কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে যখন 'পাকিস্তান-খলিস্তানপন্থী' টুইট নিয়ে টুইটার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতি কেন্দ্রের, তখনই বেশ কিছু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী Koo অ্যাপ ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। টুইটারের একেবারে দেশীয় বিকল্প এই মাইক্রোব্লগিং সাইট। কিন্তু কীভাবে কাজ করে এই অ্যাপ, আর কারাই বা এর নেপথ্যে, তা নিয়ে প্রশ্ন জাগছে নেটজনতার মনের ভিতর। আসুন জেনে নেওয়া যাক এর নেপথ্য রহস্য-
Koo অ্যাপের জনক হলেন দুজন। বর্তমানে সংস্থার যৌথ কর্ণধার অপ্রমেয় রাধাকৃষ্ণ এবং মায়াঙ্ক বিদ্বাত্কা। রাধাকৃষ্ণ প্রথমে একটি অনলাইন ক্যাব সার্ভিস ট্যাক্সিফরশিওর তৈরি করেন। যেটা পরে ওলা ক্যাবসকে বিক্রি করে দেওয়া হয়। Koo-এর আগে এর প্যারেন্ট সংস্থা বম্বিনেট টেকনোলজিস প্রাইভেট লিমিটেড তৈরি হয়। তারা প্রথমে Quora-র দেশীয় সংস্করণ ভোকাল শুরু করে। তথ্য অনুযায়ী, এই সংস্থা ২০১৮ সাল থেকে ব্লুম ভেঞ্চার্স, কালারি ক্যাপিটাল এবং অ্যাক্সেল পার্টনার্স ইন্ডিয়ার থেকে তহবিল সংগ্রহ করা শুরু করে। গত মাসে ইনফোসিসের প্রাক্তন সিএফও মোহনদাস পাইয়ের থ্রিওয়ানফোর ক্যাপিটাল সংস্থা লগ্নি করা শুরু করে বম্বিনেট টেকনোলজিস-এ।
এবার জানা যাক Koo অ্যাপ কীভাবে গ্রহণযোগ্য হল-
গত বছরের শুরুতে অ্যাপ যাত্রা শুরু করে। কেন্দ্রের আত্মনির্ভর অ্যাপ ইনোভেশন চ্যালেঞ্জে জিতে প্রচারের আলোয় আসে। ভারতে তৈরি জোহো এবং চিঙ্গারিও (টিকটকের দেশীয় সংস্করণ) সেই প্রতিযোগিতায় জেতে। গত বছর চিনা অ্যাপ দেশে নিষিদ্ধ হওয়ার পর এই দেশীয় সংস্থার তৈরি অ্যাপগুলিকে তুলে ধরতে শুরু করে সরকার। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তাঁর 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে এই 'আত্মনির্ভর ভারত' প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এই দেশীয় অ্যাপের কথা বলেছিলেন।
কারা কারা বর্তমানে এই অ্যাপ ব্যবহার করছেন-
কেন্দ্রীয় রেল ও বাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল, আইনমন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ, সাসংদ তেজস্বী সূর্য ও শোভা কারান্দলাজে, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা, ইশা ফাউন্ডেশনের কর্ণধার তথা গুরু জাগ্গি বাসুদেব, প্রাক্তন ক্রিকেটার জাভাগাল শ্রীনাথ এবং অনিল কুম্বলের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা বর্তমানে এই অ্যাপ ব্যবহার করছেন। এছাড়াও কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক, ভারতীয় পোস্ট এবং নীতি আয়োগের মতো কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট রয়েছে এই অ্যাপে।
এবার জানা যাক, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের এই অ্যাপ ব্যবহারের তাৎপর্য কোথায়?
কৃষক আন্দোলনের আবহে বিশ্বের জনপ্রিয়তম মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারের সঙ্গে সংঘাতের আবহে Koo অ্যাপ ব্যবহারের ঝোঁক তাৎপর্যপূর্ণ অবশ্যই। তাও আবার যদি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সেলেবরা ব্যবহার শুরু করেন তাহলে তো আরও তাৎপর্য রয়েছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ধীরে ধীরে কেন্দ্র দেশীয় মাইক্রোব্লগিং সাইটকে বিকল্প হিসাবে তুলে ধরতে চাইছে। মার্কিন সংস্থা টুইটারকে কড়া জবাব দিতে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক বেশি করে এই ধরনের দেশীয় সংস্থাকে প্রোমোট করছে। তাতেই চাপ বাড়ছে টুইটারের উপর।