দিল্লির উপমুখ্যন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়ার গ্রেফতারে এখন রীতিমতো বেকায়দায় আম আদমি পার্টি ও দিল্লি সরকার। কারণ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ডান হাত ছিলেন সিসোদিয়া। তিনি আপ সরকারের হয়ে বড় ভূমিকা পালন করতেন। সোজা কথায় বললে, বিরাট দায়িত্ব সামলাতেন। দিল্লি সরকারের শিক্ষাব্যবস্থার মুখ ছিলেন সিসোদিয়া। পাশাপাশি, আম আদমি পার্টির রাজনৈতিক বিস্তারেও বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন।
Advertisment
শুধু কি তাই? দিল্লি সরকারের ১৮টি দফতর ছিল সিসোদিয়ার হাতে। পাশাপাশি তিনি দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী পদে তো ছিলেনই। এর আগে গত বছর মে মাসে আর্থিক তছরুপ মামলায় দিল্লি মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য তথা সিসোদিয়ার ঘনিষ্ঠ সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
কেজরিওয়ালের বিশ্বস্ত সেনাপতি বলে দীর্ঘদিন ধরেই সিসোদিয়া পরিচিত। দিল্লিতে সরকার গঠনের আগে কেজরিওয়ালের সঙ্গে সিসোদিয়া মিলে 'পরিবর্তন' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সামলাতেন। সেই সময় তাঁরা রেশন নিয়ে সমস্যা, বিদ্যুতের বিল নিয়ে সমস্যা, তথ্যের অধিকার-সহ নানা বিষয়ে সোচ্চার হতেন। আর, এসব ক্ষেত্রে সিসোদিয়া বরাবরই বড় ভূমিকা গ্রহণ করতেন।
দিল্লি সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর শিক্ষা, অর্থব্যবস্থা, পরিষেবা, নজরদারির মত নানা বিভাগের দায়িত্ব মণীশ সিসোদিয়া সাবলীলভাবে সামলাতেন। এসব নিয়ে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সঙ্গে তাঁর নানা বিষয়ে বাদানুবাদ হয়েছিল। সত্যেন্দ্র জৈনের গ্রেফতারির পর দিল্লি সরকারের সিসোদিয়ার দায়িত্ব আরও বেড়েছিল। স্বাস্থ্য, পূর্ত, আবাসন-সহ সত্যেন্দ্র জৈনের দফতরগুলোও সিসোদিয়াই সামলাচ্ছিলেন।
সামনেই কেজরিওয়াল সরকারের বাজেট অধিবেশন। মার্চের প্রথম অর্ধেই বাজেট পেশের কথা। আপ দিল্লিতে সরকার গঠনের পর ২০১৪ সাল থেকে কেজরিওয়াল সরকারের হয়ে বাজেট পেশ করেছেন সিসোদিয়াই। সেই কারণেও দিল্লি সরকারের বাজেট পেশের কয়েক সপ্তাহ আগে সিসোদিয়ার গ্রেফতারিতে তাই রীতিমতো বেকায়দায় কেজরিওয়াল। বেকায়দায় আপ সরকার।
সবচেয়ে বড় কথা, সিসোদিয়া দিল্লি সরকারের শিক্ষা দফতর সামলাতেন। আর, তার সুবাদে দিল্লি তো বটেই, গোটা দেশে মণীশ সিসোদিয়ার পরিচিতি ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছিল। শিক্ষাক্ষেত্রে সিসোদিয়ার অবদানের জন্য পড়ুয়াদেরকেও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেও দেখা গিয়েছে। সিসোদিয়ার গ্রেফতারির পর সেই ভিডিও ফের সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করেছে আম আদমি পার্টি।