সরকারের বিরুদ্ধে কেন তথ্যের অধিকার আইন ধ্বংসের অভিযোগ আনলেন সোনিয়া গান্ধী?

এখন থেকে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনার এবং তথ্য কমিশনারদের কার্যকালের মেয়াদ হবে মাত্র তিন বছর।

এখন থেকে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনার এবং তথ্য কমিশনারদের কার্যকালের মেয়াদ হবে মাত্র তিন বছর।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
RTI

গত সপ্তাহে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনারের চাকরির শর্তাবলী হবে ক্যাবিনেট সচিবের সমতুল্য যা কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনারের চেয়ে অনেকটাই কম

কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বৃহস্পতিবার বলেছেন তথ্যের অধিকার আইনে সম্প্রতি যে সংশোধনী আনা হয়েছে, তার ফলে ২০০৫ সালে ইউপিএ সরকার যে ঐতিহাসিক আইন এনেছিল তার কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেওয়া হয়েছে।

Advertisment

জুলাই মাসে লোকসভায় এই সংশোধনী পাশ হবার পরেই সোনিয়া গান্ধী বলেন নরেন্দ্র মোদী সরকার তথ্যের অধিকার আইনকে উপদ্রব হিসেবে গণ্য করে এবং তার মর্যাদা ধ্বংস করতে চায়। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন, যা কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনের সমতুল্য তার স্বাধীনতা ধ্বংস করতে চায়। তথ্যের অধিকারের নতুন বিধির বিজ্ঞপ্তি ২৪ অক্টোবর জারি করা হয়েছে।

তথ্যের অধিকার আইনের বদলের সমালোচনাগুলি কী?

সংসদে তথ্যের অধিকার আইনের ১৩ ও ১৬ নং ধারায় সংশোধনী বিল পাশ হয়েছে। যাতে সরকার কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনার এবং কেন্দ্র ও রাজ্যের তথ্য কমিশনারদের মেয়াদ ও শর্ত স্থির করতে পারে। সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, নিয়োগের মেয়াদ কেন্দ্রীয় সরকার স্থির করতে পারবে, এবং কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনার ও তথ্য কমিশনারদের বেতন, ভাতা ও অন্যান্য শর্তাবলী কেন্দ্রীয় সরকার স্থির করতে পারবে।

Advertisment

এর অর্থ কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনার এবং তথ্য কমিশনার পাঁচ বছরের মেয়াদ ভোগ করতে পারবেন না, এবং তাঁদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের সমতুল্য হবে না।

তাহলে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনার এবং তথ্য কমিশনারদের মেয়াদ ও চাকরির শর্ত কী স্থির করেছে সরকার?

গত সপ্তাহে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনারের চাকরির শর্তাবলী হবে ক্যাবিনেট সচিবের সমতুল্য যা কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনারের চেয়ে অনেকটাই কম। তথ্য কমিশনারদের ভারত সরকারের সচিবের সমতুল হবেন।

এখন থেকে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনার এবং তথ্য কমিশনারদের কার্যকালের মেয়াদ হবে মাত্র তিন বছর।

এর আগে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনার ও তথ্য কমিশনাররা বেতন ছাড়া ৩৪ হাজার টাকার ভাতা পেতেন, পেতেন সরকারি খরচে সম্পূর্ণ ফার্নিশড বাসস্থান- যার ভাড়া দিতে হত না, প্রতি বছরে তিনটি এলটিসি, নিজের, স্বামী বা স্ত্রীর এবং নির্ভরশীল সন্তানদের জন্য ঊর্ধ্বসীমাহীন ডাক্তারি খরচ। অবসরের পর তাঁরা অতিরিক্ত পেনশন, বাড়িতে মাসে ১৫০০ ফ্রি কল সহ টেলিফোনের সুবিধা এবং আর্দালি ভাতা পেতেন তাঁরা।

ক্যাবিনেট সচিব পর্যায়ে অবনমনের ফলে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনারের ভাতা কমে দাঁড়াচ্ছে ১০ হাজার টাকা। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনারদের প্রাপ্য বহুরকম ভাতা থেকেও বঞ্চিত হবেন তাঁরা।

কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনারের সরকারি মর্যাদারও কি হানি হচ্ছে?

চাকরির শর্তাবলী এবং আর্থিক অবনমনের ফলে টেবল অফ প্রিসিডেন্সেও অবনমন ঘটবে। সরকারি পদমর্যাদা অনুসারে এই টেবিল তৈরি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এর আগে যে টেবিলে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনারের অবস্থান ছিল ৯এ -তে তা এখন চলে যাবে ২৩ নম্বরে, যা তাৎপর্যপূর্ণভাবেই অনেকটা নিচে।

RTI