Explained: শুধু জম্মু-কাশ্মীর! ভারতের অন্যান্য রাজ্যও বিশেষ আইনি সুবিধা ভোগ করে, কারা?

বিধানগুলোর কোনটিরই মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ সুস্পষ্ট করা নেই।

বিধানগুলোর কোনটিরই মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ সুস্পষ্ট করা নেই।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
article 370

সুপ্রিম কোর্ট ১২ ডিসেম্বর রায় দিয়েছে যে অনুচ্ছেদ ৩৭০ শুধুমাত্র অসম যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর একটি বৈশিষ্ট্য, যা অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্বের সমকক্ষ নয়।

সাংবিধানিকভাবে, ভারতের শাসন কাঠামো আধা-যুক্তরাষ্ট্রীয়। একক কাঠামোয় আইন প্রণয়নের মূল ক্ষমতা কেন্দ্রে কেন্দ্রীভূত থাকে। আবার, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি রাজ্য স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে। আর, তাদের বিষয়গুলি পরিচালনা করার ক্ষমতা বিভিন্ন মাত্রায় থাকে। ভারতীয় প্রেক্ষাপটে, রাজ্যগুলোর স্বায়ত্তশাসন থাকলেও, সংবিধান নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রের দিকে ঝুঁকে। সেই কারণে, এই দেশের কাঠামোকে আধা-যুক্তরাষ্ট্রীয় বলা যায়। সংবিধানের সপ্তম তফসিলে কেন্দ্র, রাজ্য, কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলোর আইন প্রণয়নের ক্ষমতা- ইত্যাদির সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ আছে। যার মাধ্যমে বিষয়গুলি নির্ধারিত হয়। এমনিতে কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয়েই আইন প্রণয়ন করতে পারলেও সংসদ এবং রাজ্য আইনসভা দ্বারা প্রণীত আইনের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় আইনই প্রাধান্য পাবে বলে সংবিধানে বলা আছে।

Advertisment

বিশেষ মর্যাদা
এই আধা-যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয়, যা কেন্দ্রের দিকে বেশি ঝুঁকেছে, সমস্ত রাজ্য সমান ক্ষমতাশালী নয়। ভারতে বহুত্বের জন্য এই ধরনের ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়েছে। আর, সংবিধান রাজস্ব, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন কারণের ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন রাজ্যের জন্য আলাদা ক্ষমতাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। যাইহোক, অসম যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরুদ্ধে একটি যুক্তি হল, তথাকথিত বিশেষ মর্যাদা আঞ্চলিকতা এবং বিচ্ছিন্নতাবাদের বীজ বপন করে এবং এটি 'জাতীয় সংহতি'কে প্রভাবিত করে। যদিও অনুচ্ছেদ ৩৭০, যা জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে স্বীকৃতি দিয়েছে, ভারতে অসম যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর সবচেয়ে সুস্পষ্ট উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। তবে শুধু জম্মু-কাশ্মীরই নয়। ভারতে আরও কয়েকটি রাজ্য আছে, যেগুলো স্বায়ত্তশাসনের বিভিন্ন মাত্রা এবং সম্পর্ক ভোগ করে।

শুধু জম্মু ও কাশ্মীর নয়
৩৭০ অনুচ্ছেদের ঠিক পরেই ৩৭১এ-আই অনুচ্ছেদ থেকে কমপক্ষে নয়টি রাজ্যের জন্য বিশেষ বিধান তৈরি হয়েছে। এই সমস্ত ব্যতিক্রমগুলো, 'অস্থায়ী, ট্রানজিশনাল এবং বিশেষ বিধান' শিরোনামে সংবিধানের একটি ধারার অধীনে রয়েছে। যা নির্দেশ করে যে এই বিধানগুলো সংকট না-আসা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। সংকট বলতে এখানে বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব বা যুদ্ধকে বোঝানো হয়েছে। যাইহোক, 'অস্থায়ী' ট্যাগ থাকা সত্ত্বেও বিধানগুলোর কোনটিরই মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ সুস্পষ্ট করা নেই। উদাহরণস্বরূপ, নাগাল্যান্ড এবং মিজোরাম একটি আলোচনার ভিত্তিতে স্বায়ত্তশাসন উপভোগ করে। যা নাগাল্যান্ড এবং মিজোরামের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতা ছিল। এর অধীনে পার্লামেন্ট এমন কোনও আইন প্রণয়ন করতে পারে না, যা নাগা এবং মিজোদের ধর্মীয় ও সামাজিক অনুশীলনে হস্তক্ষেপ করতে পারে। অথবা এর জমি ও প্রাকৃতিক সম্পদের মালিকানা এবং হস্তান্তরের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে পারে।

আরও পড়ুন- পেন্টাগনকেও টেক্কা! এক ছাদের নীচে ৪,২০০ অফিস, বিশ্বের বৃহত্তম কর্মক্ষেত্র সুরাতে

Advertisment

আরও আছে
জম্মু ও কাশ্মীরের ক্ষেত্রে, কেন্দ্র ২০১৯ সালে ধারা ৩৭০কে বাতিল করেছিল। যাকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদনকারীরা যুক্তি দিয়েছিলেন যে বিশেষ বিধানটি রাজ্যের অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্বের একটি উপাদান। যাকে একতরফাভাবে কেড়ে নেওয়া যায় না। যাইহোক, ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গত ১২ ডিসেম্বর রায় দিয়েছে যে ৩৭০ অনুচ্ছেদ শুধুমাত্র অসম যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর একটি বৈশিষ্ট্য। যা অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্বের সমকক্ষ নয়। রাজনৈতিক প্রয়োজন ছাড়া অন্যান্য কারণেও রাজ্যগুলোকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। যেমন দিল্লি। ধারা ২৩৯এএ, জাতীয় রাজধানীর প্রশাসনের জন্য একটি অনন্য ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছে। দিল্লি সংবিধানের প্রথম তফসিলের অধীনস্ত একটি রাজ্য নয়। তবুও রাজ্যের বিষয়গুলোর ওপর আইন প্রণয়নের ক্ষমতা এর আছে। যার তালিকা রয়েছে সপ্তম তফসিলে।

jammu and kashmir Supreme Court of India Mizoram Nagaland