কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.৮। ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভূমিকম্প হয়েছে। আজ রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারি। এখনও সেই বিরাট ধ্বংসলীলার রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেনি দুই দেশই। সরকারি মতে মৃত্যুর সংখ্যাই ইতিমধ্যে ২৪ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। বেসরকারি মতে সংখ্যাটা স্বভাবতই বেশি।
বাড়তে পারে মৃত্যু
তুরস্কের যেখানে কম্পনটা হয়েছে, সেখান থেকে সিরিয়া কাছাকাছি। তাই ক্ষয়ক্ষতির প্রভাব সিরিয়াতেও ব্যাপক পড়েছে। সেদেশে মৃত্যুর সংখ্যাটা ৩,৫০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। সিরিয়ার অসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ, প্রাণপণে এখনও ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চালাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে 'হোয়াইট হেলমেট' নামে পরিচিত সিরিয়ার অসামরিক বিভাগের কর্মীরা আশঙ্কা করছেন, মৃত্যুর সংখ্যাটা আরও কয়েকগুণ বাড়তে পারে। কারণ, এখনও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছেন। আর, যাঁরা আছেন, অলৌকিক কোনও ঘটনা ছাড়া বাকিরা সকলেই মারা গিয়েছেন। এমনটাই ধরে নিচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। কারণ, এতদিন পর আর অন্যকিছু আশাও করা যায় না।
গোদের ওপর বিষফোঁড়া
সিরিয়ার কাছে এটা যেন গোদের ওপর বিষফোঁড়া। প্রায় ১২ বছর ধরে ওই অঞ্চলে যুদ্ধ চলেছে। তার ফলে এমনিতেই সিরিয়ার খাদ্যসংকট, আর্থিক সংকট, মানবাধিকার সংকট চূড়ান্ত। কলেরার প্রাদুর্ভাবও ঘটেছে মারাত্মকভাবে। দেশের জাতীয় পরিকাঠামো প্রায় ভেঙে পড়েছে বললেই চলে। যুদ্ধের ফলে অনেকে এখনও ঘরহারা। তাঁরা আছেন ত্রাণশিবিরে। তাঁদের নিজেদেরই দু'বেলা সাহায্যের দরকার হয়। এই সব লোকজন আবার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের কীভাবে সাহায্য করবেন? ফলে সিরিয়া এখন সংকটের মধ্যে সংকটে।
বিপুলসংখ্যক মানুষ ঘরহারা
ভূমিকম্পের পর সবমিলিয়ে ঘরহারা সিরিয়ানের সংখ্যাটা প্রায় ৫০ লক্ষ। এটা রাষ্ট্রসংঘের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের হিসেব বলছে। রাষ্ট্রসংঘের ইউএন হাইকমিশন ফর রিফিউজিস (ইউএনএইচসিআর)-এ সিরিয়ার প্রতিনিধি সিভাঙ্কা ধানাপালাও স্বীকার করে নিয়েছেন, 'বিপুল সংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।' তাঁর দাবি আবার ৬৮ লক্ষ সিরিয়ান বর্তমানে বাস্তুচ্যুত।
আরও পড়ুন- তারাপীঠে ধুন্ধুমার! টাকা না দেওয়ায় মহিলা মোর্চার সদস্যাদের বেধড়ক মার সেবায়েতদের
আধিকারিকের বক্তব্য
ধানাপালার কথায়, 'এটা সিরিয়ার কাছে সংকটের মধ্যে সংকট। আমাদের দেশের আর্থিক সংকট চলছে। শীতের সময় করোনার প্রকোপ ব্যাপকহারে বেড়েছিল। বহু এলাকা দিয়েই তুষারঝড় বয়ে গিয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের অনেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে রাস্তায় দিন কাটাচ্ছেন। ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যা ঘটছে, এটা তার একটা ছোট্ট ছবি মাত্র।'
Read full story in English