করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোনও একটা দেশের নয়। বরং বিশ্বের। আমেরিকা, ভারত, ব্রাজিল-সহ একাধিক দেশে এখনও করোনার দাপট অব্যাহত। কোভিড থাবায় আক্রান্ত বিশ্বের প্রতিটিও দেশই তাই চাইছে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব এই ভাইরাসকে নির্মূল করতে। আর এই কাজে সমন্বয় চাইছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। করোনা ভ্যাকসিনের কাজে যেন গতি আসে সেই কারণে কোভ্যাক্স প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে চলেছে আমন্ত্রণ জানানোর কাজ। এপ্রিলের প্রথম দিকেই এই সুবিধা ক্ষেত্রটি লঞ্চ করেছিল হু। যাতে গবেষক এবং ওষুধ প্রস্তুতকারকেরা একযোগে কাজ করতে পারেন। শুধু তাই নয় বিশ্বের সকলের কাছেই যেন সমানভাবে এই ভ্যাকসিন পৌঁছয় সেটিও পর্যবেক্ষণ করা এর উদ্দেশ্য ছিল।
তবে কেবল নজরদারি নয়, ফান্ড রাইজিং করাও এর কাজ। ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে কোনও রকমের আর্থিক সমস্যা সৃষ্টি হলে সেখানে যাতে সাহায্য করা সম্ভব হয় সেই বিষয়টিও দেখা হচ্ছে।প্রাথমিকভাবে যে হিসেব করা হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে যে গবেষণা ও উৎপাদন এবং বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন সরবরাহের ব্যয় মেটাতে প্রায় ১৮.১ মার্কিন ডলার বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন ছিল।
আরও পড়ুন, টিকাকরণের আগেই দেশে বাড়ল সুস্থতার হার, কমছে অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা
এর মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে যেন ভ্যাকসিন সরবরাহ সম্ভব হয় সেই চেষ্টা করা হচ্ছিল। শেষ যে ঘোষণা করা হয়েছে হু এর তরফে সেখানে বলা হয়নি কতগুলি দেশ এই উদ্যোগে নিজেদের সম্মতি জানিয়েছে। ১৫ জুলাই এই বিষয়ে যে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছিল সেখানে বলা হয়েছিল যে ৭৫টি দেশ এই কোভ্যাক্স প্ল্যাটফর্মে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছে। যেসব দেশ এই উদ্যোগে যোগ দিয়েছে তারা জানায় যে যখনই ভ্যাকসিন আবিষ্কারে সফল হবে তারা তখনই বিশ্বের অন্যত্র ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে তারা। প্রত্যেকেই ২০ শতাংশ জনসংখ্যার সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
তবে এই উদ্যোগ থেকে আগেই নিজের হাত উঠিয়ে নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশের তরফে সাফ জানান হয় হু-কে আর্থিক সাহায্য করবে না তারা। তবে এই মুহুর্তে মডার্ণা-সহ একাধিক ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আশা করা হচ্ছে ভ্যাকসিন উৎপাদনের পরবর্তী ধাপে হয়তো সাহায্যও করতে পারে ট্রাম্পের দেশ।
এদিকে সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই)-এর সঙ্গে ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বিল এবং মিলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। সেরামের ভ্যাকসিন উৎপাদনে তাঁরা দিয়েছে ১৫ কোটি ডলার। আর ইতিমধ্যেই অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি-অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং নোভাভ্যাক্স-এর সঙ্গে ভ্যাকসিন উৎপাদনে গাঁটছড়া বেঁধেছে সেরাম। পর্যবেক্ষকদের মত সেই কারণেই ভারতের বাজারে ভ্যাকসিনের দাম কম রাখা সম্ভব হতে পারে এই সংস্থার কাছে।
অন্যদিকে ভ্যাকসিন ছাড়াই প্রথম করোনা মুক্ত দেশ হিসেবে ১০০ দিন কাটানোর রেকর্ড তৈরি করল নিউজিল্যান্ড। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের এই দেশে এই মুহুর্তে স্বাভাবিক হয়েছে জনজীবন। স্বাভাবিক হয়েছে খেলাধুলো-রেস্তোরাঁয় গিয়ে খাওয়াদাওয়ার মতো নিত্য নৈমিত্তিক জীবন। ইউনিভার্সিটি অফ ওটাগোর প্রফেসর মাইকেল বেকার বলেন, “বিশ্বের উচিত নিউজিল্যান্ডের থেকে শেখা। পশ্চিমী দুনিয়া সম্পূর্ণ ভুলভাবে এই রোগটিকে পর্যালোচনা করেছে। যার ফল ভুগতে হচ্ছে এখন।”
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন