গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই পাকিস্তানে গমের আটার দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। রোটি এবং নান পাকিস্তানের প্রধান খাবারের অন্যতম। তার মধ্যেই আটার দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি স্বভাবতই জনসাধারণকে সমস্যায় ফেলেছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরকারি ভর্তুকিযুক্ত আটা সংগ্রহের জন্য লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে। সিন্ধুর মিরপুর খাসে, ৭ জানুয়ারি এমনই এক লাইনে পদদলিত হয়ে একজন ৩৫ বছর বয়সি ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন।
দাম বৃদ্ধির কারণ
এদিকে খাইবার পাখতুনখোয়ায় আটার অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। এই দাম বৃদ্ধির দায় কেউই নিতে চাইছে না। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলো পরস্পরের ওপর দামবৃদ্ধির দায় চাপিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বিধ্বংসী বন্যা এবং আফগানিস্তানে গম পাচারের কারণেই পাকিস্তানে আটার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তার মধ্যেই রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ গম পাকিস্তানে পৌঁছেছে। যার জেরে আগামী সপ্তাহগুলোয় আটার চাহিদা কিছুটা হলে মিটবেও বলে আশা করছে ইসলামাবাদ প্রশাসন।
কতটা চরমে গমের মূল্যসংকট?
পাকিস্তানের দুই গম উৎপাদনকারী রাজ্য হল পঞ্জাব ও সিন্ধুপ্রদেশ। এই দুই রাজ্যের মধ্যে পঞ্জাবে বর্তমানে আটার দাম প্রতিকেজি ১৪৫ পাকিস্তানি রুপি। আর সিন্ধুপ্রদেশে আটার দাম আরও চড়া- কেজিপ্রতি ১৬০ টাকা। গোটা পাকিস্তানে আটার দাম সবচেয়ে বেশি পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানে। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পাকিস্তানে ৫ ও ১০ কেজি আটার ব্যাগের দাম একবছর আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ইসলামাবাদ এবং রাওয়ালপিন্ডিতে একটি নান বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। আর, রুটি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। বর্তমানে পাকিস্তানের মুদ্রার মানও তলানিতে। পাকিস্তানের ১ রুপির সমান ভারতের ৩৫ পয়সা।
আরও পড়ুন- কোন জরুরি আইনে মোদীকে নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ হল?
কী কারণে সংকট সৃষ্টি হয়েছে?
পাকিস্তান তার খরচের চাহিদা মেটাতে গম আমদানি করে। যার বেশিরভাগই আসে রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২০ সালে পাকিস্তান $১.০১ বিলিয়ন মূল্যের গম আমদানি করেছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে ইউক্রেন থেকে ($৪৯৬ মিলিয়ন মূল্যের)। তারপরে এসেছে রাশিয়া ($৩৯৪ মিলিয়ন)। এই বছর, যুদ্ধ সেই সরবরাহকে ব্যাহত করেছে। পাশাপাশি, বন্যার জন্য পাকিস্তানে ফসল উৎপাদনও ব্যাহত হয়েছে। তার ফলেই দেখা যাচ্ছে যে পাকিস্তানে মজুদ গমের চেয়ে চাহিদার পরিমাণ বেশি।
Read full story in English