গত দুই দিনে দেশের সাপ্তাহিক কোভিড পজিটিভিটি রেট কমেছে। বৃহস্পতিবার পজিটিভিটি রেট ছিল ১৬.৮৪ শতাংশ। যা শনিবার কমে হয়েছে ১৫.৬৩ শতাংশ। এক মাসেরও বেশি সময় পর পজিটিভি রেট নিম্নমুখী। প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই 'পজিটিভিটি রেট' বা 'সংক্রমণের হার' বলা হয়। অর্থাৎ, সংক্রমণ কত দ্রুত বিস্তারলাভ করছে তার ইঙ্গিত এই পজিটিভিটি রেটের মাধ্যমে পাওয়া যায়।
দৈনিক সংক্রমণের হারের চেয়ে পজিভিটি রেটের দ্বারা করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের অভিঘাতের ইঙ্গিত অনেক বেশি স্পষ্ট হেয়েছে। মানব শরীরে ওমিক্রন সংক্রমণের প্রকোপ কম, মৃদু উপসর্গ ও দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার কারণে অনেকেই নমুনা পরীক্ষা করাননি, ফলে রোগ শনাক্তও হয়নি। এছাড়া বাড়িতে টেস্ট কিট-য়ের মাধ্যমেও বহু লোক নমুনা পরীক্ষা করেছেন, যা সরকারি তথ্যে প্রতিফলিত হয়নি।
ওমিক্রন হানার ঠিক আগে গত বছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় দেশব্যাপী করোনার পজিটিভি রেট অনেকটাই কম ছিল। এরপর তা ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে। দেশের ক্রমবর্ধমান পজিটিভি রেট চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কাছে আতঙ্কের হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। তবে স্বস্তি যে, গত কয়েকদিন ধরে এই হার কমছে।
যদিও ১৫ শতাংশের বেশি পজিটিভি রেটও বেশ বেশি। যদি ভারতে মহামারীর পুরো সময়কাল বিবেচনা করা হয়, তাহলে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া সমস্ত পজিটিভ কেস এবং হওয়া নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বিবেচনা করা হয়, তবে পজিটিভি ৬ শতাংশেরও কম। কিন্তু, দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় খুব অল্প সময়ের জন্য সাপ্তাহিক পজিটিভিটি রেট ২২ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছিল।
ভারতের ৭৩৪টির মধ্যে ৩৮৮টিতে, করোনা সংক্রমণের সাপ্তাহিক পজিটিভিটি হার ১০ শতাংশের বেশি। আরও ১৪৪টিতে পজিটিভিটির হার ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, পাঁচ শতাংশের কম পজিটিভির হার রয়েছে ২০২টি জেলায়।
আরও পড়ুন- না, নিওকোভের ভয়ে এখনই শিউরে ওঠার দরকার নেই, কিন্তু কেন?
পজিটিভি রেট বর্তমানে কেরলে সবচেয়ে বেশি। দক্ষিণী এই রাজ্যের বেশিরভাগ জেলাতেই ৪০ শতাংশের বেশি শতাংশের বেশি পজিটিভিটি রেট। চারটি জেলা - এর্নাকুলাম, কোট্টায়াম, ইদুক্কি এবং তিরুবনন্তপুরমে পজিটিভিটির হার ৫০ শতাংশের বেশি। হিমাচল প্রদেশ, অসম ও হরিয়ানার একটি করে জেলা এবং অরুণাচল প্রদেশের তিনটি জেলাতে এই মুহূর্তে পজিটিভিটি রেট ৫০ শতাংশের বেশি।
গত পাঁচ দিন ধরে কেরলে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সর্বভারতীয় নিরিখে এই হার প্রায় 20 শতাংশের বেশি। দেশের এই রাজ্যেই দৈনিক সংক্রমণের গতি কমার কোনও লক্ষ্ণ দেখা যাচ্ছে না। অন্ধ্র প্রদেশেও একই অবস্থা। তবে সেখানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১২হাজার। কর্নাটক এবং তামিলনাড়ু- এই দু'টি রাজ্য প্রতিদিন ২৫ হাজারের বেশি সংক্রমিত হচ্ছেন। মনে হচ্ছে করোনার তৃতীয় ঢেউ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে ও এবার সংক্রমণের নিম্নগামী যাত্রা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
Read in English