Advertisment

বিশ্বজুড়ে হাহাকার, মারাত্মক দাপট করোনার, ভারতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই, নেপথ্যে কী রহস্য?

গত ছয় মাসে প্রকৃতপক্ষে কোনও বড় ধরনের সংক্রমণ দেশে রেকর্ড করা হয়নি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
India Covid update, Covid in India, India Covid wave, India Covid cases, China Covid update, Covid surge China, Indian Express

চিনে হাহাকার, মাত্র সাতদিনে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার মৃত্যু…..চূড়ান্ত উদ্বেগ! তার মধ্যে ভারতে একদিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ১২৫। ১৩০ কোটির দেশ ভারতে ফের একটা ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে এমনটাই আশঙ্কা করেছিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্রা। কিন্তু চিন, জাপান সহ বিশ্বের একাধিক দেশে করোনা কার্যত তাণ্ডবলীলা চালালেও ভারতে এখনও সেভাবে থাবা বসাতে পারেনি করোনার কোন নতুন স্ট্রেন। কিন্তু কেন এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

Advertisment

ভারতে কোভিডে তৃতীয় তরঙ্গ কমে যাওয়ার পর ১০ মাসেরও বেশি সময় পেরিয়েছে। কমেছে সংক্রমণ, মৃত্যুও। গত বছরের জুন এবং জুলাই মাসে তুলনামূলকভাবে সামান্য ‘বৃদ্ধি ছাড়া’ সেভাবে চোখে পড়েনি মাত্রাছাড়া সংক্রমণ। অতিমারীর তিন বছরে পার হলেও পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ভারতে। ইউরোপ এখনও প্রতিদিন ৮০,০০০এর বেশি নতুন সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে। রিপোর্ট করছে, জাপানে দিনে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখেরও বেশি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন প্রায় ৪০ হাজার মানুষ প্রতিদিন কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন। গত ছয় মাসে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। চিনের পরিস্থিতি সবথেকে খারাপ। জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশ কোভিডে আক্রান্ত বলেই সামনে এসেছে রিপোর্ট। তুলনায়, ভারত বর্তমানে দিনে মাত্র ১২৫ টি নতুন সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে।

নভেম্বরের শুরু থেকে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের নিচেই রয়েছে। এমনকি জুন এবং জুলাইয়ের করোনার বাড়বাড়ন্তের সময়ও, আক্রান্তের সংখ্যা ২২ হাজার ছাড়ায়নি। হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুহার তুলনায় বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের থেকেই কম। মূলত ডেল্টা এবং ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দাপট ভারতে দেখা গেলেও টিকাদান, দুর্বল জনগোষ্ঠীগুলির মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন যে যদিও গত ছয় মাসে প্রকৃতপক্ষে কোনও বড় ধরনের সংক্রমণ রেকর্ড করা হয়নি।

দিল্লির ইনস্টিটিউট অফ জিনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজির প্রাক্তন প্রধান অনুরাগ আগরওয়াল বলেছেন,“আমাদের দেশে সেভাবে করোনার দাপট দেখা যাচ্ছে না তার প্রধান কারণ হল মানুষের এখনও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। এবং যদি গত আট-নয় মাসে খুব অল্প সংখ্যক লোক সংক্রামিত হয়, যেমন রিপোর্ট করা হয়েছে তার মানে বেশির ভাগ মানুষের মধ্যেই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অ্যান্টিবডি গঠিত হয়েছে। এর অর্থ এই যে জনসংখ্যার একটি বড় অংশের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে।“পাশাপাশি ভারতে টিকাদানের রেকর্ড হার করোনাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশেষভাবে সাহায্য করেছে। বেশিরভাগ মানুষই টিকাও পেয়েছেন। আমরা দুর্বল জন গোষ্ঠীগুলিকে সম্পূর্ণরূপে টিকাদানেও আওতায় আনতে পেরেছি।”

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট শহিদ জামীল, বলেন " ভারতের ক্ষেত্রে, গত ৯-১০ মাসে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। মানুষজন সেভাবে সংক্রমিত হননি, হলেও  সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ভাইরাসের দাপট থাকলেও, মানুষের মধ্যে শক্তিশালী প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে উঠেছে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার।"

তিনি বলেন, “যদিও টিকাদান রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকারী, বিশেষ করে দুর্বল গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে এই টিকা অত্যন্ত ভালভাবে কাজ করেছে। ‘বুস্টার ডোজ’ এই মুহূর্তে সেভাবে সকলের জন্য প্রয়োজন নেই’। আগরওয়াল এবং জামিল উভয়েরই মতে অদূর ভবিষ্যতে ভারতে কোভিডের বড় ঢেউ আছড়ে পড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। যেহেতু বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষ ইতিমধ্যে সংক্রামিত হয়েছে, ভাইরাসটির মিউটেশনের ক্ষমতাও সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে ভাইরাসের দাপট ধীরে ধীরে কমছে”।

COVID-19 Covid-19 in India Coronavirus Pandemic China Corona Death
Advertisment