/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/12/Election-in-India.jpg)
বিভিন্ন কারণে ২০২৪ সালের নির্বাচন সবচেয়ে ফলপ্রসূ হতে পারে। (এক্সপ্রেস ইলাস্ট্রেশন)
'অভূতপূর্ব' এবং 'ঐতিহাসিক'- এই দুটি শব্দ ২০২৩ সালে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বারবার শোনা গিয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল, এবছর ভারতীয় রাজনীতির গতিশীল পরিবর্তন। উচ্চ, নিম্ন ও সুদূরপ্রসারী পরিবর্তনগুলোর প্রতি নজর রাখা। ভারত প্রথমবারের মতো জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক। ২০২৪, বিশ্বের বৃহত্তম নির্বাচন আয়োজনের বছর। ভারতের রাজ্যগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন, সম্ভাব্য নতুন ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং দেশের জন্য বৈদেশিক নীতির চ্যালেঞ্জ, একটি অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে ভারতের উত্থান সম্পর্কে বহুল আলোচনা। এর দ্বারা চিহ্নিত করা যেতে পারে ভারতের নিজস্ব ঐতিহাসিক এবং অভূতপূর্ব উন্নয়ন। নতুন বছরে এবং তার পরেও জাতীয় রাজনীতিতে ঘুরেফিরে আসবে এই সব বিষয়গুলো।
ঐতিহাসিক এবং নজিরবিহীন
সংসদে নারী সংরক্ষণ বিল পাস করাকে 'ঐতিহাসিক' বলে অভিহিত করেছে বিজেপি। দলের সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বড় বিরোধী জোটে বিজেপি-বিরোধী দলগুলো একত্রিত হয়েছে। রাহুল গান্ধী ২০১৪ সালের পর সম্ভবত প্রথমবার নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে দেশজুড়ে যাত্রা করেছেন। সেটাও ঐতিহাসিক। ঔপনিবেশিক যুগের ফৌজদারি আইন বদলানোর বিল পাসের মত নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনও ছিল ঐতিহাসিক। মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে লোকসভা সাংসদ রাহুল গান্ধীর অযোগ্যতা ছিল নজিরবিহীন। যেমন নজিরবিহীন ঘটনা হল, সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে তাঁর সংসদ লগইন পাসওয়ার্ড অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য বহিষ্কার করা। এছাড়াও নজিরবিহীন ঘটনা হল, সংসদ থেকে সংসদ সদস্যদের ব্যাপকহারে সাসপেনশন। হিন্দি হার্টল্যান্ডে গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি কংগ্রেসের নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়াও যেমন নজিরবিহীন। তেমনই নজিরবিহীন ঘটনা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ যে, একজন ভারতীয় গোয়েন্দা আধিকারিক আমেরিকার মাটিতে একজন খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীকে হত্যা করার জন্য ব্যর্থ ষড়যন্ত্র করেছেন।
প্রতিযোগিতামূলক কল্যাণবাদ
লোকসভা নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, রাজনৈতিক আলোচনা ততই তিক্ষ্ণ এবং সম্ভবত আরও খারাপ হবে। ইতিহাস, বাস্তব নিয়ে আলোচনা চলবে। প্রশ্ন করা হবে। বিতর্ক তৈরি হবে। মেরুকরণের রাজনীতি ফিরেও আসতে পারে। সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য বৈচিত্র্যের জাতীয়তাবাদ কেন্দ্রে স্থান পাবে। প্রতিযোগিতা, কল্যাণবাদ, বিনামূল্যের প্রসঙ্গ, নগদ লেনদেন, নিশ্চয়তা, প্রতিশ্রুতিগুলো রাজনৈতিক এবং নির্বাচনী আখ্যানে প্রাধান্য পাবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই সরাসরি নগদ দেওয়ার সঙ্গে কল্যাণমূলক প্রকল্পকে জুড়ে দিয়েছেন। যা মোদীর তোড়ায় আরও একটি ফুল। যা বিজেপি সমর্থকদের বলতে সাহস জুগিয়েছে- হিন্দুত্ব, পেশীবহুল জাতীয়তাবাদ, সভ্যতার পুনরুত্থান সমার্থক।
'বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা'
চলতি মাসের গোড়ার দিকে পাঁচটি বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল আসার আগেই, কেন্দ্রীয় সরকার 'বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা' শুরু করেছিল। যা আবাসন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পগুলো সম্পর্কে তথ্য ছড়িয়ে দিতে এবং সচেতনতা বাড়াতে দেশব্যাপী প্রচার চালিয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার, পেনশন এবং বিশুদ্ধ পানীয় জল সম্পকে মানুষকে সচেতন করেছে।
আরও পড়ুন- গুজরাতে বেড়াতে গিয়ে মদ্যপান করে আইনের ফাঁসে পড়বেন না তো? জানুন নিয়ম
লোকসভা ভোটের জন্য পরিকল্পনা
তার পরও কংগ্রেস শিবির থেকে ইঙ্গিত মিলেছে যে তারা লোকসভা নির্বাচনের জন্য কল্যাণমূলক প্রতিশ্রুতি-সহ একটি অর্থনৈতিক পরিকল্পনা তৈরি করছে। এটা স্পষ্ট যে, বিরোধীরা বেকারত্ব এবং মূল্যবৃদ্ধির মতো জীবিকার বিষয়গুলোকে প্রচারের মূল অংশ হিসেবে তুলে ধরতে চাইবে। যা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, কেন্দ্রীয় সরকার নতুন কোনও প্রকল্প ঘোষণা না-ও করতে পারে। তবে কিছু চালু প্রকল্পের মেয়াদ এবং তার কার্যকারিতা বাড়াতে পারে। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই বিনামূল্যে খাদ্যশস্য প্রকল্পের মেয়াদ আরও পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানোর কথা ঘোষণা দিয়েছেন। এমনই কিছু প্রতিশ্রুতি থাকতে পারে বিজেপির ইশতেহারেও।