ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে চিন্তিত রাজ্যবাসী। এখনও পর্যন্ত আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, সরাসরি এপার বাংলায় এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানবে না। আছড়ে পড়বে কাঁটাতারের ওপারে বাংলাদেশে। কিন্তু, তার প্রভাব থেকে রেহাই পাবে না সংলগ্ন এপার বাংলাও।
Advertisment
উপকূলীয় জেলায় ব্যবস্থা বিশেষ করে রাজ্যের উপকূলীয় জেলাগুলোয় সিত্রাংয়ের ভালোই প্রভাব পড়বে বলেই পূর্বাভাসে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তাঁদের আশঙ্কা, ঝোড়ো হাওয়া এবং অতিভারী বৃষ্টির সঙ্গে সমুদ্রে তীব্র জলোচ্ছ্বাস তৈরি হতে পারে। এই জন্য ইতিমধ্যে উপকূলীয় জেলাগুলোয় ত্রাণকেন্দ্র খোলা হয়েছে। অস্থায়ী ত্রাণকেন্দ্রে সরানো হয়েছে নীচু এলাকার বাসিন্দাদের।
সিত্রাং নামের অর্থ কিন্তু, প্রশ্ন হল, ঘূর্ণিঝড়ের নাম সিত্রাং দেওয়া হল কেন? এটা থাইল্যান্ডের দেওয়া নাম। এটা সেদেশের একটি পদবি। সেখানে এই পদবিকে ডাকা হয় সি-ত্রাং বলে। ভিয়েতনামিজ ভাষায় এই শব্দের অর্থ হল 'পাতা'। কিন্তু, থাইল্যান্ডে এর আলাদা অর্থ রয়েছে। থাইল্যান্ডে এর অর্থ হল ফুল গাছ। একশো বছর আগে ব্রাজিল থেকে এই ফুলগাছ আনা হয়েছিল থাইল্যান্ডে। এই গাছে জানুয়ারি-মার্চ মাসে ফুল আসে। এখানে Si বা সি শব্দটির অর্থ হল রং, সহানুভূতি, সম্মানীয়র মত শব্দ। আর, Trang বা ত্রাং শব্দের অর্থ হল দক্ষিণ থাইল্যান্ডের একটি প্রদেশ। ফুলের জন্য দক্ষিণ থাইল্যান্ডের এই প্রদেশের বিশেষ নাম আছে।
কীভাবে দেওয়া হল নাম? আবহাওয়াবিদদের মতে, একটি জায়গায় একাধিক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে। তাই চিহ্নিতকরণের জন্য এই ধরনের নাম দেওয়া হয়। যাতে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রশাসন থেকে সমুদ্রযাত্রীদের সতর্ক করা সম্ভব হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া দফতরগুলোর মঞ্চ রয়েছে। ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বা ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করার জন্য এমন একটি মঞ্চ রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, মালদ্বীপ, ওমান, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং ইয়েমেনের। ২,০০০ সালে ওমানের মাস্কটে এই দেশগুলো বৈঠক করে। এই ১৩টি দেশ মিলে ১৩টি করে ঝড়ের নাম সেই বৈঠকে দিয়েছে। সবমিলিয়ে মোট নাম ১৬৯টি। সেই তালিকা থেকেই আসছে আয়লা, আমফান, বুলবুল, হুদহুদ, ফনি, অশনি, সিত্রাং-এর মত ঘূর্ণিঝড়ের নাম।