চিনের বিরুদ্ধে তথাকথিত চতুর্ভুজিও উদ্যোগের (Quadrilateral initiative) উৎস ও তার স্বপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রাক্তন প্রধান অরুণ প্রকাশ।
২০০৪ সালে ২৬ ডিসেম্বর ভয়াবহ সুনামি আছড়ে পড়েছিল ভারত মহাসাগারে। সেই সুনামিকেই কোয়াড বা চতুর্ভুজিও উদ্যোগের উৎস হিসাবে গণ্য করা হয়ে থাকে। দুর্যোগে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া ও সংলগ্ন এলাকায় সুনামির প্রায় এক ঘন্টার মধ্যেই গিয়ে পৌঁছায় ভারতের জাহাজ, হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান। এর ফলে ওই এলাকায় ভারতীয় নৌবাহিনীর উপর আস্থা বৃদ্ধি হয়। কিন্তু, উল্লেখযোগ্য বিষয় হল সুনামির উদ্ধার ও ত্রাণে সেই সময় চিনা নৌবাহিনীর কোনও জাহাজকে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি।
এরপর যখন ওকিনাওয়ায় পাঁচ দেশের নৌবাহিনী যৌথ মহড়া চালায় তখনই চিনের তরফে ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে ডিমার্চ জারি করা হয়। সেই ডিমার্চে এই চার দেশের বৈঠক সম্পর্কে বিস্তারিত কারণ জানতে চায় বেজিং। এই চার দেশের বৈঠককেই সেখানে চতুর্ভুজিও উদ্যোগ বা কোয়ার্ডিল্যাটেরাল ইনিসিয়েটিভ বলে অ্যাখ্যায়িত করা হয়েছিল।
চিনের এই পদক্ষেপের ফলে কোয়াডভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একাধিক প্রশ্ন তৈরি হয়।
নৌবাহিনীর প্রাক্তন প্রধান অরুণ প্রকাশ লিখেছেন, 'নিজের এলাকার জন্য ভারতকে নিজের সংকল্পেই লড়তে হবে, তাই দোটানার দিন শেষ। বর্হিবিশ্বেও ভারসাম্য রক্ষার সময় এসেছে। কোয়াডের একটি আনুষ্ঠানিক পুনরুজ্জীবন এবং বলবর্ধনের প্রয়োজন। সমমনস্ক দেশগুলোকে নিয়ে কোয়াড বৃদ্ধি একান্ত জরুরি। যেসব দেশ চিনা আগ্রাসনের শিকার হয়ে শান্তি-স্থিতাবস্থা বজায় এবং সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত জাতিসংঘের আইন অবলম্বন নিশ্চিত করতে আগ্রহী- তারাই এই ইন্দো-প্যাসিফিক সমঝোতার অংশ হতে রাজি হবে।'
তিনি বলেছেন যে, আমেরিকা ও অন্যান্যরা ভারতকে কেন অংশীদার করবে সে বিষয়ে স্পষ্টতা বজায় রাখা ভারতের কৌশল নিরূপণকারী ও নীতি নির্ধারকদের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
'পরমাণু শক্তিধর, অন্যতম শক্তিশালী স্থল ও বায়ু বাহিনী, ক্রমবিকাশীল অর্থনীতি ও আকর্ষনীয় বাজার হিসাবে ভারত ইতিমধ্যেই বিগত বেশ কিছু সময় ধরে পরিচিত। কিন্তু, আমেরিকার কাছে দিল্লি নতুন করে আর্ষনীয় হয়ে উঠেছে কোয়াড, আসিয়ান ও দূরর্তী সমুদ্রক্ষেত্রে ভারতের বিশাল শক্তির জন্য।' এমনটাই মনে করেন ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রাক্তন প্রধান।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন