Advertisment

কেন মার্কিন-চিন সম্পর্কের ভাঙন ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ?

পারমাণবিক শক্তি থেকে মঙ্গল-চাঁদে ক্ষমতা প্রদর্শন হোক কিংবা দক্ষিণ চিন সাগরে নিজেদের শক্তিবৃদ্ধির 'শো-কেসিং', ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্বসূরীরা কিংবা ট্রাম্প নিজেও চিনের সঙ্গে মতভেদ রেখেই চলেছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

কোন দিকে ঝুঁকবে ভারত?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিনের বিবাদমান পরিস্থিতি বিশ্বের কাছে নতুন নয়। পারমাণবিক শক্তি থেকে মঙ্গল-চাঁদে ক্ষমতা প্রদর্শন হোক কিংবা দক্ষিণ চিন সাগরে নিজেদের শক্তিবৃদ্ধির 'শো-কেসিং', ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্বসূরীরা কিংবা ট্রাম্প নিজেও চিনের সঙ্গে মতভেদ রেখেই চলেছেন। হতে পারে তা কূটনৈতিক, হতে পারে তা রাজনৈতিক। আর সেই বিবাদ-যজ্ঞক্ষেত্রে সম্প্রতি ঘি ঢেলেছে করোনা ভাইরাস। চিন থেকে আসা ভাইরাসের দাপটে বিশ্বে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকা। অত:পর...

Advertisment

গত সপ্তাহের শেষের দিকেই চিনের বিরুদ্ধে রীতিমতো শাসানি দিয়েছিলেন মার্কিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। চিনের প্রতি রেখেছিলেন দুটি নির্দিষ্ট প্রস্তাব। এক, পাঁচ দশক ধরে চিনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যা সম্পর্ক (মনে করা হচ্ছে ভাল-খারাপ) তার ইতি টানা। দুই, চিনকে মোকাবিলা করতে যৌথ ব্যবস্থা নেওয়া। ওয়াকিবহাল মহল অবশ্য হোঁচট খেয়েছে দ্বিতীয় প্রস্তাবে এসে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কি তবে স্বীকার করে নিচ্ছেন চিনকে মোকাবিলা করা তাঁদের একার 'কম্মো' নয়? অন্তত মাইক পম্পেওর বার্তা কিন্তু সেই দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

আরও পড়ুন, ইরানকে সরিয়ে কেন আরবের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করা উচিত ভারতের?

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্ত্রী যে বার্তা দিয়েছেন তা নিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত এবং কড়া সমালোচিত হতে হয়েছে তাঁকে। ঠিক কী বলেছিলেন মাইক? রিপাবলিকান মন্ত্রী নিজের বাক্যে স্বীকৃতির সুর রেখেই বলেছিলেন, "আমেরিকা একা চিনকে মোকাবিলা করতে পারে না। সমমনা দেশগুলির উচিত নতুন দল গঠন করার। এখন বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলির জোট গঠনের সময় এসেছে।" পম্পেও এও বলেন যে চিনকে মোকাবিলা করা 'সোভিয়েত ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণ' করার থেকে আলাদা। ট্রাম্পের মন্ত্রী স্বীকারোক্তির সুরেই বলেন, "এটি একটি জটিল এবং নতুন এক ধরনের চ্যালেঞ্জ যা এর আগে কোনওদিন মুখোমুখি হতে হয়নি। কমিউনিস্ট চিন এবার আমাদের সীমানায় ঢুকে পড়েছে।"

মাইক পম্পেওর বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে উভয় প্রস্তাবই ভারতের উদ্দেশেই বলা হয়েছে। কারণে কোনও জটিলতা নেই। প্রথমত চিন থেকে আসা করোনাভাইরাসের থাবায় পিষ্ট হয়েছে ভারতও, আর দ্বিতীয়ত, ভারত-চিন লাদাখ সীমান্তের যুদ্ধাবহ। কিন্তু মার্কিন-চিন সম্পর্কের ভাঙনে ভারতের কী যায় আসে? দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের জন্য এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন সি রাজা মোহন।

আরও পড়ুন, মাস্কেই আটকাচ্ছে করোনা সংক্রমণ, মিলল হাতেনাতে প্রমাণ

লেখক জানান, এখন বিশ্বের যা পরিস্থিতি সেদিকটি বিচার করলে ভারতকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এবং গভীর মনোযোগ দিয়ে গোটা বিষয়টি পর্যালোচনা করতে হবে। কারণ ভারত-চিন বিতর্ক আর মার্কিন-চিন বিতর্ক এক নয়। এক্ষেত্রে গত দু'দশক ধরে কী কী কারণে আমেরিকা-চিন বিরাগভাজন হয়েছে সেই কাঠামোগত পরিবর্তনকে মাথায় রাখতে হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল চলতি বছরের নভেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচন। সেই আবহে ট্রাম্প রাজনৈতিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতি বজায় রাখার জন্য দ্বিপাক্ষীয় অর্থনীতিকে নতুন করে সাজাবেন এমনটাই কাম্য। তাই বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশগুলিকে পাশে রাখতে চাইবেন ট্রাম্প এমনটাই মত কূটনৈতিক মহলের।

আরও পড়ুন, ভ্যাকসিনে শক্তিবৃদ্ধি ভারতের! কোভ্যাক্সিনকে টেক্কা দিতে আসছে অক্সফোর্ড টিকা

রাজা সি মোহনের কথায়, "আমার মনে হয় মাইক পম্পেওর এই জোট গঠনের ডাক নিয়ে সংকোচে পড়বে দিল্লি। এটিকে সাধারণ জোট না বলে গণতান্ত্রিক জোট হিসেবে ব্যাখ্যা করা ভাল।" লেখক এও বলেন মার্কিন এই নীতি নতুন না হলেও ভারতের ক্ষেত্রে আমেরিকার এই দৃষ্টিভঙ্গি নতুন। সবশেষে রাজা মোহন মনে করেন, “গণতন্ত্রের একটি বিশ্বব্যাপী জোট গঠন করতে অনেক কাজ এবং বেশ কিছুটা সময় লাগবে। ভারতের উচিত এই উদ্যোগে সামিল হওয়া। কারণ এর ফলে আগামী দিনে ভারতের বিদেশনীতি এবং সুরক্ষানীতি বিশ্বব্যাপী নয়া দিশা দেখবে।"

Read the story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

India china USA
Advertisment