Advertisment

Explained: নয়ডার টুইন টাওয়ার এখন ধ্বংসস্তূপ, এই ধ্বংসাবশেষ নিয়ে এখন কী করবে প্রশাসন?

কংক্রিটের ধ্বংসাবশেষের পুনরায় ব্যবহার ইউরোপের দেশগুলোয় বহুদিন ধরেই প্রচলিত। বর্তমানে ভারতেও সেই পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে শিল্প বিশেষজ্ঞদের বিশেষ তত্ত্বাবধানে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Noida twin towers

নয়ডার সুপারটেক টুইন টাওয়ারগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সেক্টর ৯৩এ এলাকা, যেখানে টুইন টাওয়ারগুলো ছিল, সেখানে এখন কেবলই কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপ। এলাকাবাসীর স্বার্থে দ্রুত, নিরাপদে এই সব ধ্বংসস্তূপ সরাতে হবে প্রশাসনকে। কীভাবে হবে সেই কাজ?

Advertisment

টুইন টাওয়ারের এই ধ্বংসাবশেষের পরিমাণ কত?
এই ধ্বংসের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি সংস্থা এডিফিস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অংশীদার উৎকর্ষ মেহতার মতে, এই ধ্বংসস্তূপের ওজন প্রায় ৮০,০০০ টন। এক টন হল ১,০০০ কিলোগ্রাম। পরিমাণের দিক থেকে এই ধ্বংসস্তূপ ৩৬,০০০ ঘনমিটার। এডিফিস ২৪ আগস্ট নয়ডা কর্তৃপক্ষকে এমনটাই জানিয়েছিল।

যমজ টাওয়ারগুলোর মধ্যে অ্যাপেক্স ছিল ১০২ মিটার উঁচু। মোট ৩২ তলা। তুলনায় খাটো সিয়ানের লম্বায় ছিল ৯৫ মিটার। মোট ২৯ তলা। তার চেয়ে অনেকটাই খাটো ৭৩ মিটার উঁচু কুতুব মিনার। আর, ইন্ডিয়া গেট তো আরও খাটো, ৪২ মিটার। দুটি টাওয়ার মিলিয়ে একসঙ্গে ৯১৫টি ফ্ল্যাট ছিল। তবে ধ্বংসের আগে সমস্ত দেয়াল এবং ইট সরানো হয়েছিল। শুধুমাত্র কংক্রিটের কাঠামোটাই ধ্বংস করা বাকি ছিল। বর্তমানে ওই জায়গায় যে ধ্বংসস্তূপ পড়ে আছে, তা মূলত কংক্রিটের বড় স্ল্যাব এবং ইস্পাতের টুকরো।

ধ্বংসস্তূপের এই ছোট্ট পাহাড়ের ভবিষ্যৎ কী?
টুইন টাওয়ারের দুটি বড় বেসমেন্ট ছিল। এডিফিসের পরিকল্পনা অনুসারে, ধ্বংসাবশেষের সিংহভাগ মোট ৩৬ হাজার ঘনমিটারের মধ্যে ২৩,১৩৩ ঘনমিটার বেসমেন্টের গর্ত পূরণ করতে ব্যবহার করা হবে। ওজনের দিক থেকে, এটি মোট ৮০ হাজার টনের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার টন। এই ধ্বংসাবশেষের একটি ছোট অংশ সাইটে কিছু প্রয়োজনীয় নির্মাণের জন্য ব্যবহার করা হবে।

অবশিষ্ট ৩০ হাজার টন বা ১২,৮৬৭ ঘনমিটার ধ্বংসাবশেষ পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই স্থান থেকে সরানো হবে। তা পুনরায় ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রশাসনের। সরকারের তরফে নয়ডা কর্তৃপক্ষের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক রিতু মহেশ্বরী জানিয়েছেন, অবশিষ্ট ধ্বংসাবশেষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পুনরায় ব্যবহার যোগ্য করতে তুলতে চায় প্রশাসন। যাতে তা নির্মাণকাজে লাগানো যায়। এজন্য তা একটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কারখানায় ব্যবহার করা হবে।

এই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ কে দেখবে এবং এজন্য কত সময় লাগবে?
এই দায়িত্ব হায়দরাবাদের সংস্থা রামকি গ্রুপকে দেওয়া হয়েছে। এই সংস্থা বড়বড় অসামরিক এবং পরিবেশগত কাঠামো উন্নয়ন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে কাজের জন্য বিখ্যাত। নয়ডা প্রশাসন এবং নয়ডা রেসিডেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (আরডব্লিউএ)-এর সমন্বয়ে এই গোটা বর্জ্য সরানোর কাজ ৯০ দিন বা তিন মাসের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা।

আরও পড়ুন- দুর্নীতির নমুনা’ নয়ডার টুইন টাওয়ার কাদের মদতে তৈরি হয়েছিল, ফাঁস সোশ্যাল মিডিয়ায়

২০২০ সালের মারাদু ধ্বংস মামলায় কী হয়েছিল?
২০২০ সালের জানুয়ারিতে, উপকূলীয় নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কোচির মারাদুতে নির্মিত চারটি বহুতলের ভবনগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছিল। ১ হাজার টন থার্মো-মেকানিক্যালি ট্রিটেড (টিএমটি) স্টিল বার ছাড়াও প্রায় ৭৬,২৫০ টন ধ্বংসস্তূপ পাওয়া গিয়েছিল। কোচির সংস্থা প্রম্পট এন্টারপ্রাইজ, যাকে কংক্রিটের ধ্বংসাবশেষ সরানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, সেই সংস্থা ধ্বংসাবশেষ সরাতে প্রায় চার মাস নিয়েছিল।

হোলি ফেইথ H2O এবং জৈন কোরাল কোভ ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে কংক্রিটের অংশগুলো ফাঁপা ইট এবং ফুটপাথের টাইলস তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছিল। পাশাপাশি, জমি ভরাট এবং সংশ্লিষ্ট কাজেও তা ব্যবহার করা হয়েছিল। কংক্রিটের ধ্বংসাবশেষের পুনরায় ব্যবহার ইউরোপের দেশগুলোয় বহুদিন ধরেই প্রচলিত। বর্তমানে ভারতেও সেই পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে শিল্প বিশেষজ্ঞদের বিশেষ তত্ত্বাবধানে।

Read full story in English

Twin Blast Noida Twin Tower
Advertisment