Advertisment

Explained: তুরস্কে ত্রাণসাহায্য: অতীতে বিপর্যস্ত দেশগুলোর প্রতি কেমন ছিল ভারতের ভূমিকা?

বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে চিকিৎসকরাও গিয়েছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
aid to Turkey

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কে ত্রাণসাহায্য পাঠিয়েছে ভারত। নতুন কিছু না। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো যখনই সমস্যায় পড়েছে, ত্রাণ হাতে সাহায্যের জন্য ভারত এগিয়ে গিয়েছে। বুধবারই সংসদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দেড়শোর বেশি দেশকে সংকটের সময় প্রয়োজন অনুযায়ী ভারত ওষুধ, টিকা পাঠিয়েছে। দেশের প্রতিটি নাগরিককে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। করোনার পরিস্থিতিতে দুনিয়ার বড় দেশগুলো নাগরিকদের আর্থিক সাহায্য করতে চেয়েও পারেনি। একমাত্র ভারতই মাত্র কয়েক সেকেন্ডে কোটি কোটি মানুষের কাছে ডিজিটাল মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য পৌঁছে দিয়েছে।'

Advertisment

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্কে ত্রাণ সরবরাহের জন্য ভারত একটি সেনা মেডিকেল দল, জাতীয় দুর্যোগ ত্রাণ বাহিনী (এনডিআরএফ), কর্মী এবং চিকিৎসা সরবরাহ পাঠিয়েছে। পশ্চিম এশিয়ার দেশটি সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) একের পর এক প্রচণ্ড ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, তুরস্কের দুর্যোগে সরকার ত্রাণ ঘোষণার কয়েক ঘন্টা পরেই রওনা দিয়েছে দুর্যোগ মোকাবিলা দল। সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, 'চিকিৎসক দলে অর্থোপেডিক সার্জিক্যাল টিম, জেনারেল সার্জিক্যাল বিশেষজ্ঞ দল-সহ অন্যান্য মেডিকেল টিমও রয়েছে।'

publive-image

তুরস্কে এই ত্রাণ পাঠানো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত একটি দেশের সাহায্যে ভারতের দ্রুত এগিয়ে আসার আরেকটি উদাহরণ। গত ১৫ বছরে, ভারত বেশ কয়েকটি দুর্যোগে ত্রাণ সাহায্য করেছে। এই ধরনের জরুরি পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্বকে পথ দেখিয়েছে। অতীতে ভারতের কীর্তি-

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: ভারতীয় বিমান বাহিনীর আই-৭৬ বিমান ২০০৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর হ্যারিকেন ক্যাটরিনায় ক্ষতিগ্রস্তদের লিটল রক এয়ার ফোর্স বেসে ২৫ টন ত্রাণ সরবরাহ করেছে। এই ত্রাণের মধ্যে ছিল ৩,০০০টি কম্বল, বিছানার চাদর, ত্রিপল এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি জিনিসপত্র।

মালদ্বীপ: ২০০৪ সালের সুনামির পর, ভারত সরকার পাঁচ কোটি টাকার একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল। 'অপারেশন ক্যাস্টর'-এর অধীনে, চারটি বিমান এবং দুটি নৌ জাহাজ ত্রাণ তৎপরতায় নিযুক্ত ছিল। জেনারেটর এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা মেরামত, তা পুনরুদ্ধার করা, পানীয় জল সরবরাহ করা এবং জাহাজে মেডিকেল ক্যাম্পও তৈরি করা হয়েছিল।

শ্রীলঙ্কা: ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর সুনামি আঘাত হানার কয়েক ঘণ্টা পর ভারত 'অপারেশন রেইনবো' নামে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। হাজার হাজার ক্ষতিগ্রস্তর চিকিৎসায় সহায়তা করে। স্থানীয় অসামরিক এবং সামরিক স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় গড়ে মেডিকেল ক্যাম্পগুলো চালানো হয়েছিল। প্রতিরোধমূলক ওষুধ এবং ভ্যাকসিনও সরবরাহ করা হয়েছিল সেই সব ক্যাম্প থেকে।

মায়ানমার: ২০০৮ সালে ঘূর্ণিঝড় নার্গিস মায়ানমারে আঘাত হানায় অন্তত ২০,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথমে সাহায্য পাঠিয়েছিল ভারত। ওষুধ, পোশাক, বাসনপত্র, জলের ট্যাংক, তাঁবু, ত্রিপল-সহ ১২৫.৫ টন ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছিল।

জাপান: ২০১১ সালের সুনামিতে ক্ষতিগ্রস্ত জাপানে ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করার পাশাপাশি, ভারত ওনাগাওয়া শহরে অনুসন্ধান ও উদ্ধারের জন্য জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-এর ৪৬ জন সদস্যকে পাঠিয়েছিল। দলটিতে ছিল একজন ডাক্তার, তিনজন আধিকারিক, ছয়জন পরিদর্শক, দুজন প্যারামেডিক এবং কনস্টেবল। ৯,০০০ কেজি সরঞ্জাম ও খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল জাপানে।

আরও পড়ুন- রেপো রেট বাড়াল রিজার্ভ ব্যাংক, তাতে লাভটা কী?

নেপাল: ২০১৫ সালে নেপালে ভূমিকম্পের পর, এনডিআরএফ নেপালের ১৬টি শহরে অনুসন্ধান ও উদ্ধারের (ইউএসএআর) টিম মোতায়েন করেছিল। দলে ছিলেন ৭০০ জনেরও বেশি উদ্ধারকারী। তাঁরা ১১ জন আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন। ১৩৩ জনের মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করেন। দলগুলো ছয়টি মেডিকেল ক্যাম্পেরও আয়োজন করেছিল। সেই ক্যাম্পে ১,২১৯ জন চিকিৎসা করিয়েছিল। পাশাপাশি, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ নেপালে ১,১৭৬ টনেরও বেশি ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছিল।

Read full story in English

earthquake India Turkey
Advertisment