বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় সেনার চিতা কপ্টার ভেঙে পড়েছে। সেনা মুখপাত্র এমনটাই জানিয়েছেন। পশ্চিম বোমডিলায় মান্ডালার কাছে কপ্টারটি সকাল ৯টা ১৫ নাগাদ ভেঙে পড়ে। প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহেন্দ্র সংবাদ সংস্থা এএনআইকে এমনটাই জানিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ দুই পাইলটের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
চিতা
হ্যাল চিতা হল ফ্রেঞ্চ অ্যারোস্পেসিয়েল এসএ ৩১৫বি লামার লাইসেন্স-নির্মিত সংস্করণ। যদিও এটি উষ্ণ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়ার পাশাপাশি উচ্চ উচ্চতার পরিস্থিতিতে কাজ করার ক্ষমতার জন্য পরিচিত। কিন্তু, এটি একটি বয়স্ক বিমান। কারণ, এসএ ৩১৫বি লামা ৬০ বছর আগে ১৯৬৯ সালে প্রথমবার আকাশে ডানা মেলেছিল। বছরের পর বছর ধরে অভিযোগ উঠেছে, এইচএএল চেতকের সঙ্গে চিতাও রীতিমতো অসুরক্ষিত। আর, তাই সশস্ত্র বাহিনী এই বিমানের আধুনিকীকরণ করার চেষ্টা করছে।
ফরাসি সংস্থাকে বরাত
এই হেলিকপ্টারের জন্য লামা প্রকল্প শুরু হয়েছিল ১৯৬০ সালে। ভারত ও নেপালের সেনা কপ্টারের বরাত দিয়েছিল। গরমের মধ্যে উঁচু এলাকায় উড়তে পারে এমন কপ্টার এই এলাকার জন্য প্রয়োজন ছিল। অর্থাৎ, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং বায়ুর ঘনত্ব কম, এমন পরিস্থিতিত চলাচলের জন্য দরকার ছিল বিমান। এই উচ্চতা এবং তাপমাত্র বিমানের কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। আর, এই পরিস্থিতিতে কর্মক্ষমতা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন ওজন হ্রাস করা এবং ইঞ্জিনের শক্তি বৃদ্ধি। অবশেষে সেই বিমান ১৯৬৯ সালের ১৭ মার্চ ওড়া শুরু করে। আর গোড়া থেকেই বুঝিয়ে দেয়, তা পার্বত্য অঞ্চলে ব্যবহারের জন্য আদর্শ। যার ফলে সেনাবাহিনী মালপত্র সরবরাহ, অনুসন্ধান এবং উদ্ধারকাজ সব কিছুতেই এই কপ্টারের ব্যবহার শুরু করে। এমনকী এই কপ্টার ১২,৪৪২ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত উড়েছে।
আরও পড়ুন- সংসদে আক্রান্ত গণতন্ত্র, বিরোধী সাংসদদের মাইক্রোফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, অভিযোগ মহুয়ার
লামা থেকে চিতা
ফরাসি লামা সংস্থার সঙ্গে হ্যাল লাইসেন্সের জন্য ১৯৭০ সালে চুক্তি করেছিল। তার ভিত্তিতেই তৈরি হয় ভারতে নির্মিত বিমান 'চিতা'। চিতা প্রথমবার তৈরি হয় ১৯৭৬-৭৭ সালে। হ্যালের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত তারা ২৭৯টি চিতা তৈরি ও সরবরাহ করেছে। তার কয়েকটি সরবরাহ করেছে ভারতে। কয়েকটি করেছে বিদেশে। এই চিতাই হিমালয় অঞ্চলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড।