চন্দ্রযান-৩ ল্যান্ডার ২৩ আগস্ট চাঁদে আলতোভাবে অবতরণের চেষ্টা করবে। তার শেষ ১৫ মিনিটে যে প্রযুক্তিগত কৌশলটি ব্যবহার করা হবে, তা হল- নামার সময় চাঁদের পৃষ্ঠের সমান্তরাল অবস্থান থেকে ল্যান্ডারটি সামান্য কাত হয়ে নামবে। বুধবার সন্ধ্যায় এই শেষ ১৫ মিনিট ঠিক করে দেবে যে অভিযান সফল হবে কি না। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) চন্দ্রযান-২ অভিযান শুরুর প্রথম চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর, ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার চেয়ারম্যান কে সিভান চন্দ্রের পৃষ্ঠে অবতরণের এই শেষ ১৫ মিনিটের পর্যায়কে '১৫ মিনিটের সন্ত্রাস' বলে বর্ণনা করেছিলেন।
আগের অভিযানের ভুল
ডা. সিভানের বর্ণনা অভিযানের চূড়ান্ত পর্যায়ের জটিলতাকে তুলে ধরেছে। বলা হয়ে থাকে, চন্দ্রযান-২ ব্যর্থ হয়েছিল, কারণ ঠিক এই নামার সময়ই ল্যান্ডার বিক্রম চন্দ্রের ভূমির সমান্তরাল অবস্থান থেকে কাত না-হয়েই চাঁদের পৃষ্ঠে আঘাত হানে। চন্দ্র পৃষ্ঠ থেকে ৭.৪২ কিলোমিটার দূরে এই সোজা থেকে কাত হওয়ার কথা ল্যান্ডারের। কিন্তু, চন্দ্রযান-২ এর সময় ল্যান্ডার বিক্রম তা করেনি। এর মধ্যে চাঁদের চারপাশে কক্ষপথ ২৫X১৩৪ কিলোমিটার কমাতে রবিবার চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডারের চূড়ান্ত ডিবুস্টিং হয়েছে।
রুক্ষ ব্রেকিং ফেজ
অবতরণের অন্য গুরুত্বপূর্ণ অংশটি হল চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০ কিলোমিটার উচ্চতায় ল্যান্ডারের অনুভূমিক বেগকে ১.৬৮ কিমি/সেকেন্ড (৬,000 কিমি/ঘণ্টারও বেশি) রেঞ্জ থেকে কমিয়ে আনার প্রক্রিয়া, যা ল্যান্ডারের অবতরণের চেষ্টার সঙ্গেই ঘটবে। চন্দ্রের প্রায় ৭০ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশে যেখানে চন্দ্রযান-৩ নামবে, সেখানে এখনও পর্যন্ত কোনও মহাকাশযান নামেনি। ইসরো জানিয়েছে, ২৩ আগস্ট ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪ নাগাদ অবতরণের সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছে।
আরও পড়ুন- কাশ্মীর ইস্যু: কেন রাষ্ট্রসংঘে গিয়েছিল ভারত, তারপর কী ঘটল?
যে কারণে বিধ্বস্ত হয়েছিল চন্দ্রযান-2
ইসরো চেয়ারম্যান এস সোমানাথ ৯ আগস্ট বলেছিলেন, 'চন্দ্রযান-৩ বর্তমান সময়ে প্রায় ৯০ ডিগ্রি কাত হয়ে আছে। আর, যখন ২৩ আগস্ট বিকেল ৫টা ৪৭-এ অবতরণ প্রক্রিয়া শুরু হবে, ল্যান্ডারটি নামার জন্য কাত হয়ে যাবে। ল্যান্ডার ঘোরানোর এই প্রক্রিয়াটি গাণিতিকভাবে বেশ আকর্ষণীয়। এখানেই শেষবার আমাদের সমস্যা হয়েছিল। যার ফলে ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর চন্দ্রযান-২ বিধ্বস্ত হয়।'