লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএল চভন, ২০১৩ সালে লাদাখে তৃতীয় ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের কম্যান্ডার ছিলেন। সে সময়ে চিনা সৈন্যদল ডেপসাং উপত্যকায় চলে আসে, যার জেরে সংঘর্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়। চভন লিখেছেন, গালওয়ান নালার প্রায় ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে পেট্রল পোস্ট ১৪-য় ৪৫ কিলোমিটার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দক্ষিণপূর্বে বলে মনে করে ভারত, যা গালওয়ান নালা যেখানে শিয়োক নদীর সঙ্গে মিলেছে তার পাঁচ ছ কিলোমিটার পূর্বে। সে কারণে চিন দাবি করছে গালওয়ান উপত্যকা তাদের।
প্যাংগং সো-তে দু পক্ষই নিজেদের দাবি রেখা পর্যন্ত টহল দেয়, যা ভারতের কাছে ফিংগার ৮ ও চিনের কাছে ফিংগার ৪। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন বলেছিলেন আমাদের সীমানায় কোনও অনুপ্রবেশ ঘটেনি, তখন তিনি টেকনিক্যালি ঠিকই বলেছিলেন। চিনারা ফিংগার ৫-এ সেনা মোতায়েন করেছিল এবং আমাদের সেনারা মোতায়েন ছিল ফিংগার ৪-এ, চিনাদের চেষ্টা ছিল পূর্বদিকে ফিংগার ৮ পর্যন্ত যাওয়া এবং আমরা পশ্চিম দিকে আমাদের নির্দিষ্ট অবস্থানে ফিরে আসব, এর ফলে ২০ এপ্রিল ২০২০-র স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে।
লাদাখে ভারত ও চিনের মধ্যে রাজনৈতিক ভাবে সম্মত ও যৌথভাবে স্থিরীকৃত কোনও আন্তর্জাতিক সীমানা নেই। যেহেতু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা অনিশ্চিত, সে কারণে ভারত ও চিন দুপক্ষই তাদের সার্বভৌমত্ব অনুশীলন করে। সাধারণভাবে তা করা হয়ে থাকে টহলদারির কর্তত্বে, অভিগম্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এবং আবাসবৃদ্ধি ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধির মাধ্যমে। টহলদারি দেওয়া হয় পেট্রল পয়েন্ট পর্যন্ত, যা মোটামুটিভাবে ভারতের বোঝাপড়ায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন, গালওয়ান সংঘর্ষ: অস্ত্র থাকতেও কেন গুলি চালায় নি ভারতীয় ফৌজ?
পরিকাঠামোর বিপুল উন্নতির ফলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা জুড়ে দূরবর্তী ও অগম্য পেট্রল পয়েন্টে আমাদের কর্তৃত্ব বেড়েছে। আজ আমরা ডারবুক থেকে দৌলত বেগ ওল্ডিতে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে পৌঁছকে পারি। এর ফলে দৌলত বেগ ওল্ডির ডেপসাং বালজে আমাদের কর্তৃত্বের ব্যাপক সুবিধা হয়েছে। এই গতি যদি ধরে রাখা যায় তাহলে আমরা চিনের সমান বা তার চেয়েও বেশি যোগাযোগক্ষম হয়ে পড়বে, এ কথা বললে অত্যুক্তি হবে না।