজিয়াম এখনও কোনও আলোচনা করেনি। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সংঘাতের এটাই সর্বশেষ অধ্যায়।
কলেজিয়ামের সুপারিশ করা নামগুলোর ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় সরকার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু, সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে বদলাতে চাইছে, তাতে ক্ষুব্ধ আইনজীবী মহল। বেঙ্গালুরু অ্যাডভোকেটস অ্যাসোসিয়েশন এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। তার পরে সোমবার রিজিজুর চিঠি সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছয়। সূত্রের খবর, চিঠিতে বলা হয়েছে, বিচারপতিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায়। এই পরিস্থিতিতে এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কত ভালো করা যায়, সেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
রিজিজুর এই প্রস্তাব কিন্তু, জাতীয় বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কমিশন (এনজেএসি)-এর চেয়ে আলাদা। কারণ, সরকার এর আগে কমিশন গড়ে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানোর কথা বলেছিল। ২০২২ সালের নভেম্বরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু কলেজিয়াম স্টিস্টেমকে অস্বচ্ছ বলে অভিযোগ করেছিলেন। ডিসেম্বরে কার্যত রিজিজুর মন্তব্যকেই পুনরায় তুলে ধরেছিলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। এর আগে ২০১৪ সালে সংবিধানের ৯৯তম সংশোধনীর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার একটি বিল পাশ করে। সেই সংশোধনীতে বলা হয়, সরকার এনজেএসি গঠন করবে। যা বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ করবে।
আরও পড়ুন- ‘নিলে ফেরৎ দিন, লোভ করবেন না’, ফের মনে করালেন মমতা
NJAC-তে ঠিক হয়, সেখানে দেশের প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী ও সুশীল সমাজের দুই বিশিষ্ট ব্যক্তি থাকবেন। যার মধ্যে একজনকে সিজেআই, প্রধানমন্ত্রী এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতার সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটি মনোনীত করবে। অন্যজনকে এসসি/এসটি/ওবিসি/সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বা মহিলাদের থেকে মনোনীত করা হবে।
যাইহোক, শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে এই নতুন সংশোধনী বাতিল করার পর, সরকার NJAC সংক্রান্ত আইনটি বাতিল করতে বাধ্য হয়। কিরেন রিজিজুর সর্বশেষ সুপারিশটি লক্ষণীয়ভাবে ভিন্ন। NJAC-র মত সম্পূর্ণভাবে একটি নতুন নিয়োগ প্রতিষ্ঠান তৈরির বদলে, তিনি বিচারপতি নিয়োগে কেন্দ্রের এক প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছেন।
Read full story in English