scorecardresearch

Explained: দিল্লির ‘দুয়ারে রেশন’ আদালতের দুয়ারেই আটকাল, কেন বিফল কেজরিওয়াল?

২০১৮-র মার্চ। গণবন্টন ব্যবস্থায় ঘরে ঘরে রেশন পৌঁছিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনায় সিলমোহর দেয় কেজরিওয়াল সরকারের মন্ত্রিসভা।

delhi ration

কেজরিওয়ালের ‘মুখ্যমন্ত্রী ঘর ঘর রেশন যোজনা’ দিল্লি হাইকোর্টে গিয়ে খিড়কি দরজা দেখছে। এ রাজ্যের দুয়ারে রেশন প্রকল্পের মতো কেজরির ওই প্রকল্পটি। বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট যে যোজনা স্থগিত করে দিয়েছে। এই পরিকল্পনা ২০১৮ সালে যখন দিনের আলো দেখানোর পরিকল্পনা নিলেন কেজরিওয়াল, তখনই দিল্লির উপ-রাজ্যপালের কাছ থেকে প্রবল বিরোধিতা এসেছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা ছিল এর প্রায়োগিক দিকটি তুলে ধরে। কিন্তু ২০২১ সালে আপ সরকার এ সব পাশে সরিয়ে রেখে এই প্রকল্পটি নিয়ে এগিয়ে চলার সিদ্ধান্ত নেয়। এই প্রকল্প এর জেরেই হাজির হয়ে গেল দিল্লি হাইকোর্টে। দিল্লি হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যে ভাবে চাইছে কেজরি সরকার, সেই মতো এই প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করা যায় না।

প্রকল্প এবং বাধা
২০১৮-র মার্চ। গণবন্টন ব্যবস্থায় ঘরে ঘরে রেশন পৌঁছিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনায় সিলমোহর দেয় কেজরিওয়াল সরকারের মন্ত্রিসভা। মুখ্যমন্ত্রী ঘর ঘর রেশন যোজনা, যার প্রথম প্রবল প্রতিবাদী হলেন দিল্লির উপ-রাজ্যপাল। এই পরিকল্পনা নিয়ে কেজরিদের বক্তব্য ছিল, এটি রেশন ব্যবস্থায় দুর্নীতিতে লাগাম দেবে। এটিই নস্যাৎ করে দিলেন উপ-রাজ্যপাল, তাঁর মত, তেমন তো হবেই না, পুরোন ব্যবস্থায় জায়গায় নতুন একটি ব্যবস্থা এসে হাজির হবে মাত্র। উপ-রাজ্যপাল আপ সরকারকে উপদেশ দেন যে, অনুমতির জন্য এই প্রকল্পটি যেন কেন্দ্রের দরবারে পেশ করে তারা। ২০২১ সালে কেজরি সরকার স্থির করে নেয়, এলজি-র বিরোধিতা সত্ত্বেও তারা নিজ-পথে অনড় থাকবে, দরজায় রেশন প্রকল্প নিয়ে এগিয়েই যাবে। ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে এই প্রকল্পটি বিজ্ঞাপিত হল, এবং মার্চে কেন্দ্রীয় সরকার এর নাম নিয়ে সরব হল। কেন্দ্রের বক্তব্য ছিল, জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইনে যে রেশন-ব্যবস্থা, তার সঙ্গে এটির অনেক কিছু মিশে গিয়েছে, এটাই আপত্তির কারণ। এর পর, দিল্লি সরকার ‘মুখ্যমন্ত্রী’ শব্দটি এই প্রকল্প থেকে সরিয়ে দেয়। এবং প্রয়োগের পথে এগিয়ে যায়। বলা হয়, রেশন দোকানগুলি বন্ধ করে দেওয়া হবে না, দুটির মধ্যে যে কোনও একটি পছন্দ করে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে সাধারণকে।

আদালতের লড়াই
দিল্লি সরকারি রেশন ডিলার সঙ্ঘ এবং দিল্লি রেশন ডিলার্স ইউনিয়ন গত বছর আদালতে যায় এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে। তাদের সওয়াল, রেশন দোকান মালিকদের এড়িয়ে এই প্রকল্পটি রূপায়ণ করার কথা ভাবা হয়েছে। কারণ, হোম ডেলিভারির জন্য এজেন্সি বেছে নেওয়ার জন্য টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। রেশন দোকানগুলিকে এড়িয়ে জতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইনে খাদ্য-বণ্টন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয় না। এবং পুরনো ব্যবস্থায় জায়গায় নতুন এক দল ডিলারের মাধ্যমেই একই ধরনের আর একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলা কোনও ভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কেন্দ্র এই বক্তব্যকে সমর্থন করে। বলে, জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইনকে লঙ্ঘন করছে কেজরির এই প্রকল্প। দিল্লি সরকার কোনও ভাবেই গণবণ্টন ব্যবস্থা নিয়ে ছেলেখেলা করতে পারে না, যার সঙ্গে রেশন দোকানগুলি অঙ্গাঙ্গী।

আরও পড়ুন- নৌবাহিনীর জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কেন গুরুত্বপূর্ণ

আদালতের রায়
দিল্লি হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিপিন সঙ্ঘীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, রাজ্য মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্যশস্য পৌঁছে দিতেই পারে, তবে তা করতে হবে তাদের নিজেদের ক্ষমতায়। মানে, কেন্দ্রের দেওয়া খাদ্যশস্যে এটা করা যাবে না। দিল্লি সরকার রেশন ডিলারদের অর্থনৈতিক উদ্বেগে গুরুত্ব না দিয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে পারে না। কারণ, রেশন ডিলারদের ভূমিকা ও অবস্থান আইনত সুরক্ষিত। আদালত উপ-রাজ্যপালের মতের সঙ্গে সম্মতি জানিয়ে এও বলেছে যে, এ ব্যাপারে কেন্দ্রের ছাড়পত্র নেওয়াটা জরুরি। কারণ, জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইন তৈরি করেছে সংসদ। আদালত এর পাশাপাশি দিল্লি সরকারকে এমনও মনে করিয়ে দিয়েছে যে, দিল্লি সরকারের ক্ষমতা অবাধ নয়। সাংবিধানিক ব্যবস্থা অনুযায়ী দিল্লি সরকারকে কোনও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে উপ-রাজ্যপালের সম্মতি পেতেই হবে।

Read full story in English

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Explained news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Why hc quashed delhi govts doorstep ration delivery scheme