Advertisment

Explained: জাকার্তা থেকে রাজধানী সরাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া, কারণ জানলে চোখ কপালে উঠবে

কেন ইন্দোনেশিয়া রাজধানী সরাচ্ছে?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Why is Indonesia moving its capital from Jakarta to Borneo?

জাকার্তা থেকে রাজধানী সরিয়ে বোর্নিও দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

ঘিঞ্জি, দূষিত, ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা তো ছিলই। এবার গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো সমুদ্র ধীরে ধীরে গিলছে জাকার্তাকে। তড়িঘড়ি দেরি না করে দ্রুত রাজধানী সরাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। জাকার্তা থেকে রাজধানী সরিয়ে বোর্নিও দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার আধিকারিকরা বলছেন, নয়া শহর স্থায়ী অরণ্য শহর হিসাবে গড়ে উঠবে। পরিবেশের সঙ্গে উন্নয়নকে কেন্দ্র করে শহর গড়ে উঠবে। এই শহর ২০৪৫ সালের মধ্যে কার্বন-নিয়ন্ত্রিত হবে।

Advertisment

তবে পরিবেশবিদরা সতর্ক করছেন, রাজধানী গড়লে ব্যাপক বৃক্ষচ্ছেদন হবে। তাতে বিরল প্রজাতির প্রাণী বিশেষ করে ওরাংওটাং, ইমপেরিলের মতো জনজাতি উচ্ছেদের শিকার হবেন। নয়া রাজধানীতে প্রবেশের অধিকার সবার নেই বর্তমানে। তবে দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নয়া শহরে নির্মাণকাজ কেমন হচ্ছে তা ঘুরে দেখার অনুমতি পেয়েছে।

এবার দেখে নেওয়া যাক কেন রাজধানী সরানো হচ্ছে। সরকারের পরিকল্পনা কী এবং কেন তার জন্য পরিবেশ নিয়ে চিন্তার উদ্রেক হচ্ছে, বিলুপ্তপ্রায় ও আদিম জনজাতিদের জন্য বিপদ ঘনিয়ে আসছে।

কেন ইন্দোনেশিয়া রাজধানী সরাচ্ছে

জাকার্তায় ১ কোটি মানুষের বাস। এবং গ্রেটার মেট্রোপলিটন এলাকার প্রায় তিনগুণ বেশি। কিন্তু এই শহরই বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত ডুবন্ত শহর। আর যে হারে এটি ডুবছে তাতে ২০৫০ সালের মধ্যে শহরের এক-তৃতীয়াংশ সমুদ্রে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যার অন্যতম কারণ যথেচ্ছ ভাবে ভূগর্ভস্থ জল বেরিয়ে যাওয়া। তবে জাভা সাগরে জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে এতে প্রভাব পড়েছে।

বায়ু এবং জল ভীষণভাবে দূষিত, বার বার বন্যায় ভাসে। আর রাস্তাঘাট এত জলমগ্ন হয় যে প্রতিবছর তার জন্য সরকারের ৪৫০ কোটি খরচ হয়। প্রেসি়ডেন্ট জোকো উইডোডো চাইছেন, যে হারে জাকার্তায় জনসংখ্যা বাড়ছে, নির্মাণকাজ হচ্ছে তার থেকে শহরকে মুক্তি দিতে নতুন জায়গায় রাজধানী সরানো হচ্ছে। তাতে নতুন স্থায়ী শহর তৈরি করে মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন Explained: চাঁদে এখন ক’টা বাজে? শীঘ্রই মিলবে উত্তর

নয়া রাজধানী কেমন হবে

প্রেসিডেন্টের স্বপ্নের শহর হচ্ছে নুসানতারা। জাভার এই শব্দের অর্থ দ্বীপপুঞ্জ। এখানে সরকারি ভবন এবং ঘরবাড়ি তৈরি হবে। প্রাথমিক ভাবে ১৫ লক্ষ সরকারি কর্মীকে সপরিবারে এখানে স্থানান্তর করা হবে। জাকার্তার উত্তর-পূর্বে ২ হাজার কিমি দূরে অবস্থিত নুসানতারায় মন্ত্রক এবং সরকারি দফতর স্থানান্তর করা হবে।

বামবাং সুসানতানো, নুসানতারা জাতীয় রাজধানী কর্তৃপক্ষের প্রধান বলেছেন নয়া রাজধানী অনেকটা অরণ্য় শহরের মতো হবে। ৬৫ শতাংশ অঞ্চল হবে অরণ্য। আগামী বছর ১৭ অগস্ট ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা দিবসে নুসানতারার উদ্বোধন হবে। তবে শহর ২০৪৫ সালের আগে পুরোপুরি তৈরি হবে না। সেই বছরই ১০০ বছর হবে ইন্দোনেশিয়ার।

পরিবেশবিদদের আশঙ্কা

পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, ২ লক্ষ ৫৬ হাজার হেক্টর অঞ্চলে আচমকা বাড়িঘর তৈরি করলে বিপদ বাড়বে পরিবেশের। বোর্নিওর পূর্ব কালিমান্তান প্রদেশ হল ওরাংওটাং, চিতাবাঘ এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণের ঘর। সেখানে বন কেটে মানুষ বাস করতে শুরু করলে ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে। আবার ওখানে পাঁচটি গ্রামে ১০০-রও বেশি জনজাতি রয়েছে। নির্মাণকাজ হলে গ্রাম কে গ্রাম ধ্বংস হবে। তবে সরকার উচ্ছেদের জন্য তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে, ক্ষতিপূরণও দেবে।

Indonesia
Advertisment