সোমবার হিমাচল প্রদেশে ভারী বর্ষণের পরে, পার্বত্য রাজ্যে ভূমিধসে কমপক্ষে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে ৯ জন সিমলায় ধসে পড়া মন্দির এবং কয়েকজন ঘর ধসে তার নীচে চাপা পড়েছেন। শুধু হিমাচল প্রদেশেই না। উত্তরাখণ্ডেও প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু এক্স-এ (পূর্বতন টুইটার) বলেছেন যে, মেঘ বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গিয়েছে। তিনি জনগণকে জলাশয় এবং জনবসতিহীন এলাকায় না-যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এর মধ্যেই আবহাওয়া দফতর (আইএমডি) ১৫ আগস্ট, সোমবার পর্যন্ত হিমাচল প্রদেশে এবং ১৮ আগস্ট, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তরাখণ্ডে হালকা থেকে মাঝারি এবং মাঝারি থেকে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, এর পরে বৃষ্টি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেতে পারে।
মেঘ ভাঙা কী?
মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হল একটি স্থানীয় কিন্তু, তীব্র আকারে হওয়া বৃষ্টিপাত। যদিও এটি সমভূমিতেও হতে পারে। তবে, সাধারণত পাহাড়ি অঞ্চলেই বেশি হয়। তবে খুব ভারী বৃষ্টিপাতের সব দৃষ্টান্তই কিন্তু মেঘভাঙা বৃষ্টি নয়। মেঘভাঙা বৃষ্টি বা মেঘ বিস্ফোরণের একটি নির্দিষ্ট সংজ্ঞা আছে: মোটামুটি ১০ কিমি x ১০ কিমি এলাকায় এক ঘণ্টায় ১০ সেমি বা তার বেশি বৃষ্টিপাতকে মেঘভাঙা বৃষ্টি বা মেঘের বিস্ফোরণ বলে। এই সংজ্ঞা অনুসারে, একই এলাকায় আধঘণ্টার মধ্যে ৫ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাতকেও মেঘভাঙা বৃষ্টি বা মেঘের বিস্ফোরণ বলা হয়ে থাকে।
বৃষ্টিপাতের ভৌগোলিক তারতম্য
এর প্রেক্ষিতে বলতে গেলে, একটি সাধারণ বছরে সমগ্র ভারতে সারা বছরে প্রায় ১১৬ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়। এর অর্থ হল, যদি একবছরের মধ্যে ভারতের সর্বত্র সমগ্র বৃষ্টিপাত তার এলাকায় সমানভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, তাহলে মোট জমে থাকা জলের উচ্চতা হবে ১১৬ সেন্টিমিটার। অবশ্যই, দেশের অভ্যন্তরে বৃষ্টিপাতের বিশাল ভৌগোলিক তারতম্য রয়েছে। কিছু অঞ্চলে এক বছরে গড় পরিমাণের চেয়ে ১০ গুণ বেশি বৃষ্টিপাত হয়। আবার, বিভিন্ন জায়গা বৃষ্টির অভাবে শুকিয়ে মরে। তার মধ্যেই দেশের যে কোনও জায়গায় গড়ে একবছরে প্রায় ১১৬ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আশা করে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন- আরতির সময়ই ধসে পড়ল শিবমন্দির, ভয়াবহ বৃষ্টিতে হিমাচলে মৃত ৫০ ছাড়াল, বিপর্যস্ত দেবভূমিও
এক ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত
একটি মেঘভাঙা বৃষ্টি বা মেঘের বিস্ফোরণের জেরে সেই জায়গা বার্ষিক বৃষ্টিপাতের প্রায় ১০% এক ঘণ্টার মধ্যে পেয়ে থাকে। ২০০৫ সালের ২৬ জুলাই, মুম্বইয়ের অভিজ্ঞতা ছিল খুব খারাপ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত তার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতির সাক্ষী হয়েছে। ২০০৫ সালের সেই ভয়ংকর সময়ে মুম্বইয়ে ২৪ ঘণ্টায় ৯৪ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। যার ফলে ৪০০ জনেরও বেশি লোক মারা গিয়েছিলেন। আর, ১০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল।