তিন বছর আগে এই দিনটাতেই ঘটেছিল সেই ভয়ংকর ঘটনা। ২০২০ সালের ১১ মার্চ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) করোনাকে অতিমারি ঘোষণা করেছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অধিকর্তা টেড্রোস আধনম গেব্রিয়েসাস সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, চিনের বাইরের পরিস্থিতি দেখে, 'আমরা মনে করছি যে করোনাকে একটি অতিমারি হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে।' অতিমারি হল একটি রোগের প্রাদুর্ভাব, যা দেশ বা মহাদেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
করোনার প্রভাব
এটি বিপুলসংখ্যক মানুষকে প্রভাবিত করে। আর, মহামারির চেয়েও বেশি প্রাণ নেয়। কোভিড-১৯ অতিমারি বহু ভারতীয়র জীবনকেও মৌলিকভাবে প্রভাবিত করেছে। হাজার হাজার মানুষ, যাঁরা এই রোগে ভুগছিলেন, তাঁরা প্রভাবিত হয়েছেন। পাশাপাশি, বিপুলসংখ্যক মানুষ এর অর্থনৈতিক পতনের দ্বারাও প্রভাবিত হয়েছেন।
প্লেগে মৃত্যু
তাই বলে করোনাই কিন্তু প্রথম অতিমারি নয়, যা ভারতকে প্রভাবিত করেছে। তর্কাতীতভাবে, ভারতকে প্রভাবিত করা প্রথম বড় মহামারি ছিল তৃতীয় প্লেগ অতিমারি। ১৮৫৫ সালে চিনের ইউনান থেকে শুরু করে, এই অতিমারি ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত সক্রিয় ছিল। এমনটাই মত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। শেষ পর্যন্ত প্লেগে মৃত্যুর সংখ্যা বিশ্বে ২০০-র নীচে যখন নেমে আসে, তখন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু, তার আগে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময়ে প্লেগের কারণ ১২ থেকে ২৫ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
বিশ্বব্যাপী প্রভাব
এটা শুধু নথিবদ্ধ মৃত্যুর পরিসংখ্যান। আর, প্লেগে এই নথিবদ্ধ মৃত্যুর ৭৫ শতাংশই ঘটেছিল ব্রিটিশ ভারতে। সেটা ১৮৯৬ সালের পর থেকে। আর, প্লেগ সত্যিই করোনার মতই বিশ্বব্যাপী প্রভাব ফেলেছিল। ফলে, এটা অতিমারি ছিল। যা সান ফ্রান্সিসকো, গ্লাসগো থেকে পোর্তো কিংবা হংকং থেকে বোম্বাই- এক নিঃশ্বাসে বলতে গেলে বিশ্বের প্রায় সব বড় শহরকেই প্রভাবিত করেছিল। বলা ভালো, সংকটে ফেলেছিল।
আরও পড়ুন- ব্যাংক ব্যবসায় ইন্দ্রপতন! ঝাঁপ বন্ধ সিলিকন ভ্যালির, কীভাবে ঘটল এই ভয়ানক কাণ্ড?
প্লেগ কী?
ইয়ার্সিনিয়া পেস্টিস ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বুবোনিক প্লেগ হয়। এটি মাছির কামড় দ্বারা পরিবাহিত হয়। তারা সংক্রামিত ইঁদুর থেকে মানুষের মধ্যে রোগ স্থানান্তর করে। এটি প্রথমে ফ্লুর মতো উপসর্গ তৈরি করে। যা আসলে জ্বর, ঠান্ডা লাগা এবং মাথাব্যথার মত উপসর্গ। এরপরে গা-হাত-পা কামড়ানো, শরীরের চারপাশে স্ফীত, শুষ্ক আর অত্যন্ত বেদনাদায়ক জায়গা তৈরি করে। সংক্রমণ শরীরে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ক্লান্তি, ফোলা লিম্ফ নোড, উত্তেজনা, ব্যথা অনুভব হয়। আর, সাধারণত সংক্রমণের এক সপ্তাহের মধ্যেই শরীরের একাধিক অঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দেয়। যার জেরে সংক্রামিত ব্যক্তির মৃত্য হয়।