মার্কিন বিদেশ দফতর মুম্বইয়ের একটি পেট্রোকেমিক্যাল সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইরানের খনিজ তেল এবং পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য বিক্রিতে সাহায্য করার অভিযোগে ওই সংস্থাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই কারণে আরও আটটি সংস্থাকে নিষিদ্ধ করেছে মার্কিন বিদেশ দফতর।
মার্কিন বিদেশ দফতরের অভিযোগ
মার্কিন বিদেশ দফতরের অভিযোগ, ওই সংস্থার কারণে ইরানের ওপর জারি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না। ওই সংস্থা ইরানের সঙ্গে কয়েক লক্ষ ডলার আর্থিক লেনদেন করে চলেছে বলেই অভিযোগ মার্কিন বিদেশ দফতরের কর্তাদের। তাঁরা বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সংস্থাটি ইরানের পণ্য পূর্ব এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বিক্রি করে।
ওয়াশিংটনের পদক্ষেপ
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ইরানের জন্য ভারতের কোনও সংস্থার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার এটাই প্রথম উদাহরণ। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান-সহ বাইডেন প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য আমেরিকায় যাওয়ার কয়েকদিন পর এই পদক্ষেপ করল ওয়াশিংটন।
একমাত্র ওই সংস্থাই কি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ দ্য ট্রেজারি অফিস অফ ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল (OFAC) ২৯ সেপ্টেম্বর জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে আটটি সংস্থা। তার মধ্যেই রয়েছে মুম্বইয়ের টিবালাজি পেট্রোকেম প্রাইভেট লিমিটেড। এই সংস্থার ঠিকানা মুম্বইয়ের বান্দ্রা-কুরলা কমপ্লেক্স। ২০১৮ সালে সংস্থাটি তৈরি হয়েছিল।
তাদের ওয়েবসাইটে সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা একটি বর্ধনশীল সংস্থা। একটা সময় তারা ছোট ট্রেডিং সংস্থা ছিল। কিন্তু, অল্পদিনেই রাসায়নিক, ক্ষার, সার ও পলিমারের মত পণ্য রফতানিতে তারা অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সংস্থা হয়ে উঠেছে। মুম্বইয়ের এই সংস্থার পাশাপাশি চিনের সংস্থাও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে।
আরও পড়ুন- কংগ্রেসে সভাপতি নির্বাচনের তরজা জমজমাট, দলের স্বার্থেই তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, থারুরকে জবাব খাড়গের
ভারতীয় সংস্থার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ কী?
২৯ সেপ্টেম্বর জারি করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'ভারতের পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি টিবালাজি পেট্রোকেম প্রাইভেট লিমিটেড চিনে বিক্রির জন্য মিথানল এবং বেস অয়েল-সহ লক্ষ লক্ষ ডলার মূল্যের পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য কিনেছে।'
নিষেধাজ্ঞা জারির কারণ কী?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ওই সংস্থাগুলোর সঙ্গে কোনও মার্কিন নাগরিক বা সংস্থা লেনদেন করতে পারবে না। কোনও সংস্থা ওই সংস্থার সঙ্গে লেনদেন করলে, তার ওপরও নেমে আসবে নিষেধাজ্ঞার খাড়া। তার কারণ, ওই সব সংস্থার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইরানের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য সম্পর্ক কেমন?
ইরান থেকেই ২০১৯ সালের আগে পর্যন্ত ভারত সবচেয়ে বেশি খনিজ তেল আমদানি করত। কিন্তু, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারির পর ভারত ইরান থেকে খনিজ তেল কেনা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। দীর্ঘদিন ধরেই ইরান থেকে ভারত খনিজ তেল আমদানি করেছে। ২০১৮-১৯ সালে, ভারত ইরান থেকে ১,২১১ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে।
Read full story in English