প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষের আঁচ পেতে শুরু করেছে ভারতে উৎপাদনকারী মার্কিন সংস্থাগুলি। চিনে তাদের সংস্থা থেকে বিভিন্ন উপাদান সংগ্রহে সমস্যা দেখা দিচ্ছে তাদের।
এরকম কিছু সংস্থার প্রতিনিধি একটি দল এ নিয়ে ডিপার্টমেন্ট ফর প্রোমোশন অফ ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ইন্টারনাল ট্রেডের সচিব ডক্টর গুরুপ্রসাদ মহাপাত্রকে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে চিঠি লিখেছেন।
সমস্যাটা কী?
চিন থেকে আমদানি করা কনসাইনমেন্ট মুম্বই ও চেন্নাই সহ কিছু বন্দরে সমস্যার মুখে পড়ছে। জানা গিয়েছে গত চোদ্দ দিনে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ইঙ্গিত দিয়েছে, চিন থেকে আসা মাল ছাড়তে দেরি হবে, তবে এ ব্যাপারে কোনও কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
আরও পড়ুন, উঁচু জায়গায় যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ কী কী, কীভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় সেনাবাহিনীকে?
আমদানিকারীরা জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে কাস্টমস বা সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডিরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমসের তরফ থেকে লিখিত বা মৌখিকবাবে কিছু জানানো হয়নি।
চেন্নাই কাস্টমস জোনের আধিকারিকরা বলেছেন নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ। অন্যদিকে আমদানিকারী ও শিল্পগোষ্ঠী এ বিষয়টিকে আমদানির রকমের পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছে, বিশেষ করে অনাবশ্যকীয় পণ্যের ক্ষেত্রে। সীমান্ত উত্তেজনার মাঝে চিনা পণ্যের ব্যবহার কমানোর জন্য যে আহ্বান করা হচ্ছে, তার মাঝেই এ পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
মার্কিন সংস্থা উদ্বিগ্ন কেন?
কিছু মার্কিন সংস্থার প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন বলছে তাদের উৎপাদন কাজ এখানে চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ এবং অন্যান্য জিনিস বন্দরে আটকে রয়েছে। এই ফোরাম চাইছে বন্দরের কাজ শুরু হোক, বা অন্তত বন্দর নীতিতে কোনও রকম বদল এলে তা প্রকাশ করা হোক।
জানা গিয়েছে এর ফলে ৫০টির কাছাকাছি মার্কিন সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু বড় মার্কিন টেলিকম ও অটোমেকার সংস্থা, যাদের চেন্নাইযে উৎপাদন ইউনিট রয়েছে তারা চিনের সংস্থা থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি করে।
এবং যেহেতু সরকারের তরফ থেকে কনসাইনমেন্ট ছাড়ার ব্যাপারে এই সংস্থাগুলিকে কোনও সরকারি নির্দেশ বা কোনও নির্দিষ্ট কারণ জানানো হয়নি, এই গোষ্ঠী স্বচ্ছতার অভাবের প্রশ্ন তুলেছে এবং জানিয়েছে তাদের ব্যবসা চালানোর ব্যাপারে তারা বিপদ বোধ করছে।
চিনের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ কী?
চিন থেকে আমদানির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে সরকারি স্তরে নানা আলোচনা হচ্ছে যাতে বিভিন্ন আমদানিকৃত পণ্যের উপর বিধিনিষেধের তালিকা করার কথা ভাবা হচ্ছে।
আরও পড়ুন, গালওয়ান উপত্যকা নিজের বলে কেন দাবি করছে ভারত?
২০১৯-এর এপ্রিল থেকে ২০২০-র ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভারতের মোট আমদানির ১৪ শতাংশ হয়েছে চিন থেকে। এর মধ্যে মুখ্যত রয়েছে স্মার্টফোন ও অটোমোবাইলের যন্ত্রাংশ, টেলিকমের দ্রব্য, প্লাস্টিক ও ধাতব দ্রব্য, ওষুধের উপাদান ও অন্যান্য রাসায়নিক।
ফার্মাসিউটিক্যালের ব্যাপারে ভারত চিনের ওপর অতিনির্ভরশীল। ২০১৮-১৯ সালে ভারতের ওষুধ ও ওষুধের উপাদানের ৬৮ শতাংশ চিন থেকে আমদানি করা হয়েছে, যার মূল্য ৩.৫৬ বিলিয়ন ডলার।