পৃথিবীর বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ১৮৫০-১৯০০ সালে যেমন ছিল, তার থেকে ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। কিন্তু এই বৃদ্ধি, স্বাভাবিকভাবেই সর্বত্র একরকম নয়। এটি অঞ্চলভেদে এবং বছরের বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত হয়। তারপরও বিশ্বের বার্ষিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি এক অশনিসংকেত। যা জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাবকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। এমনিতে স্থলভাগের তাপমাত্রা সমুদ্রের তুলনায় বা জলভাগের তুলনায় অনেক বেশি।
সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে
রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক মঞ্চের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে তাপমাত্রার গড় স্থলভাগে শিল্প গঠনের আগের সময়ের থেকে ১.৫৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়েছে। আর, জলভাগ বা মহাসাগরগুলোতেও তাপমাত্রা বেড়েছে। তবে তুলনায় অল্প। মহাসাগরগুলোর তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ০.৮৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ভারতের পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা
ভারতে উষ্ণায়নের প্রবণতা বাকি বিশ্বের তুলনায় অনেকটাই আলাদা। ২০২০ সালে ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের প্রকাশিত এক মূল্যায়ন অনুযায়ী, ভারতীয় উপমহাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে। তবে তা, ১৯০০ সালের তুলনায় ০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। যা গোটা বিশ্বে স্থলভাগের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি (১.৫৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস)-র তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এই পরিসংখ্যান দেখে মনে হওয়াই স্বাভাবিক যে, ভারতে জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা বিশ্বের অন্যান্য অংশের মতো তীব্র ছিল না। কিন্তু, সেই ভাবনা সম্পূর্ণ ঠিক নয়।
আরও পড়ুন- দেশের সব ডিজেল গাড়ি তুলে দেওয়ার প্ল্যান সরকারের, আদৌ এটা সম্ভব?
ভারতে উষ্ণতা কম কেন?
ভারতে তাপমাত্রা বিশ্বের গড় তাপমাত্রার চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম বৃদ্ধি পাওয়ায় অবাক হওয়ার কিছু নেই। ব্যাপারটা ভারত বলে নয়। তাপমাত্রা সবসময়ই নিরক্ষীয় অঞ্চলের তুলনায় মেরু অঞ্চলে বেশি বৃদ্ধি পায়। এর কারণ পৃথিবীর অবস্থান আর বায়ুমণ্ডলের জটিলতা। যেটা খুব স্পষ্ট ধরা পড়ে যখন বায়ু গ্রীষ্মমণ্ডল থেকে স্বাভাবিক নিয়মে মেরু প্রদেশে তাপ স্থানান্তর করে। সেই হিসেবে ভারতের অবস্থান ক্রান্তীয় অঞ্চলে, বিষুব রেখার বেশ কাছাকাছি। তাই, ভারতের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির চেয়ে কম হবে, সেটাই স্বাভাবিক।