মধ্যবিত্ত শব্দটা চার অক্ষরের হলেও, এর প্রভাব ব্যাপক। বছরের পর বছর ভারতের গণমাধ্যম এবং বিশ্লেষকরা মধ্যবিত্তের প্রভাব উপলব্ধির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, এই মধ্যবিত্তের ওপর নির্ভর করে ভারতে গৃহস্থালির ব্যবহার, ভারতীয় অর্থনীতির বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্যের রূপরেখা স্থির হয়। তবে, মধ্যবিত্ত হতে গেলে কী বৈশিষ্ট্য দরকার, তা স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। বাস্তবে ভারতের প্রকৃত মধ্যবিত্তের সংখ্যা ২০০ থেকে ২৫০ মিলিয়নেরও কম। কীভাবে এর সম্প্রসারণ করা যায়, তার ভাবনাচিন্তার সময় এসেছে। কারণ, তাতেই ভারতের অর্থনীতি তার পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জন করতে সক্ষম হবে।
কিন্তু, বাস্তবে ভারতে প্রকৃত মধ্যবিত্তের সংখ্যা বেশ কম। কারণ, অনেকের নিয়মিত বেতন নেই। বিরাট অংশের মানুষ বেসরকারি কর্মসংস্থানে যুক্ত। তাঁদের অনেকেই আবার সেই সব সংস্থার স্থায়ী কর্মীও নন। ফলে, তাঁদের ক্রয়ক্ষমতা সময়বিশেষে বাড়লেও, গড়পরতায় বেশ কম। অর্থাৎ, খরচ করার ক্ষমতা সীমিত। যার জেরে তাঁরা অর্থনৈতিক মন্দা সামলাতে হামেশাই ব্যর্থ হন। তাঁরা নিয়মমাফিক ব্যয়ও করতে পারেন না। ব্যয়ের পর হাতে কতটা উদ্বৃত্ত থাকবে, সেই ব্যাপারেও তাঁরা নিশ্চিত হন। ফলে, তাঁদের প্রকৃত অর্থে মধ্যবিত্ত বলা যায় না।
আরও পড়ুন- কর্ণাটকের কায়দায় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির জোরে বাজিমাতের চেষ্টা কংগ্রেসের, কী আশ্বাস দিলেন প্রিয়াঙ্কা?
আবার অনেক পরিবার আছে, যেখানে একজন ভালোমানের চাকরি করেন। বাকিরা তেমন একটা কিছু করেন না। ফলে, সেই ব্যক্তির আয়ের ওপর গোটা সংসারটা চলে। সেক্ষেত্রেও আর্থিক যোগ্যতার ভিত্তিতে এই সব পরিবারকে মধ্যবিত্তের তালিকায় ফেলা যায় না। কারণ, গোটা পরিবারের পিছনে ব্যয় করার জেরে এই পরিবারগুলোর আয়ের পরিমাণ আর ব্যয়ের পরিমাণ যথেষ্ট বলা যায় না। সেই হিসেবে ভারতে মধ্যবিত্তের চেয়ে নিম্নবিত্তের সংখ্যাটা অনেক বেশি। যাঁরা নিজেদের মধ্যবিত্ত বলে চালান, তাঁদের একটা বিরাট অংশ আসলে রয়েছে নিম্নবিত্তের বন্ধনীতে। মধ্যবিত্ত হতে গেলে, অন্ততপক্ষে আর্থিক স্বচ্ছলতাটা জরুরি। যেটা তথাকথিত মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর অনেকরই নেই। যার জেরে বলতে হয়, অনেকে নামেই মধ্যবিত্ত।