দলের অভ্যন্তরে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে পরাজয়ের পর। দলের রাশ, সেই নেতৃত্বের অভাব পরিলক্ষিত হয় সেই সময় থেকেই। এরপর ২০১৯-এও বিজেপির কাছে পরাজয়ের ধাক্কায় সেই রাশ যেন অনেকটাই আলগা হয়ে যায়। সম্প্রতি সোনিয়া গান্ধীকে ২৩ জন প্রবীণ কংগ্রেস নেতার পাঠানো চিঠি এবং প্রাতিষ্ঠানিক রদবদলের যে ডাক সেখানেই একঝাঁক বিতর্ক উঠে আসছে। দিল্লির ১০ নং জনপথে এ জাতীয় বিপদ সাম্প্রতিককালে কখনই হয়নি। সোনিয়া-রাহুলের উপর নেতৃত্ব যে আস্থা হারাচ্ছে তা চিঠিতে পরোক্ষ হলেও স্পষ্ট। আর সেই বিষয়েই কলম ধরলেন দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের কনসাল্টিং এডিটর কোমি কাপুর।
কেন প্রবীণ রাজনীতিকরা হঠাৎ এই পত্র পদক্ষেপ নিতে গেলেন?
শতাব্দী প্রাচীন দলের ভবিষ্যত নিয়ে প্রকৃতভাবে উদ্বিগ্ন রয়েছেন দীর্ঘদিন দলে থাকা নেতারা। সেই ভাবনা থেকেই এতবড় 'ঝুঁকিপূর্ণ' কাজের কথা ভেবেছেন ২৩ জন কংগ্রেসেরই নেতা। তবে তাঁরা কিন্তু এটাও জানতেন যে এই কাজের পর দলে তাঁদের মত 'পুরোনো'দের জায়গা হয়তো কমে আসবে। এমনকী যদি নেতৃত্ব পরিবর্তন হয়ে রাহুল গান্ধী ক্ষমতায় আসীন হয় সেক্ষেত্রেও। কোমি কাপুরের কথায়, "এই চিঠির মাধ্যমে রাহুল গান্ধীকেই ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে যা তিনি আগে হতে চেয়েছিলেন।" কংগ্রেসের অন্দরে এটা স্পষ্ট ছিল যে রাহুল গান্ধীই হয়তো সভাপতি পদে ফিরবেন। প্রশ্ন একটাই কবে?
আরও পড়ুন, কংগ্রেস অন্দরে ‘চিঠি’ ঘিরে অশান্তি! এবার কি ‘হাতবদল’?
রাহুল গান্ধী নিজেকে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে নিয়েছেন তার কারণও আছে। তিনি আশ্বস্ত হতে চেয়েছিলেন যে তাঁকেই সব ক্ষমতা অর্পণ করা হবে। সিদ্ধান্ত তিনি একাই নেবেন। রাহুল তাঁর মায়ের মতো চলতে চাননি। যেখানে সোনিয়া এখনও দলের প্রবীণ নেতাদের কথা শোনেন, পাকা রাজনৈতিক মস্তিষ্কের বিচারবুদ্ধির উপর ভরসা করেন। রাজীব-পুত্র বরং উল্টো পথের পথিক। দীর্ঘদিন কংগ্রেস করে আসা পোড় খাওয়া রাজনীতিককেই তিনি সন্দেহ করেন। রাহুল যদিও বুঝিয়ে দেন যে তিনি দলের 'ইন চার্জ' নন। কিন্তু এখনও তাঁর টুইটগুলিকেই 'কংগ্রেসের তরফে জানান হয়েছে' বলে ধরে নেওয়া হয়।
তবে এটা ঠিক কংগ্রেস নেতাদের এই বিদ্রোহকে নি:সন্দেহে বাতিল করা হবে। প্রশ্ন একটাই যে চিঠির পরামর্শগুলিও কি এড়ানো হবে? যদি দলের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্তদের এই পরামর্শ বাদ দেওয়া হয় তবে ১৩৫ বছরের এই দল যে অস্তিত্বের সংকটের দিকেই এগিয়ে যাবে এমনটাই মনে হচ্ছে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন