শীতকালে রসুনের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু, রসুনের আকাশ ছোঁয়া দামে কপালে চিন্তার ভাঁজ আম আদমির। গত কয়েক মাস ধরেই দেশে রসুনের দাম নাগাড়ে বাড়ছে। বর্তমানে খুচরো বাজারে প্রতি কিলো রসুন বিকোচ্ছে ২৫০-৩৫০ টাকায়। যা গত বছর এই সময়ে ছিল ৪০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম। মাস তিনেক আগেও কিলো প্রতি রসুনের দাম ছিল ১৫০ টাকা করে।
কেন বাড়ছে রসুনের দাম?
খুচরা ও পাইকারি উভয় বাজারেই রসুনের দামের এই ক্রমাগত বৃদ্ধি ফসলের ক্ষতি এবং পরেরবার ফসল বিলম্বিত হওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত।
খরিফ ও রবি এই দুই মরসুমে রসুন চাষ করা হয়। ছত্তিশগড়, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক এবং রাজস্থানের কৃষকরা খরিফ চাষের সময় রসুন চাষ করে। খারিফে জুন-জুলাইয়ের মধ্যে রসুন চারা রোপণ করা হয় এবং সেপ্টেম্বরের পরে ফসল কাটা হয়। রবি শস্য সেপ্টেম্বর-নভেম্বর মাসে রোপণ করা হয় এবং মার্চের পরে কাটা হয়। খরিফ ফসল কাটাতে দেরি হওয়ায় রসুনের এই দাম বৃদ্ধি বলে মনে করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রদেশ হল দেশের মধ্যে বৃহত্তম রসুন উৎপাদনকারী রাজ্য। ভারতে বার্ষিক হিসাবে মোট রসুন উৎপাদনের পরিমাণ গড়ে ৩১.৬৪ লক্ষ টন। এর মধ্যে মধ্যপ্রদেশ থেকে মেলে ৬২.৫৮ শতাংশ। এ বছর, বর্ষা কম হয়েছে। ফলে মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তর ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলিতে রসুনের চাষ বিলম্বিত হয়েছিল। সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে নভেম্বরের শেষের দিকে বাজারে আসতে শুরু করে খরিফ ফসল। কিন্তু উৎপাদন ধীরে হওয়ায় সেই ফসল আসবে আগামী বছরের জানুয়ারির শেষের দিকে।
আরও পড়ুন- বিকাশের সংকল্পে ভারত, সংস্কৃতিতে বিরাট পদক্ষেপ! কাশীর সঙ্গে তামিল ভাবধারাকে মেলাচ্ছেন মোদী
পুণের বাইরে রসুনের পাইকারি বাজারে ব্যবসায়ী বিলাস ভুজবল বলেছেন, 'মধ্যপ্রদেশে ফসল আসতে দেরি হওয়ার কারণেই দেশজুড়ে রসুনের দাম বেড়েছে।' মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌরে দেশের সবচেয়ে বড় রসুনের বাজার রয়েছে। যা দেশজুড়ে রসুনের দাম নির্ধারণ করে থাকে। বর্তমানে, পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি রসুন ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর সাড়ে ১২টাকা ছিল।
এই চড়া দাম আর কতদিন?
এখনই রসুনের দাম কমার তেমন সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন ভুজবল এবং মন্দসৌরের ব্যবসায়ীরা। অর্থাৎ খুচরো বাজারে জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত খুচরা বাজারে রসুনের দাম প্রতি কেজি ২৫০-৩৫০ টাকাই থাকবে। মন্দসৌরের ব্যবসায়ীরা বলেছেন যে খরিফ ফসল কাটার বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। চাহিদা-জোগানের সূত্র মেনে নতুন ফসল ভালো পরিমাণে এলেই দাম কমবে।
রবি শস্য কি ক্ষতিগ্রস্ত হবে?
দামের কারণে যেসব কৃষক রবি শস্য চাষের পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা আরও বেশি করে এই চাষে প্রলুব্ধ হবেন। তবে, মাটির আর্দ্রতার অভাব এটির পথে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হতে পারে। সাধারণভাবে রবি শস্যের উৎপাদন প্রায় ৩ শতাংশ কমেছে এবং রসুনেও একই প্রবণতা দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।