অনেকটা স্বস্তি! দেশে নিম্নমুখী কোভিড গ্রাফ। ওমিক্রন-ডেল্টা যুগলবন্দি দাপটে দৈনিক সংক্রমণ প্রায় ৩ লক্ষে পৌঁছেছিল। একের পর এক স্বাস্থ্যকর্মী করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হয়েছে। এখন কিছুটা কমেছে সংক্রমণ। গতকালের চেয়ে আরও কমল করোনার দৈনিক সংক্রমণ। শুক্রবার সকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮ হাজার ৭৭ জন। একদিনে দেশে করোনামুক্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৪০৭ জন। এই মুহূর্তে দেশে করোনার সংক্রমণ হার ৩.৮৯ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি ১০০ জন টেস্টে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ৪।
তবে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ৪টি রাজ্য। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছে চারটি রাজ্য থেকে প্রায় ৫০ হাজারের বেশি অ্যাকটিভ করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। এই রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে কেরালা, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু এবং কর্ণাটক। অন্যান্য ১১টি রাজ্যে অ্যাকটিভ আক্রান্তের সংখ্যা ১০ থেকে ৫০ হাজারের মধ্যে।
১৪১ টি জেলায় পজিটিভিটি রেট এখনও ১০ শতাংশের বেশি। ১৬০ টি জেলায় এই হার রয়েছে ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে। ২৪ জানুয়ারি পজিটিভিটি রেট রেকর্ড ছুঁয়েছিল ওই দিন দেশে পজিটিভিটি রেট ছিল ২০.৭৫ শতাংশ। ধীরে ধীরে তা কমতে শুরু করছে। এই মুহূর্তে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৪.৪৪ শতাংশে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লভ আগরওয়াল এপ্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “এই হার ইঙ্গিত দেয় সারা দেশেই করোনা সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে”।
মন্ত্রক আরও বলেছে যে সমস্ত রাজ্য জুড়ে করোনভাইরাস সংক্রমণ এবং ইতিবাচক হার তুলনামূলক ভাবে হ্রাস পেয়েছে। এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নয়া নির্দেশিকায় বিদেশে থেকে আসা যাত্রীদের বাধ্যতামূলক কোয়ারান্টাইন বাতিল হচ্ছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে উঠে যাচ্ছে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারান্টাইন। বদলে, যাত্রীদের কারও করোনার লক্ষণ থাকলে, তাঁরা নিজেদের আইসোলেট করবেন। লক্ষণ আছে কি, নেই? টানা ১৪ দিন যাত্রীদেরই তা নজরে রাখতে হবে। এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সারা দেশে করোনা সংক্রমণ অনেকটাই কমতেই আশাবাদী সরকার। তেমনই আত্মসন্তুষ্টি কিন্তু যেকোনো মুহূর্তেই বিপদ ডেকে আনতে পারে সতর্ক করেছে সরকার।
ভাল খবর-
প্রথমত দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। টানা চারদিনের বেশি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮ হাজার ৭৭ জন। একদিনে দেশে করোনামুক্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৪০৭ জন। এই মুহূর্তে দেশে করোনার সংক্রমণ হার ৩.৮৯ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি ১০০ জন টেস্টে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ৪।
