অসংখ্য জটিলতা সমুদ্রের গভীরে ডুবে থাকা টাইটানের পাঁচ যাত্রীকে উদ্ধারের প্রচেষ্টাকে বাধাপ্রাপ্ত করতে পারে। রবিবার (১৮ জুন) আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখে ওই পাঁচ জন টাইটানে চেপে ফিরে আসতে ব্যর্থ হয়েছে। সমুদ্রে যে কোনও উদ্ধার অভিযান আবহাওয়া, রাতে আলোর অভাব, সমুদ্রের অবস্থা, জলের তাপমাত্রার মত বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। এই বিষয়গুলো জটিল হলে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়।
অনেক ডুবো যানে অ্যাকোস্টিক ডিভাইস লাগানো থাকে। যাকে পিঞ্জার বলা হয়। এই পিঞ্জার এমন শব্দ করে, যার সাহায্যে জলের নীচে ডুবে থাকা যানকে শনাক্ত করা যায়। কিন্তু, টাইটানের ক্ষেত্রে তা আছে কি না, সেটা স্পষ্ট নয়। সাধারণত, টাইটানিকের কাছে যানটির আড়াই ঘণ্টা থাকার কথা। সেখানে সহযোগী জাহাজের সঙ্গে ওই ডুবো যানের যোগাযোগ প্রায় ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এটা টাইটানের যোগাযোগর সরঞ্জামে বা ব্যালাস্ট সিস্টেমের সমস্যা থেকেও হতে পারে। এই সিস্টেমে ডুবোযানের জলের ট্যাংকগুলো প্লাবিত হয়। আর, জলের ওপরে ওঠার জন্য বায়ুর সাহায্যে দিয়ে জল পাম্প করে বের করা হয়। এভাবে ডুবোযানের অবতরণ এবং আরোহণ নিয়ন্ত্রিত হয়।
আবার যদি ধ্বংসপ্রাপ্ত টাইটানিক জাহাজের কোনও টুকরোয় এই ডুবোযান আটকে যায়, তবেও সমুদ্রের ওপরে ডুবোযানের উঠে আসা ব্যাহত হতে পারে। আর, যদি কোনওভাবে ডুবোযানটি কাত হয়ে ডুবে থাকা টাইটানিক জাহাজের নীচে চলে যায়, তবে ওই ডুবোযানের উদ্ধারে আরও বড় কোনও সমস্যা তৈরি হতে পারে। মানব ডুবুরিরা বিশেষ সরঞ্জাম পরিধান করে। তারা হিলিয়াম-সমৃদ্ধ বাতাসের মিশ্রণ শ্বাস-প্রশ্বাসে নিতে পারে। নিরাপদেই সমুদ্র পৃষ্ঠের নীচে কয়েকশো ফুট গভীরে পৌঁছতে পারে। তার পর আর সূর্যের আলো আর জলে প্রবেশ করতে পারে না, সেখানে তখন অন্ধকার বিরাজ করে।
আরও পড়ুন- যাঁরাই শুনছেন বিস্ময়ে হাত ঠেকাচ্ছেন কপালে! আচমকা এত বিমান কেন কিনছে ইন্ডিগো?
যে টাইটানিক দেখার জন্য ওই যাত্রীরা গিয়েছিলেন, সেই ডুবে যাওয়া ঐতিহাসিক জাহাজ উত্তর আটলান্টিকের প্রায় ১৪,০০০ ফুট জলের গভীরে রয়েছে। এমন গভীরতায় মানুষ তখনই পৌঁছতে পারে, যখন বিশেষভাবে তৈরি ডুবোযানের ভিতরে থাকাকালীন তার যাত্রীদের উষ্ণ, শুকনো রাখা যায়। আর, তাঁদের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য প্রয়োজনীয় বাতাস সরবরাহ করা সম্ভব হয়।