মঙ্গলবারই ভারতীয় টাকার অবনমন ঘটেছে। একটি মার্কিন ডলারের দাম হয়েছে ৮০ টাকা। পুরোপুরি বললে, এক ডলার কিনতে লাগবে ৮০ টাকা ৬ পয়সা।
টাকার বিনিময় মূল্য কী?
মার্কিন ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় মূল্য হল একটি মার্কিন ডলার কিনতে যত টাকা লাগে, সেটাই। অর্থাৎ টাকার সংখ্যা। এটি শুধুমাত্র আমেরিকার পণ্য কেনার জন্য নয়। অন্যান্য পণ্য (অশোধিত তেল) থেকে পরিষেবা সবক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। মানে, যে জন্য ভারতীয় নাগরিক এবং সংস্থাগুলোকে ডলার কিনতে হবে, সবক্ষেত্রে এই মূল্যই দিতে হবে।
যখন টাকার অবমূল্যায়ন হয়, তখন ভারতের বাইরে থেকে কিছু কেনা বা আমদানি করা ব্যয়বহুল হয়ে যায়। আবার, এর একটি উলটো দিকও আছে। যদি কোনও ভারতীয় সংস্থা বাকি বিশ্বে (বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে) পণ্য ও পরিষেবা বিক্রি (রফতানি) করার চেষ্টা করে, তাহলে টাকার পতনের জন্য ভারতের পণ্যগুলোকে আরও বেশি প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়তে হবে। কারণ, মুদ্রার অবনমনের জন্য বিদেশিদের কাছে ভারতীয় পণ্য আরও সস্তা হয়ে উঠছে।
কেন ডলারের তুলনায় টাকার দাম পড়ছে?
সোজা কথায়, ডলারের বিপরীতে টাকা ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। কারণ, বাজারে টাকার চেয়ে ডলারের চাহিদা বেশি। টাকার তুলনায় ডলারের এই বর্ধিত চাহিদা দুটি কারণে ঘটছে। এক, ভারতীয়রা যা রফতানি করছে, তার চেয়ে বেশি আমদানি করছে। যাকে বলছে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট। যখন কোনও দেশে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট বা সিএডি থাকে, তখন বোঝায় যত বৈদেশিক মুদ্রা সেই দেশে আসছে, তার চেয়ে বেশি বেরিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন- পশ্চিমবঙ্গ-সহ চার রাজ্যে বাড়ছে কালাজ্বর, কতটা আশঙ্কায় এই সব রাজ্যের বাসিন্দারা?
চলতি বছরে ইউক্রেনের ওপর রুশ হামলার কারণে অপরিশোধিত তেল এবং পণ্যের দাম চড়চড় করে বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভারতের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিটও বাড়ছে। কারণ, ভারতকে মার্কিন ডলার খরচ করেই অপরিশোধিত তেল-সহ ওই সব পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে।
কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিটের দ্বিতীয় কারণ হল, ভারতীয় অর্থনীতিতে বিনিয়োগ কমে যাওয়া। তবে, শুধুমাত্র ভারতই নয়। বেশিরভাগ উন্নয়নশীল দেশেরই কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট থাকে। যদিও ভারতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এসে সেই ঘাটতি কিছুটা হলেও পূরণ করেছে। একে ক্যাপিটাল অ্যাকাউন্ট উদ্বৃত্তও বলা হয়। এই উদ্বৃত্ত ডলার, মার্কিন মুদ্রার তুলনায় টাকার চাহিদাকে কিছুটা হলেও ধরে রেখেছে। অথবা, বলা ভালো যে টাকাকে শক্তিশালী রেখেছে।
Read full story in English