দ্বিতীয়ত আক্রান্তের সংখ্যা কমতেই কমেছে করোনার সংক্রমণ হার। এই মুহূর্তে দেশে এই হার মাত্র ৩.৮৯ শতাংশ। স্বাস্থ্য মন্ত্রক বারবার পাঁচ শতাংশের উপরে ইতিবাচকতার হার রয়েছে এমন জেলাগুলিতে স্থানীয় নিয়ন্ত্রণ এবং নজরদারি করার জন্য বলেছে। গত সপ্তাহের শেষে ৪৩৩টি জেলায় সংক্রমণ হার ছিল ৫% এর নীচে। আগের সপ্তাহে এই সংখ্যা ছিল ২৬৮।
তৃতীয়ত ২১ টি রাজ্যে অ্যাকটিভ আক্রান্ত ১০ থেকে ৫০ হাজারের মধ্যে রয়েছে। সেই সঙ্গে ১১ টি রাজ্য নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। ১১ টি রাজ্যে অ্যাকটিভ আক্রান্তের সংখ্যা রয়েছে ৫০ হাজারের মধ্যে। মাত্র চারটি রাজ্যে ৫০ হাজারের বেশি অ্যাকটিভ আক্রান্ত রিপোর্ট করা হয়েছে। সেই সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কমেছে এবং বেড়েছে সুস্থতার সংখ্যাও। তথ্য অনুসারে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৪০৭ জন।
আরো পড়ুন: ‘ফ্রি-তে টিকিট, পরিযায়ী সঙ্কটের কারণ কংগ্রেস’, মোদীর তোপে নজর
উদ্বেগের বিষয়-
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছে চারটি রাজ্য থেকে প্রায় ৫০ হাজারের বেশি অ্যাকটিভ করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। এই রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে কেরালা, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু এবং কর্ণাটক। অন্যান্য ১১টি রাজ্যে অ্যাকটিভ আক্রান্তের সংখ্যা ১০ থেকে ৫০ হাজারের মধ্যে। ১৪১ টি জেলায় পজিটিভিটি রেট এখনও ১০ শতাংশের বেশি। ১৬০ টি জেলায় এই হার রয়েছে ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে। ২৪ জানুয়ারি পজিটিভিটি রেট রেকর্ড ছুঁয়েছিল ওই দিন দেশে পজিটিভিটি রেট ছিল ২০.৭৫ শতাংশ। ধীরে ধীরে তা কমতে শুরু করছে। এই মুহূর্তে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩.৮৯ শতাংশ। ২০০টির বেশি জেলায় সংক্রমণ হার ১০ শতাংশেরও বেশি। প্রায় ৪০টি জেলায় সাপ্তাহিক আক্রান্তের সংখ্যা এবং সংক্রমণ হার বেড়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। সেই সঙ্গে মৃত্যুহার অন্যতম উদ্বেগের কারণ। এ পর্যন্ত দেশে করোনার বলি ৫ লক্ষ ৭ হাজার ১৭৭। মৃতের সংখ্যার নিরিখে ভারত বিশ্বের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। ভারতের কোভিড -19 টাস্ক ফোর্সের প্রধান ডাঃ ভি কে পল বলেছেন, এখনও করোনার ভয় কমেনি। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
চিন্তা যেখানে-
যেহেতু ভারতবর্ষে এখনও বেশ কয়েকটি রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃত্যু উদ্বেগ জারী রেখেছে, তাই চিন্তা এখন’ই যাচ্ছে না। সেই সঙ্গে কোভিড-১৯-এর অন্য আরও একটি রূপ উদ্বেগের বড়সড় কারণ হয়ে উঠতে পারে। খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এব্যাপারে সতর্ক করেছে। করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে বলেও আশঙ্কা WHO-র বিজ্ঞানীদের। বিশ্ব স্বাস্থ্য বা WHO-এর কোভিড-১৯ টেকনিক্যাল প্রধান মারিয়া ভান কারকোভে জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই মুহূর্তে ওমিক্রনের চারটি ভাগ নিয়ে পরীক্ষা করছে। তিনি বলেন, ”এই মুহূর্তে ওমিক্রনই সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের। তবে উদ্বেগের এখানেই শেষ নয়। এর পরেও আরও একটি ভ্যারিয়েন্ট আসবে বলে আমরা মনে করছি।”তার সঙ্গে বেশ কিছু জায়গায় কোভিড সংক্রমণ কম হতেই করোনা বিধি না মানার একটা প্রবনতা তৈরি হয়েছে যা রীতিমত আতঙ্কের কারণ হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Read story in English