Explained: বাড়ছে কোভিড, চিন্তিত হবেন এই বৃদ্ধিতে, নাকি গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরবেন, জেনে নিন

সংক্রমণ বৃদ্ধির ফলেই এই নয়া ছবিটি তৈরি হয়েছে।

সংক্রমণ বৃদ্ধির ফলেই এই নয়া ছবিটি তৈরি হয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
India records 21,880 new Covid19 cases 22 July 2022

করোনা উদ্বেগ বেড়েই চলেছে।

ভারতে কোভিড বাড়ছে। হ্যাঁ, অল্প হলেও। গত ২৪ গণ্টায় ২,৫৪১ জনের কোভিড হয়েছে। গত সোমবারের (১৮ এপ্রিল) কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ২,১৮৩। অ্যাক্টিভ কোভিড রোগীর সংখ্যা আজ, ২৫ এপ্রিলের হিসেবে ১৬,৫২২। গত সোমবারে যা ছিল ১১,৫৪২। সাপ্তাহিক পজিটিভিটি রেট বেড়েছে। পজিটিভিটি রেট বলতে বোঝায় যত জনের কোভিড পরীক্ষা হয়েছে, তার মধ্যে যত জন পজিটিভ, তার হার। দেখা যাচ্ছে, এপ্রিলের ১৮ তারিখে সেই পজিটিভিটি রেট ছিল ০.৩২ শতাংশ, যা বেড়ে এই সোমবার হয়েছে ০.৫৪ শতাংশ। পরীক্ষার হারও বেড়েছে এই সময়ে। এপ্রিলের ১৮ তারিখ সেই সংখ্যা ছিল ২.৬ লক্ষ, এপ্রিলের ২৫শে যা বেড়ে হয়েছে ৩.০২ লক্ষ। কোভিড সংক্রান্ত সব নিয়ন্ত্রণ দেশ জুড়ে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় ইতিমধ্যেই, ফলে এখন এই বৃদ্ধির হার চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে।

Advertisment

কোথায় সংক্রমণ বাড়ছে?

দিল্লি এবং তার প্রতিবেশী রাজ্য উত্তরপ্রদেশ এবং হরিয়ানায় কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধির ফলেই এই নয়া ছবিটি তৈরি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যে ২,৫৪১ জনের নতুন করে সংক্রমণ হয়েছে, এর মধ্যে হাজার খানেক দিল্লির। এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে দিল্লিতে সংক্রমণের সংখ্যাবৃদ্ধি হতে থাকে। মাস্ক বাধ্যতামূলক-- এই নিয়ম প্রত্যাহারের দু'সপ্তাহ পর থেকে যার শুরু। যদিও মাস্ক নির্দেশের নবজন্ম হয়ে গিয়েছে দিল্লিতে। হরিয়ানার চারটি জেলা এবং উত্তরপ্রদেশের পাঁচটি জেলায় মাস্ক-কঠোরতা জারি করা হয়েছে। গত পাঁচ দিন ধরে দিল্লিতে হাজারের মতো দৈনিক সংক্রমণের খবর আসছে। এপ্রিলের শুরুতে সংখ্যা একেবারে তলানিতে চলে যাওয়ায় মাস্কে কড়াকড়ি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। খুলে গিয়েছে স্কুলও। কিন্তু পুরনো বিড়ম্বনার এই নয়া চেহারা দেখে কেজরি সরকার হয়তো ভাবছে, ও পথে না হাঁটলেই ভাল হত। তথ্য বলছে, ১০০ থেকে সংক্রমণ হাজারে পৌঁছতে লেগেছে মোটামুটি দু'সপ্তাহ। এই সংখ্যাটা দেখে কী মনে হচ্ছে আপনার? আসলে আগে অনেক দ্রুত বৃদ্ধিতে জেরবার হয়েছে দিল্লি, তাই এখনও 'ডরাওনি' অবস্থা মোটেই তৈরি হয়নি সেখানে।

Advertisment

এই হিসেবের দিকে কড়া নজর দিলেই ব্যাপারটা স্পষ্ট হবে। নয়া বৃদ্ধিতে রাজধানীতে ১০০ থেকে ১০০০-এ পৌঁছতে সময় লেগেছে ১৬ দিন। ডিসেম্বর-জানুয়ারির ঢেউয়ে ১২ দিনে ১০০ থেকে ২ হাজার ছাড়িয়েছিল। ১৫ দিনে ছাড়িয়েছিল ৫ হাজার। ৫ হাজার থেকে ১০ হাজারে পৌঁছেছিল এক দিনে। তার পর আট দিনে উঠে গিয়েছিল শীর্ষে, সংখ্যাটা পৌঁছয় ২৮,৮৬৭-তে।

এই বৃদ্ধি কি চিন্তায় ফেলার মতো?

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের মহামারি-বিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান ডা. ললিত কান্ত বলছেন, 'মানুষ যখন মাস্ক খুলে ঘুরছেন, তখন কোভিড-বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকছেই। তবে কোনও সময় কোভিডের সংক্রমণ বাড়বে আবার কোনও সময় কমবে। দেখতে হবে গুরুতর অসুস্থ এবং মৃতের সংখ্যা কত।' হাসপাতালগুলিতে যদিও খুব কম সংখ্যক কোভিড রোগী ভর্তি হচ্ছেন। বড় হাসপাতাল যেমন লোক নায়ক এবং অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসে সামান্য কয়েক জন কোভিড সংক্রমিত ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, বেশির ভাগ রোগীই জ্বর, সর্দিকাশি, গলায় সংক্রমণ নিয়ে আসছেন, এবং তিন থেকে পাঁচ দিনে সেরে উঠছেন।

মৃত্যুর সংখ্যা অবশ্য বেড়েছে। সোমবার মৃতের সংখ্যা জানানো হয়েছে ৩০। ডাক্তারদের বক্তব্য, কো-মর্বিডিটি যাঁদের রয়েছে, তাঁরাই মারা যাচ্ছেন। মৃতের মধ্যে বৃদ্ধ রোগীরাও রয়েছে।

এখন কি আরও কড়াকড়ির দরকার?

দিল্লিতে কোভিড বাড়ার পর, বাইরে মাস্ক না পরলে ৫০০ টাকা ফাইনের নিয়ম ফের চালু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাস্ক বাধ্যতামূলক করার চেয়ে এটি পরার বিষয়টিকে স্বস্থ্যশিক্ষার মাধ্যমে মানুষের মর্মে গেঁথে দিলে ভাল। আবার মহামারি বিশেষজ্ঞ ডা. চন্দ্রকান্ত লহরিয়া বলছে, কত দিন ধরে মাস্ক এবং কোভিড নিয়ন্ত্রণ জারি থাকতে পারে? এখন কারওর কোভিড হলে, দেখা যাচ্ছে রোগের উপসর্গ মৃদু, এবং ফলে লকডাউন এবং স্কুল বন্ধের কোনও দরকার নেই।

Read story in English

coronavirus