করোনার থাবায় এখনও কাহিল বিশ্ব। প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা, দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুমিছিলও। সেই আবহেই বিশ্বজুড়ে এখনও পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে কমপক্ষে ১৬৫টি ভ্যাকসিন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অবশ্য মত, এর থেকেও বেশি ভ্যাকসিন প্রতিদিনই তৈরি হয়ে চলেছে বিশ্বে, অনেক প্রচেষ্টাই এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তাই তাদের নাম নথিভুক্ত হয়নি ভ্যাকসিন তালিকায়। এখনও পর্যন্ত যদিও ভ্যাকসিন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে রাশিয়ার ভ্যাকসিনই। কিন্তু এত ভ্যাকসিন তৈরির প্রয়োজন কোথায়? সত্যিই কি এত ভ্যাকসিনের দরকার আছে আমাদের? টিকা তৈরি করতে গিয়ে অযাচিতভাবে অর্থ এবং সম্পদ নষ্ট করছি না তো আমরা? প্রশ্ন একটা নয় অনেকগুলি।
প্রাথমিক ধাপই পেরোতে পারছে না বহু ভ্যাকসিন, সাফল্যর হারও কম! তবে কেন এই চেষ্টা?
করোনা রুখতে প্রায় সব ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাই কেন ঝাঁপিয়ে পড়ছে সে কারণ অজানা। কারণ এই ভ্যাকসিন তৈরি একটি জটিল প্রক্রিয়া, সময়সাপেক্ষ তো বটেই। এছাড়াও পদে পদে সাফল্য না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সাফল্য মিলছে খুবই কম। যদি ১০০টি করোনা ভ্যাকসিন তৈরি হয় তাহলে খুব বেশি হলে ২০টি প্রাথমিক ধাপ পেরোতে পারছে। আর মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ অবধি পৌঁছতে পেরেছে এখনও হাতে গোনা কয়েকটি ভ্যাকসিন। যদিও গবেষক মহলের মত, চেষ্টা চালিয়ে যেতে তাঁরা বদ্ধপরিকর। সাফল্যর হার কম হলেও হাল ছাড়তে রাজি নন তাঁরা। ভারতের মতো দেশে যে হারে গত কয়েকদিনে হু হু করে বেড়েছে কোভিড-১৯ সেখানে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে এই ভ্যাকসিন।
সত্যিই কি প্রয়োজন রয়েছে এত ভ্যাকসিনের?
প্রয়োজন আছে। কিন্তু আয়োজনের বড়ই আধিক্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যায় প্রথম। ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের দেশ কয়েক কোটি কোটি টাকার চুক্তি সেরে ফেলেছে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে। আগাম বুকিং করে রেখেছে কয়েক লক্ষ ডোজের। মনে করা হচ্ছে এর ফলে বাকি দেশগুলি বঞ্চিত হবে।
সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই ভারতের মতো দেশগুলি নিজেদের দেশীয় পদ্ধতি ব্যবহার করে ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে। এর মধ্যেই মানবদেহে ট্রায়ালের প্রথম পর্যায়ে আশার আলো দেখিয়েছে ভারত বায়োটেকের 'কোভ্যাক্সিন'। এমনকি, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে তাঁদের তৈরি ভ্যাকসিন যাতে ভারতের হাতে পৌঁছয় সে জন্য।
আরও পড়ুন, রাশিয়ার ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়াল শেষ, রিপোর্ট নিয়ে চিন্তিত বিশ্ব!
অর্থ শক্তিতেই তৈরি হচ্ছে ভ্যাকসিন?
ভ্যাকসিন তৈরির জন্য অর্থ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেভাবে ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা হচ্ছে সেখানে কয়েক লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ না করলে তা উৎপাদন অসম্ভব। সমস্যা একটাই তা হল সাফল্যর হার। তবু তাবড় ওষুধ প্রস্তুতকারকেরা সেই ঝুঁকি নিচ্ছে। অনেকেই যৌথভাবে ভ্যাকসিন তৈরি করছে। ভারতের ক্ষেত্রে আইসিএমআর-এর সঙ্গে যেমন গাঁটছড়া বেঁধেছে ভারত বায়োটেক।
তবে সবশেষে সব দেশই চায় এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে বেরোতে। লকডাউন, মাস্ক, সামাজিক দূরত্ব, কোনও প্রতিরোধেই আটকাচ্ছে না করোনা। অতএব ভ্যাকসিনই যে শেষ কথা এমনটাই মত গবেষক মহলের।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন