গত এক শতকের শীতলতম মরশুমে হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের (CAA) প্রতিবাদে দিল্লির শাহিনবাগে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন বহু মহিলা। মুখে একগাল হাসি আর কাঁধে শাল জড়িয়ে সেই মহিলাদের ভিড়ে ছিলেন ৮২ বছরের বিলকিসও। তাঁবু খাটিয়ে নীরব প্রতিবাদে শামিল হওয়া কয়েক শো মহিলার মধ্যে নজর কাড়েন তিনিও। ধীরে ধীরে আন্দোলনের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। প্রতিবাদের ভাষা যখন আলোর দিশারি হয়ে ওঠে তখন শাহিনবাগের দাদিদের কথা মুখে মুখে ফিরতে থাকে। সেই প্রতিবাদী অশীতিপর বিলকিস এবার মার্কিন টাইম ম্যাগাজিনের বিচারে দুনিয়ার ১০০ জন সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের মধ্যে জায়গা করে নিলেন।
কেন বিলকিস প্রভাবশালী?
টাইম ম্যাগাজিনের হয়ে সাংবাদিক রানা আয়ুব কলম ধরেছিলেন বিলকিসের জন্য। তিনি নিজের কলামে লিখেছেন, "প্রান্তিক মানুষদের আওয়াজ হয়ে উঠেছিলেন বিলকিস। যখন দেশে মোদি জমানায় সংখ্যাগুরুর রাজনীতির চাপে মহিলা ও সংখ্যালঘুদের আওয়াজ দাবিয়ে রাখা হচ্ছিল। তখন প্রতিবাদের ভাষা হয়ে ওঠে বিলকিসদের মতো মানুষরা।" দিল্লির শাহিনবাগে আন্দোলন চলে ১০১ দিন পর্যন্ত। কিন্তু করোনার কোপে গত ২৪ মার্চ দিল্লি পুলিশ তাঁদের অবস্থান তুলে দেয়। তবে জানুয়ারি মাসেই যখন শাহিনবাগের আন্দোলনের কথা দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে সেইসময় দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বিলকিস বলেছিলেন, "আমাদের বয়স হয়েছে। কিন্তু এই আন্দোলন আমরা নিজেদের জন্য করছি না। বরং আমাদের সন্তানদের জন্য করছি। নাহলে কেন এথ ঠান্ডার মধ্যে আমরা দিনরাত এক করে আন্দোলন চালাব?"
গত ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবসে বিলকিস রোহিত ভেমুলা ও জুনেদ খানের মায়ের সঙ্গে শাহিনবাগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। তারপর থেকে শাহিনবাগের দাদিদের আরও সম্মানের চোখে দেখতে শুরু করে দেশবাসী। তারপর ফেব্রুয়ারি মাসে যখন শাহিনবাগের আন্দোলনস্থল থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে দাঁড়িয়ে এক দুষ্কৃতী গুলি চালায় তখনও ভয় পাননি বিলকিস। বলেছিলেন, "বুলেটকে ভয় পাই না আমরা। আন্দোলন চালিয়ে যাব।"
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন