/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/04/Hot.jpg)
মৌসম ভবনের হিসেবে যখন সমতলের কোনও একটি অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছোয় অন্তত ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, উপকূলবর্তী কোনও অঞ্চলে তাপমাত্রা পৌঁছোয় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, পাহাড়ি অঞ্চলে পৌঁছোয় ন্যূনতম ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, তখন তাকে তাপপ্রবাহ বলা হয়।
গরমে পুড়ে যাচ্ছি আমরা। ব্রহ্মাণ্ড যেন পুড়ছে। প্রবল তাপপ্রবাহের মুখোমুখি হয়ে আমরা থতমত খেয়ে গিয়েছি যেন। দেশের বিস্তীর্ণ অংশে এই তাপ প্রবাহ চলছে। পশ্চিম রাজস্থান, মহারাষ্ট্রের বিদর্ভের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে শেষ দু'মাস। মার্চ হল সেই মাস, যখন শীত থেকে গ্রীষ্ম আসার আয়োজন চলে। বসন্তের রেশ ধরে গ্রীষ্ম এসে আমাদের দরজা টপকায়। এবার বসন্তের অর্ধেকটা যেন টপকে গিয়েছে। গ্রীষ্ম গাজোয়ারি ভাবে ঢুকে রাজত্ব কায়েম করেছে। তাপপ্রবাহের অস্ত্রে সে খুনখারাপি চালাচ্ছে। মার্চ থেকে চারটি তাপ প্রবাহ দেখে ফেলেছে দেশ। যা অবাক করে দেওয়ার মতো অস্বাভাবিক। তাপপ্রবাহের দিনসংখ্যা এ পর্যন্ত অন্তত ২৬।
মৌসম ভবনের হিসেবে যখন সমতলের কোনও একটি অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছোয় অন্তত ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, উপকূলবর্তী কোনও অঞ্চলে তাপমাত্রা পৌঁছোয় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, পাহাড়ি অঞ্চলে পৌঁছোয় ন্যূনতম ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, তখন তাকে তাপপ্রবাহ বলা হয়। অথবা এও বলা যেতে পারে, যখন কোনও একটি অঞ্চলে তাপমাত্রা সেইখানকার স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে ৪.৫ ডিগ্রি থেকে ৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হয়ে যায়, তখন তাকে তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপপ্রবাহের তৃতীয় পরিস্থিতিটা হল, কোনও একটি অঞ্চলে তাপমাত্রা যদি ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হয়ে যায়, কোনও একটি দিনে তা যদি ৪৭ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠে যায়।
আরও পড়ুন- মাস্টার স্ট্রোক শেহবাজের, পাকিস্তানের নতুন বিদেশমন্ত্রী বেনজিরের ছেলে বিলাওয়াল
হিটওয়েভ সাধারণ ভাবে এপ্রিল-জুনে দেখা যায়। মে মাসে তার চরম রূপটি খাপ থেকে তলোয়ারের মতো বেরোয়। তাপপ্রবাহ সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে পঞ্জাব, রাজস্থান, হরিয়ানা, ছত্তীশগঢ়, দিল্লি, পশ্চিম মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, চণ্ডীগড়, ছত্তীশগড়, ওড়িশা, মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশ, অন্ধ্রের উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং তেলেঙ্গনায়। তাপপ্রবাহ চলে চার থেকে দশ দিন, এবং অনেক সময় তার বেশি সময় ধরেও চলে। এপ্রিল এবং জুনে যে তাপপ্রবাহ দেখা যায়, মে মাসে তার চেয়ে তাপপ্রবাহের মেয়াদ বেশি হয়ে থাকে। কারণ বৃষ্টির হাহাকার থাকে তখন।
এই গ্রীষ্মে এমন নাজেহাল দশা হচ্ছে কেন? দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এবার মোটেই তেমন প্রভাবশালী নয়। মার্চ থেকে পাঁচটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এলেও তার মধ্যে তিনটি খুবই দুর্বল, মলয় সমীরণ জাতীয়, তাও তার গতিপ্রকৃতি দেখা গিয়েছে দেশের চরম উত্তরে। যার ফলে এই কঠোর হাওয়াবাতাসে তার কোনও ছাপই পড়েনি। এর ফলে গত কয়েক বছরের নিরিখে ২০২২ সালে সবচেয়ে দীর্ঘ তাপপ্রবাহ দেখেছে এ দেশ। এর আগে ২০১৫ সালের ১৮ থেকে ৩১ মে চরম তাপের মরণ দাপট দেখা গিয়েছিল। যার প্রভাব ভাল মতো পড়েছিল এ রাজ্য, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গনায়। এবং তার ঠিক আগের বছর, ২০১৪ সালেও তাপপ্রবাহের দীর্ঘ ব্যাটিং আমরা দেখেছিলাম। সে বছরের ২ জুন থেকে যা চলেছিল ১১ জুন পর্যন্ত।
Read story in English