ক্রিসমাসের পরের দিন 'বক্সিং ডে'। অনেকেরই দিনটা কাটে বিভিন্ন ধরনের খেলা আর শপিংয়ের মধ্যেই কাটে দিনটা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বক্সিং ডে অন্যবারের মত এবারও সাড়ম্বরে পালিত হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, দক্ষিণ আফ্রিকার পুরুষ ক্রিকেট দল বর্তমানে বক্সিং ডে টেস্ট ম্যাচ খেলছে। ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়ায় দিনটি সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। মজার ব্যাপার হল, এই দিনটি কেন এত গুরুত্ব দিয়ে পালন করা হয়, তার নির্দিষ্ট কোনও কারণ নেই। এনিয়ে নানা মত আছে।
বক্সিং ডে-এর উৎস
এই ব্যাপারে সবচেয়ে জনপ্রিয় মত হল, 'বক্সিং' হচ্ছে কার্ড বোর্ডের বাক্স। এই সব বাক্সে গৃহহীনদের জন্য উপহার এবং অন্যান্য সামগ্রী প্যাক করা হত। যাঁদের প্রয়োজন রয়েছে, সেই সব ব্যক্তিদের জন্য এই সব অতিরিক্ত পোশাক, খাবার বা অন্যান্য সামগ্রী পাঠাত হত। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মেরু অঞ্চলের অনেক দেশেই ঠান্ডা রুখতে পোশাকের প্রয়োজনীয়তাকে এই উপহার দেওয়ার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। ক্রিসমাসের উপহার দেওয়া, উপহার ভাগ করে নেওয়ার ঐতিহ্যের সঙ্গেও বিষয়গুলো অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে জড়িত। বিশেষ করে অভাবী ব্যক্তিদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। এই ভাবনা থেকেও ক্রিসমাসের উপহারের বিষয়টি জড়িত।
শ্রমজীবীরা আনন্দ পালন করতে পরদিন
শ্রমজীবী শ্রেণির লোকজন আলাদাভাবে বড়দিন পালন করার সুযোগ পান না। কারণ, তাঁদের কাজের মধ্যে দিয়েই বড়দিন কেটে যায়। সেই কথা মাথায় রেখেই আরও একটা দিনকে বাছা হয়েছিল। যাতে শ্রমিক শ্রেণির মানুষ সেই বিশেষ দিনে ক্রিসমাসের আনন্দ উপভোগের সুযোগ পেতে পারেন। সেই হিসেবেই ২৬ ডিসেম্বরকে বাছা হয়েছিল। এমন ভাবনাও 'বক্সিং ডে'-এর উৎপত্তির কারণ হিসেবে চালু রয়েছে।
আরও পড়ুন- ব্যাপক বিপর্যয়! ‘বম্ব সাইক্লোন’-এ বিপর্যস্ত আমেরিকা-কানাডা, কী এই ‘বম্ব সাইক্লোন’?
নানা মুনির নানা মত
আবার আরেক শ্রেণির মত হল, এই 'বক্সিং ডে'-এর ভাবনা ক্রিসমাস-পরবর্তী গির্জার প্রথা থেকে এসেছে। এই প্রথা অনুযায়ী, বড়দিনের আনন্দ পালনের জন্য দরিদ্রদের মধ্যে অর্থ বিতরণ করা। যে অর্থ বিতরণ করার জন্য ওই সব ব্যক্তিদের বাড়ির দরজায় বাক্স রাখা হত। আর, সেই বাক্সে পাওয়া অর্থ দিয়ে ২৫ ডিসেম্বরের পরদিন অর্থাৎ ২৬ ডিসেম্বর, দরিদ্র শ্রেণির মানুষজন পালন করতেন বড়দিনের আনন্দ। আবার কারও কারও দাবি, 'বক্সিং ডে' ব্রিটেনের গর্বিত নৌ-ঐতিহ্য এবং সেই ঐতিহ্যের থেকেই এসেছে। এই ঐতিহ্য অনুযায়ী, দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রার জন্য একটি সিল করা অর্থের বাক্স রাখা হত। সমুদ্রযাত্রা শেষে সেই অর্থ দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণের জন্য একজন যাজকের হাতে তুলে দেওয়া হত।
Read full story in English