গত আর্থিক বর্ষের তুলনায় চলতি আর্থিক বর্ষে কম সুদ উপার্জন করবে আপনার প্রভিডেন্ট ফান্ড। ২০১৯-২০ আর্থিক বর্ষের জন্য সুদের হার কমিয়ে ৮.৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন (EPFO)। এই হার গত আর্থিক বর্ষে ছিল ৮.৬৫ শতাংশ। উল্লেখ্য, বিগত সাত বছরে এখন পর্যন্ত এটিই সর্বনিম্ন সুদের হার।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী সন্তোষ কুমার গাঙ্গওয়ার জানিয়েছেন, সুদের হার ৮.৫ শতাংশ হলে উদ্বৃত্ত থাকবে ৭০০ কোটি টাকা। এই মুহূর্তে EPFO-র সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৬ কোটিরও বেশি।
কেন কমানো হলো সুদের হার?
আজ, বৃহস্পতিবার, চলতি আর্থিক বছরে EPFO-র আয়ের অনুমানের ভিত্তিতে সুদের হার নির্ধারণ করতে বৈঠকে বসে ফিনান্স কমিটি এবং সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ। এই বোর্ডই হলো EPFO-র শীর্ষ নির্ণায়ক সংগঠন।
দু'জন আধিকারিকের বক্তব্য, বৈঠকে পেশ করা হিসেব অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ আর্থিক বর্ষের ৮.৬৫ শতাংশ সুদের হার বজায় রাখলে লোকসান হতো ৩৫০ কোটি টাকা, আবার কমিয়ে ৮.৪৫ শতাংশ করে দিলে উদ্বৃত্ত হতো ১,০০০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: কেন ১ এপ্রিল থেকে পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়বেই?
উল্লেখ্য, দেশের সামগ্রিক সুদের হারের নিরিখে EPFO-কেও সুদের হার কমিয়ে ৮ শতাংশের নীচে নিয়ে আসার জন্য মৃদু চাপ সৃষ্টি করে চলেছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক।
চলতি অর্থনৈতিক মন্দা এবং বাড়তে থাকা মুদ্রাস্ফীতির প্রেক্ষিতে কড়া নজর রাখা হচ্ছে দেশে সামগ্রিক সুদের হারের ওপর। গত মাসে তাদের আর্থিক নীতি পর্যালোচনার (monetary policy review) সময় মূল পলিসি রেট অপরিবর্তিত রাখে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
এখন কী হবে?
সেন্ট্রাল বোর্ডের পরামর্শের ওপর সীলমোহর পড়তে হবে অর্থ মন্ত্রকের। প্রথা এই যে, EPFO-র সেন্ট্রাল বোর্ড সুদের হার নির্ধারণ করার পর তা অনুমোদন করে অর্থ মন্ত্রক, যার পর EPFO-র গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যায় সুদের টাকা।
গত বছর ৮.৬৫ শতাংশ সুদ অনুমোদন করার আগে উদ্বৃত্তের পরিমাণ, এবং প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা IL&FS-এর মতো ঝুঁকিপূর্ণ সংস্থার আওতায় আসতে পারে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে অর্থ মন্ত্রক।
আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কে ভুগছেন? ভয় পাইয়ে দেওয়া মেসেজ উপেক্ষা করুন
গ্রাহকদের কতটা ক্ষতি হবে?
সুদের হার কমিয়ে ৮.৫ শতাংশ করা হলেও এখনও স্বল্প সঞ্চয় সুদের হারের চেয়ে অনেকটাই বেশি EPFO-র হার। দেশের একাধিক ব্যাঙ্ক জানিয়েছে যে স্বল্প সঞ্চয়ের হার বেশি হওয়ার কারণে গত এক বছরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দ্বারা ঘোষিত রেটে কমতি পুরোপুরি কার্যকরী হতে পারে নি।
তবে চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে স্বল্প সঞ্চয়ের সুদের হারেও পরিবর্তন আসতে পারে, এমন আভাস দিয়েছে অর্থ মন্ত্রক। বর্তমানে সরকারি সিকিউরিটির সঙ্গে যুক্ত করা হয় স্বল্প সঞ্চয়ের সুদের হার, এবং প্রতি ত্রৈমাসিকে পরিবর্তিত হয়।
প্রাক-নির্বাচনী এক ঘোষণায় ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে EPFO-র সেন্ট্রাল বোর্ড পরামর্শ দেয় যে তৎকালীন ৮.৫৫ শতাংশ সুদের হার, যা তার আগের পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন, সেটিকে বাড়ানো হোক। সে মাসের বৈঠকে যা হিসেব দেয় EPFO, সেই হিসেব অনুযায়ী সুদের হার ৮.৬৫ শতাংশ হলে উদ্বৃত্ত অর্থের পরিমাণ ছিল ১৫১.৬৭ কোটি টাকা।