শীতের কামড় আর নেই। ব্রিটেন এখন বর্ধিত বিদ্যুতের বিল ও জীবনযাত্রার খরচের সমস্যায় ভুগছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সবজির অভাব। টম্যাটো, শশা, গোলমরিচের মত অনেককিছুই প্রায় পাওয়াই যাচ্ছে না। পরিস্থিতি দেখে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এই সমস্যা আরও কয়েক মাস চলতে পারে। ব্রিটেনের খাদ্য, পরিবেশ ও গ্রামীণ বিষয়ক মন্ত্রী থেরেসা কফি বলেছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির অভাবে লোকজন শালগমের মত সবজির দিকে ঝুঁকতে পারেন। কফি ব্রিটেনের পার্লামেন্টে বলেছেন, 'এটা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের যে বিশেষত্ব রয়েছে, তা যাতে আমরা পালন করতে পারি। খুচরো বিক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, যাতে এই পরিস্থিতি চার সপ্তাহের বেশি স্থায়ী না-হয়। আর, এর মধ্যে আমাদের বিকল্পের সন্ধান করতে হবে।'
সবজির এত অভাব কেন?
ব্রিটেনে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির অভাব একাধিক কারণে ঘটছে। সদ্যসমাপ্ত শীতে ব্রিটেনে ব্যাপক বিদ্যুৎ খরচ হয়েছে। যার জেরে ব্রিটেন বিভিন্ন এলাকা এবং নেদারল্যান্ডসের গ্রিনহাউসে শীতকালীন উৎপাদন কম হয়েছে। কারণ, গ্রিনহাউস অঞ্চলে তাপমাত্রা কম। আর, এখানে তাপমাত্র বাড়ানোর জন্য বেশি পরিমাণ বিদ্যুতের প্রয়োজন। এর ফলে টম্যাটো, লঙ্কা, শসা এবং বেগুনের মত যেসব ফসল গ্রিনহাউসে পাওয়া যায়, সেসব ফসলের উৎপাদন কম হয়েছে। সেগুলো প্রায় পাওয়াই যাচ্ছে না।
কৃষক সংগঠন কী বলছে?
এই ব্যাপারে ব্রিটেনের ন্যাশনাল ফারমার্স ইউনিয়ন (এনএফইউ) জানিয়েছে, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে ইউরোপ জ্বালানির সমস্যায় ভুগছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে জ্বালানি আমদানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, ওই সব অঞ্চল থেকে ফসল আমদানিও প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখেই। এই পরিস্থিতিতে ইউরোপের অন্যান্য দেশের মত ব্রিটেনও ফসল উৎপাদনে মন দিয়েছে। কিন্তু, জ্বালানি পর্যাপ্ত না-মেলায় ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
আরও পড়ুন- যোগী আদিত্যনাথ তাঁর মাফিয়ারাজ খতমের শপথ নিয়েছেন, কে এই আতিক আহমেদ?
সরকারের পরিসংখ্যান
যেমন, বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রিটেন বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ ফসল আমদানি করে থাকে। বিশেষ করে শীতের মাসগুলোয় ৯৫ শতাংশ টম্যাটো এবং ৯০ শতাংশ লেটুস শাক স্পেন এবং উত্তর আফ্রিকা থেকে আমদানি করা হয়। ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়াম (বিআরসি) অনুযায়ী, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে ব্রিটেনের ওই আমদানির পরিমাণ ১০.৪ শতাংশ কমেছে। কারণ, স্প্যানিশ রফতানিকারক সংস্থা ফেপেক্স জানিয়েছে, শীতের প্রথমদিকে তাপমাত্রা ছিল উষ্ণ। আর, ফসল তোলার সময় অর্থাৎ বসন্তে তুষারপাত হয়েছে। তার ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার জেরে চাহিদামতো ফসল রফতানি করা যায়নি।